মারাঠা রাজনীতির অন্যতম জনপ্রিয় মুখ ছিলেন আনন্দ দিঘে। থানে জেলার এই নেতা শিবসেনার দোর্দণ্ডপ্রতাপ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাঁর ভয়ে নাকি বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত। তাঁরই একপ্রকার শিষ্য ছিলেন একনাথ শিণ্ডে। যিনি এখন বর্তমানে শিবসেনা নেতৃত্বের বিরুদ্ধাচরণ করে বসে আছেন। বিজেপির সঙ্গে জোট করে বিদ্রোহীদের নিয়ে সরকার গড়েছেন। কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ শিবসেনা সুপ্রিমো উদ্ধব ঠাকরে। শিণ্ডের রাজনৈতিক গুরু দিঘের ভাইপোকে তাঁরই বিরুদ্ধে তৈরি করছেন উদ্ধব।
গুরু আনন্দ দিঘের বায়োপিক সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে। মারাঠা ভূমে সুপারহিট হয়েছে ধর্মবীর নামে সেই ছবি। তাতে নাকি লগ্নি করেছিলেন শিণ্ডে। মহা বিকাশ আঘাড়ি জোটের আমলে শিণ্ডের দাবি ছিল, দিঘের জনপ্রিয়তায় কোপ ফেলেছে শিবসেনা প্রমুখ উদ্ধব স্বয়ং। ২০০১ সালে দিঘের মৃত্যুর পর থানে জেলার সংগঠনের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেন শিণ্ডে। কিন্তু দলের মধ্যে বিদ্রোহের কারণে পরিস্থিতি আগের মতো নেই। এখন দিঘের ভাইপো-ই শিণ্ডের বিরুদ্ধে। কেদার দিঘেকে দিয়ে এবার পাল্টা শিণ্ডেকে চাপে ফেলতে চাইছেন উদ্ধব।
৪২ বছরের কেদার এখন থানে জেলায় পথের কাঁটা শিণ্ডের। গত মঙ্গলবার থানে জেলার সভাপতি করা হয়েছে কেদারকে। তার পরই মুম্বই পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে এক ২৩ বছরের নির্যাতিতাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে। কেদারের বন্ধুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন উদ্ধবের স্বস্তি, শিণ্ডেদের আবেদন নিয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না কমিশন
শিবসেনার অন্দরের খবর, কেদারকে থানে জেলার সভাপতি করার পিছনে উদ্ধবের চাল হল, সংগঠন নিজের দখলে রাখা। থানে এবং পালঘর জেলায় শিণ্ডের প্রভাব থেকে শিবসেনাকে মুক্ত করার প্রয়াস। ২০০৬ সাল থেকে কেদার সক্রিয় রাজনীতিতে। থানে জেলার যুব সেনার পদাধিকারী ছিলেন তিনি। দুবার চেয়েও ভোটের টিকিট পাননি তিনি। কারণ, শিণ্ডে কেদারের উত্থান আটকাতে চাইছিলেন।
উদ্ধব শিবিরের এক শীর্ষ নেতা বলেছেন, থানে, পালঘর, কল্যাণ-ডোম্বিভলি, ভিওয়ান্ডি এবং অম্বরনাথ অঞ্চলে শিণ্ডের হাতের মুঠোয় সংগঠন। তা-ও আবার দিঘের নাম ভাঙিয়ে ওই অঞ্চলে সংগঠন চালান তিনি। তাঁর বিদ্রোহের পর থানে জেলায় শিবসেনা ধাক্কা খায়। সাংসদ রাজন বিচারে এবং তাঁর কর্পোরেটর স্ত্রী বাদে বাকিরা সবাই শিণ্ডে শিবিরে ভিড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কেদারকে দায়িত্ব এনে রণকৌশল পাল্টেছেন উদ্ধব। শিণ্ডে যাতে আনন্দ দিঘের নাম ভাঙিয়ে না চলতে পারেন তারই চেষ্টা। থানে বরাবরই শক্ত ঘাঁটি শিবসেনার। তাই গড় হাতছাড়া করতে চান না উদ্ধব।