scorecardresearch

ভবানীপুরে সিপিএম বনাম নোটার সাপ-লুডো! তিন আসনেই জামানত জব্দ বামেদের

Bhabanipur By-Poll: ২১ রাউন্ড শেষে অবশ্য নোটাকে পিছনে ফেলে জয়ী হন তরুণ আইনজীবী।

Bhabanipur By Poll CPM TMC
ফাইল ছবি।

Bhabanipur By-Poll: একুশের ভোটের আগে তৈরি হওয়া সংযুক্ত মোর্চা ভেঙেছে। যে লক্ষ্য নিয়ে আইএসএফ-র সঙ্গে জোটে গিয়েছিল বাম-কংগ্রেস। ২ মে সেই লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে তাদের থামতে হয়েছে। রাজ্যের একদা বিরোধী দল থেকে শূন্য বিধায়ক সংখ্যায় নেমেছে কংগ্রেস। তথৈবচ অবস্থা বামফ্রন্টের। এই ভোটে তৃণমূলের উত্থান যেমন সংগঠিত হয়েছে, তেমন ভাবেই বেড়েছে বিজেপি। এই আবহেই ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় রাজ্যের তিনটি কেন্দ্রে নির্বাচন। যাদের মধ্যে ভবানীপুরে উপনির্বাচন আর জঙ্গিপুর এবং সামশেরগঞ্জে বিধানসভা নির্বাচন।

এই ভোটে জোট রাজনীতির বাইরে বেরিয়ে একা লড়ার সিদ্ধান্ত নেয় বামফ্রন্ট। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনের ট্রেন্ড ধরে জামানত বাজেয়াপ্তের প্রথা এই ভোটেও পিছু ছাড়েনি বামেদের। একা লড়েও তিন আসনেই শূন্য হাতে ফিরেছেন বামফ্রন্ট প্রার্থীরা। এই উপ-নির্বাচনে হাই প্রোফাইল ভবানীপুর কেন্দ্রের প্রার্থী দেয় সিপিএম। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বামেদের মুখ আবার তরুণ আইনজীবী শ্রীজীব বিশ্বাস। অসম এই লড়াইয়ে বড় অঘটন ঘটাবেন শ্রীজীব। স্বপ্নেও কেউ কল্পনা করেনি। তাই ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই লক্ষ্য ছিল রক্তক্ষরণ কমিয়ে অন্তত দুই নম্বরে শেষ করা। কারণ এযাবৎকাল, গত এক দশক ধরলে, ভোট ময়দানে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের জোটকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের চোখেই দেখেছে বাংলার রাজনৈতিক মহল। তাই একা লড়ার সংকল্প থেকে ঘুঁটি সাজিয়েও ভবানীপুরে সেই তিনেই শেষ করতে হয়েছে বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিএম প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাসকে। এদিন ৫ হাজারের কম ভোট পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থীর।

ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর জয় নিশ্চিত হতেই তৃণমূল মহিলা কর্মীদের উচ্ছ্বাস শশী ঘোষের ক্যামেরায়।

এদিন ব্যালট খোলার পর থেকেই নোটা বনাম শ্রীজীবের লড়াইয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করে আলিমুদ্দিন। একটা সময় শ্রীজীবের প্রাপ্ত ভোটকে পেরিয়ে যায় নোটায় প্রাপ্ত ভোট। এভাবেই ভোট গণনায় রাউন্ড যত এগোতে থাকে শ্রীজীব বনাম নোটার মধ্যে সাপ-লুডো খেলা চলে। ২১ রাউন্ড শেষে অবশ্য নোটাকে পিছনে ফেলে জয়ী হন তরুণ আইনজীবী। দিনের শেষে তাঁর ঝুলিতে প্রাপ্ত ভোট ৪,২২৬, শতাংশের বিচারে ৩.৫৬। দেখা গিয়েছে, তাঁর পক্ষে ইভিএম ভোট ৪২০১ আর পোস্টাল ব্যালট ভোট ২৫।

এবার দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ভবানীপুরে প্রার্থী ঘোষণা কতটা যুক্তিপূর্ণ ছিল? যদিও সেই প্রশ্নের জবাবে এই ভোটেও বিপর্যয় হয়েছে মেনে নিয়ে সিপিএম-র রাজ্য কমিটির এক নেতা বলেছেন, ‘সবে মাত্র বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। তার চার মাসের মধ্যে বিপর্যয় মোকাবিলা সম্ভব নয়। তবে এত খারাপ ফল প্রত্যাশা করিনি।‘ তাঁর দাবি, ‘রাজ্যে তৃণমূলের ভ্রান্ত নীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। সেই প্রতিবাদ বোঝাতেই আমরা প্রার্থী দিয়েছিলাম।‘

তৃণমূলের পক্ষে ফল ৩-০। সেটাই দেখাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: শশী ঘোষ

এদিকে, ভবানীপুরের সঙ্গে জঙ্গিপুর এবং সামশেরগঞ্জেও জামানত বাজেয়াপ্ত করেই তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে বাম প্রার্থীরা। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির সুজিত দাসকে প্রায় ৯৪ হাজার ভোটে হারিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী জাকির হোসেন। এই আসনে বামফ্রন্ট প্রার্থী হয়েছিলেন আরএসপির জানে আলম মিয়াঁ। ভোট প্রাপ্তির হিসেবে ৫ অঙ্ক পেরোতে পারেননি তিনি। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৯০৬৭, ভোটপ্রাপ্তির শতাংশ ৪.৫৭। কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর গড় হলেও মুর্শিদাবাদের এই আসনে প্রার্থী দেয়নি কংগ্রেস। যদিও সুত্র বলছে, বামেদের সঙ্গে আগের সমঝোতার ভিত্তিতেই এই আসন ছেড়েছে প্রদেশ কংগ্রেস।

অপরদিকে, এই জেলার অপর একটি আসন সামশেরগঞ্জে জয় পেয়েছেন  তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলাম। তিনি ২৬ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়েছেন নিকটতম প্রার্থী কংগ্রেসের জইদুর রহমানকে। এই আসনে আবার চতুর্থ স্থানে বামেরা। সিপিএম প্রার্থী মোদাসসর হোসেনের প্রাপ্ত ভোট ৬১৫৮, শতাংশের বিচারে ভোটপ্রাপ্তি ৩.২৭। সিপিএম-র থেকে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপির মিলন ঘোষ। ৫.৭৩% ভোট-সহ মোট ১০,৮০০ ভোট পেয়ে তিনি শেষ করেছেন তিন নম্বরে। অতএব মুর্শিদাবাদে জয় না পেলেও রক্ষিত কংগ্রেস গড়। তিনটি আসনের মধ্যে একটি আসনে দ্বিতীয় হাত শিবির। অপরদিকে, তিনটির আসনেই জামানত বাজেয়াপ্ত বামেদের।  

বিঃদ্রঃ ভোট প্রাপ্তি এবং শতাংশের পরিসংখ্যান সুত্র নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইট

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Politics news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Left parties could not put decisive fight at the recent by poll in west bengal state