বামেদের নবান্ন অভিযান ঘিরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হল। হাওড়ার মল্লিকফটকে বাম ছাত্র যুব কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক ধস্তাধস্তি বাধে। লাঠি উঁচিয়ে বাম ছাত্র-যুব কর্মী -সমর্থকদের মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের সদস্যরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ার অভিযোগ বাম ছাত্র যুব কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি সামলাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ, জলকামানও ব্যবহার করে পুলিশ। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ পুলিশের। লাঠির ঘায়ে কয়েকজন আন্দোলনকারী জখম হয়েছেন বলে খবর। কয়েকজন পুলিশকর্মীও আহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। বেশ কয়েকজন বাম কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
#WATCH Howrah: Youth wing and student wing of Communist Party of India (Marxist), stage a protest alleging unemployment in the state. Water-cannons used by the police against the protesters. #WestBengal pic.twitter.com/c4qNDIPCBm
— ANI (@ANI) September 13, 2019
বাম কর্মীদের অভিযোগ, ‘‘ পুলিশ ও তৃণমূলের গুন্ডারা বোমাবাজি করেছে। শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ লাঠি চালিয়েছে। বহিরাগতরা এসে ঢিল ছুড়েছে’’। বাম ছাত্র-যুবদের মিছিলে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে সিপিআইএম।
We condemn this brutal attack and repressive violence by the TMC Govt.
— CPI(M) WEST BENGAL (@CPIM_WESTBENGAL) September 13, 2019
Puppet police of the TMC Govt unleashed havoc lathi charge, water cannons against the Student & Youth those who are taking part in #SingurNabannaMarch organised by 12 left student & youth organisations demanding industries in Bengal & job-education for all. #SingurWantsIndustry
— CPI(M) WEST BENGAL (@CPIM_WESTBENGAL) September 13, 2019
আরও পড়ুন: বিজেপিতে যোগ দিতে চান অনুব্রত মণ্ডল! চাঞ্চল্যকর দাবি বিজেপি সাংসদের
মমতা সরকারের বিরুদ্ধে ফের পথে নেমেছে বামেরা। শিল্প ও চাকরির দাবিতে সিঙ্গুর থেকে নবান্ন অভিযানে ১২টি বাম ছাত্র ও যুব সংগঠন। বৃহস্পতিবার সিঙ্গুর থেকে রওনা হয় মিছিল। ডানকুনিতে রাত্রিবাসের পর শুক্রবার হাওড়া ময়দান ও স্টেশন থেকে কলকাতার দিকে রওনা দেয় মিছিল।অশান্তি এড়াতে মিছিলের যাত্রাপথে মোতায়ের করা হয় পুলিশের বিশাল বাহিনী। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে নবান্নকে। নবান্নের সব গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিচয়পত্র দেখিয়েই নবান্নে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে কর্মীদের।
উল্লেখ্য, এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই রাজ্য নেতৃত্বের দাবি প্রায় ১০ হাজার কর্মী-সমর্থক বৃহস্পতিবার পথে হেঁটেছিলেন। এদিন সেই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বঙ্কিম সেতু পেরিয়ে মল্লিকফটকের কাছে এলে মিছিল আটকে দেওয়া হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে তৈরি করা হয়েছে ব্যারিকেড।
আরও পড়ুন: জীবদ্দশাতেই মমতাকে বাংলায় এনআরসি দেখতে হবে, হুঁশিয়ারি দিলীপের
সিঙ্গুরে টাটাদের ন্যানো কারখানা এখন অতীত। সেই কারখানা ডিনামাইট দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ন্যানো কারখানার জমিতে চাষাবাদও নৈব নৈব চ। কলকারখানা ও কাজের দাবিতে সেই সিঙ্গুর থেকেই নবান্ন অভিযান করছে বামেদের ১২টি ছাত্র-যুব সংগঠন। রয়েছে ছাত্রদের একগুচ্ছ দাবিও। এই ন্যানো কারখানার জমি আন্দোলন ঘিরেই এক যুগ আগে রাজ্য রাজনীতিতে উত্থান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের। সেই সিঙ্গুর থেকেই তাই আন্দোলনের সূচনা করে হালে পানি পাওয়ার আশায় কমরেডরা।
এর আগে শিল্প ও কৃষি ক্ষেত্রের নানা দাবি নিয়ে সারা ভারত কৃষক সভা সিঙ্গুর থেকে রাজভবন অভিযান করেছিল। গত বছর ২৮ নভেম্বর রাজ্যে শিল্পায়নের দাবিতে সিঙ্গুর থেকে কলকাতা পর্যন্ত পদযাত্রা করেছিল সিপিএম-এর কৃষক সংগঠন। পদযাত্রার শেষে ২৯ নভেম্বর কলকাতার রানি রাসমণি রোডে সভা হয়েছিল। কৃষকসভার দাবি ছিল, সিঙ্গুর-সহ রাজ্যের সর্বত্র শিল্পের জন্য অধিগৃহীত জমিতে অবিলম্বে শিল্প স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। এবারও বাম ছাত্র-যুবরা সেই দাবিই জানাচ্ছেন পদযাত্রায়।