মইদুল ইসলাম মিদ্দার মৃত্যুর ‘প্রকৃত তদন্তে’ চেয়ে আন্দোলন আরও জোরদার করছে বাম ছাত্র-যুব সংগঠন। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে রাজ্য রাজনীতিতে উত্তেজনার পারদ চড়েছে। এবার বসন্তের বঙ্গে সেই পারদ আরও চড়াতে কাল থেকে ফের পথে নামছে এসএফআই-ডিওয়াইএফআই (SFI-DYFI)। সুত্রের খবর, আগামি ১৭ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ বুধবার রাজ্যব্যাপী থানা ঘেরাও কর্মসূচি রয়েছে বাম ছাত্র-যুব নেতৃত্বের। পরের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার এসএফআইয়ের তরফে রেল অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই মৃত্যু তদন্তের কিনারায় আইনি পথে হাঁটতে চলেছে বাম ছাত্র-যুব সংগঠন। কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয়ে প্রকৃত তদন্তের দাবি করবেন তারা। এমনটাই বাম সূত্রে খবর।
এদিকে, মইদুলের মৃত্যুর প্রতিবাদে সোমবার মৌলালির সামনে বাম ছাত্র-যুবদের বিক্ষোভ থেকে পুলিশকে মারধর এবং উর্দি ছেঁড়ার ঘটনার অভিযোগে এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য-সহ ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি পুলিশকে মারার অভিযোগ রয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৩, ৩২৪, ৩৩২ ধারা অর্থাৎ সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়া, নিগ্রহের মতো অভিযোগে এই মামলা। পাল্টা পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদ করে সরব হয়েছে বাম্পন্থী এই ছাত্র সংগঠন। যদিও সোমবার ক্যামেরার সামনে সৃজন ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘নিগৃহীত পুলিশকর্মীদের উদ্ধারে তিনি ও আরও কয়েকজন উদ্যোগ নিয়েছিলেন।‘
১১ ফেব্রুয়ারি সকলের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যের অধিকার এবং চাকরির প্রতিশ্রুতি-সহ একাধিক দাবিতে নবান্ন অভিযান চালায় বাম ছাত্র-যুব সংগঠন। পুলিশি বাধা পেয়ে ধুন্ধুমার বাঁধে ধর্মতলা চত্বরে। দু’পক্ষ জড়ায় হাতাহাতিতে। পুলিশের লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস জলকামানে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। লাঠিচার্জের জেরে আহত হ্যেছেন বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আঘাত পান বাঁকুড়ার ডিওয়াইএফআই কর্মী পেশায় অটো চালক মইদুল ইসলাম মিদ্দা। সেদিন তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল সিপিএম নেতা ফুয়াদ হালিমের ক্লিনিকে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে স্থানান্তরিত করা হয় ক্যামাক স্ট্রিটের এক নার্সিংহোমে। সেখানেই সোমবার কাকভোরে মৃত্যু হয় তাঁর। জানা গিয়েছে, পুলিশের লাঠির আঘাতে পেশীতে চোট পেয়ে কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
এরপরেই বিক্ষোভের আগুনে ঘি পরে। বামেদের অভিযোগ, ‘এটা পরিকল্পিত খুন।‘ বিক্ষোভের আঁচ শহর ছেড়ে পার্শ্ববর্তী জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। বাম সুত্রে খবর, মৃত মইদুলের শেষকৃত্য হয়েছে বাঁকুড়ার কোতুলপুরে। অপরদিকে, নবান্ন অভিযানের পর থেকে নিখোঁজ পাশকুড়ার এক বাম ছাত্র নেতা। সেই ঘটনার পর চার দিন পেরলেও এখনও তাঁর খোঁজ পায়নি পুলিশ-পরিবার।