Advertisment

সুপারিশেই সিলমোহর, লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত মহুয়া মৈত্র

বলতে দেওয়া হল না মহুয়া মৈত্রকে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
mohua, loksabha

মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কার

লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত মহুয়া মৈত্র। যে সুপারিশ করেছিল এথিক্স কমিটি তাতেই পড়ল চূড়ান্ত সিলমোহর। ‘ক্যাশ ফর কোয়েরি’ কাণ্ডে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ করা হয়। সংসদে ভোটাভুটির পরই মহুয়ার বহিষ্কারে চূড়ান্ত সিলমোহর পড়ে। এদিকে বহিষ্কারের পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এদিন ফের মোদী-আদানিকে নিশানা করেন তিনি। সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর প্রস্তাবটি পাসের আগে বিরোধীরা ওয়াকআউট করে। মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কারের জন্য সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে হাউস। অর্থাত্ নগদের বিনিময়ে প্রশ্ন কাণ্ডে মহুয়ার সংসদ পদ অবিলম্বে খারিজ করা হয়েছে।

Advertisment

বিতর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কংগ্রেস সাংসদ মনীশ তেওয়ারি, টিএমসি সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি জেডিইউ সাংসদ গিরিধারী যাদব কমিটির সুপারিশের বিরোধিতা করেন। অন্যদিকে, বিজেপি সাংসদ ডাঃ হিনা ভি গাভিত এবং অপরাজিতা সারঙ্গী কমিটির সুপারিশকে সমর্থন করেছেন।

মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে সংসদ ভবনের বাইরে সব বিরোধী সাংসদ, সনিয়া গান্ধীও রয়েছেন

মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে লোকসভা থেকে বেরিয়ে এসেছেন বিরোধী দলের সব সাংসদরা। এর মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গান্ধীও।

লোকসভার কার্যক্রম সোমবার পর্যন্ত মুলতবি

স্পিকার ওম বিড়লা জানিয়েছেন, সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা পর্যন্ত লোকসভার কার্যক্রম মুলতবি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ বাতিল সংক্রান্ত এথিক্স কমিটির রিপোর্ট আজই লোকসভায় গৃহীত হয়েছে।

মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কারের ক্ষমতা সংসদের নেই: কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়

তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় বলেছিলেন যে মহুয়া মৈত্রকে সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কারে ক্ষমতা সংসদের নেই। এর আগে, লোকসভার স্পিকার মৈত্রকে এই বিষয়ে কথা বলার অনুমতি দেননি, বলেছিলেন যে তাকে প্যানেলের বৈঠকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

'এথিক্স প্যানেল প্রমাণ ছাড়াই কাজ করেছে'

লোকসভা সাংসদ হিসাবে বহিষ্কারের পরে মহুয়া মৈত্রের প্রথম প্রতিক্রিয়া। পাশাপাশি বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ ভারতীয় জনতা পার্টিকে সতর্ক করে বলেছেন আগামী "৩০ বছর, সংসদের ভিতরে এবং বাইরে" লড়াই জারি থাকবে'। তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে মুসলিম ও মহিলাদের ঘৃণার অভিযোগও সামনে আনেন। লগইন পোর্টাল সহ জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে মহুয়া বলেন, 'আদানি আমাদের সমস্ত বন্দর, আমাদের সমস্ত বিমানবন্দর কিনছেন… স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাদের তা কেনার ছাড়পত্র দিচ্ছে, সেক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তার মত বিষয় নিয়ে কেন কোন প্রশ্ন উঠছে না'।

এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশের পরই লোকসভায় তুমুল হট্টোগোলের সৃষ্টি হয়। যার জেরে দুপুর ২টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয় লোকসভার কার্যক্রম। ফের লোকসভার কার্যক্রম শুরু হতেই বিরোধীদের চেঁচামেচি জারি। শুরুতেই বলতে ওঠেন মহুয়া মৈত্র। কিন্তু তাকে বসিয়ে দেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।

সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এক চিঠিতে রিপোর্টের কপি হাতে পাওয়ার পর ৪৮ ঘণ্টার সময় চেয়েছেন। তারপর এই নিয়ে আলোচনার দাবি জানানো হয়েছে। এরপর মহুয়ার পখে ব্যাট ধরেন বসির হাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান। দেশের সুরক্ষা লঙ্ঘনের জন্য মহুয়াকে তুমুল আক্রমণ শানান বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তারপরই ফের মহুয়ার হয়ে সওয়াল করেন অধীর চৌধুরী।

কেন মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। মাঝে বিজেপি সাংসদ হিনা গোবিথ অতীতের কথা স্মরণ করান, জানান ঘুষ কাণ্ডে আগেও বহিষ্কার করা হয়েছে লোকসভার সাংসদকে। এরপরই বলতে ওঠেন সুদীপ বন্দোপাধ্যায়। শুক্রবার দলের সাংসদ মহুয়া মৈত্রর "ক্যাশ-ফর-কোয়েরি" কাণ্ডে কমিটির বহিষ্কারের সুপারিশকে "রাজনৈতিক প্রতিহিংসা" হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং দাবি করেছেন যে আদানির ইস্যু থেকে নজর ঘোরাতেই কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ।

লোকসভায় ক্যাশ ফর কোয়েরি কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ করার পরে, কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর বলেছেন, "কোনও সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি, যারা অভিযোগ করেছে তাদের জেরা করার কোন চেষ্টা করা হয়নি এবং একই সঙ্গে একজন সাংসদকে বহিষ্কারের মত একটি বড় শাস্তির উপসংহার - গুরুতর বিবেচনা ছাড়াই, সত্যিই লজ্জাজনক।

মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে লোকসভার এথিক্স কমিটির রিপোর্ট নিয়ে লোকসভায় আলোচনা চলছে। এই আলোচনার তীব্র বিরোধিতা করেছে টিএমসি। দলের সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি বলেছেন, সংবিধান লঙ্ঘন করা হচ্ছে। মহুয়া মৈত্রের কথা বলার সুযোগ পাওয়া উচিত। কিন্তু স্পিকারের যুক্তি আগেই নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন মহুয়া তাই তাকে তার সুযোগ দেওয়া মানায় না।

Mohua Moitra
Advertisment