রাজ্যে দুই অঙ্ক স্পর্শ করেছে ওমিক্রনের থাবা। বুধবার নতুন করে আক্রান্ত ৫ জন। ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ। কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলের অবস্থা উদ্বেগের। এই পরিস্থিতিতে বড়দিনে শহরের সর্বত্র ঠাসাঠাসি ভিড়ের ছবি আতঙ্ক কেয়কগুণ বাড়িয়েছে। প্রশ্নের মুখে সচেতনতা। সংক্রমণ বাড়লে আগেই কড়া বিধিনিষেধ কার্যকরের ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সংক্রমণের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে স্কুল, কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী ৩ জানুয়ারি থেকে কলকাতায় কনটেনমেন্ট জোন করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে, রাজ্যে ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি জমায়েত নিষিদ্ধ করার পক্ষে গেরুয়া শিবির। ২২ জানুয়ারি চার পুরনিগমের ভোটের সূচিও পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছে বিজেপি।
ওমিক্রনের বিধিনিষেধ জারি নিয়ে দিল্লি ও মহারাষ্ট্র সরকারের পদক্ষেপকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, 'দিল্লি বা মহারাষ্ট্রে বিজেপির সরকার নেই। তবুও এই দুই রাজ্য সময়পোযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৩১ ও ১ তারিখের সব জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ রাজ্যেও সেটা করা উচিত। এমনকী মেলাগুলিও বন্ধ করা হোক। তবেই আগামিতে রাজ্যে সংক্রমণ কমবে। আর সংক্রমণ একবার বেড়ে গেলে বিধিনিষেধ করে কোনও লাভ নেই।'
সুকান্ত মজুমদারের মতে, 'গত ২৫ ডিসেম্বর মানুষের ভিড় দেখা গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই উৎসবের মেজাজে দূরত্ববিধি শিকেয় উঠেছিল। এরপর থেকেই করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। তাই রাজ্য প্রশাসন অবলম্বে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করুক।'
আরও পড়ুন- বাংলায় বাড়ছে সংক্রমণ! খোলা থাকবে স্কুল-কলেজ, ট্রেন? বড় ইঙ্গিত মমতার
করোনা আবহে একুশের বিধানসবা ভোট হয়েছে। তারপরই সংক্রমণের চোখরাঙানি দেখা গিয়েছিল। তারপর উপনির্বাচন ও কলকাতা পুরভোট হয়েছে। কিন্তু ফের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ২২ জানুয়ারি চার পুরনিগমের (শিলিগুড়ি, আসানসোল, চন্দননগর, বিধাননগর) ভোট ঘিরে শঙ্কা মাথাচাড়া দিচ্ছে। ভোটের প্রছার, জমায়েত থেকে সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য বিজেপি সভাপতির দাবি, 'ওমিক্রন বাড়ছে। এই অবস্থায় পুরভোট আদৌ করা উচিত কিনা তা খতিয়ে দেখতে চিকিৎসকদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ দল গড়ে পরামর্শ নিক রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশন।'
ভোটে পিছনের পক্ষে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি বলেছেন, 'বেশিরভাগ পুরসভারই মেয়াদ অনেকদন ফুরিয়েছে। এবার যদি সংক্রমণ রোধে সেটা হয় তাহলে হোক, আপত্তি নেই।' তাঁর প্রশ্ন, '২০তে উদযাপন যদি বন্ধ রাখা যায় তবে ২১-শে তা করার কি প্রয়োজন। কী দরকার ছিল সেদিন মেয়রের শপথে ওত ভিড়ের। সফথে যাঁরা গিয়েছিলেন তাঁদের অনেকেই আত পজিটিভ। এরপর বিধিনিষেধ হবে। দিন আনা-দিন খাওয়া মানুষগুলির চরম শোচনীয় অবস্থা হবে।'
রাজ্য বিজেপি সভাপতির দাবি কমিশনকে লিখিত আকারে জানানোর পক্ষে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর কথায়, 'বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পুরভোটের দিন পুরর্বিবেচনা করার প্রস্তাব বিজেপি কমিশনকে দিক।' সুখেন্দু শেখর রায় বলেছেন, বাকি পাঁচ রাজ্যেও কী ভোট পুনর্বিবেচনার দাবি জানাবে বিজেপি। সেটাও দেখার।'