নবান্ন চলো অভিযানে বিজেপি কর্মীদের চিহ্নিত করতে জলকামান থেকে রাসায়নিক ছুঁড়েছিল পুলিশ। অভিযোগ হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। বিরোধী আন্দোলনকারীদের উপর রাসায়নিক প্রয়োগের বিষয়টি ভারতে এই প্রথম বলে দাবি তাঁর। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কেন রাসায়নিক প্রয়োগ করা হল? তা জানতে রাজ্যের থেকে রিপোর্ট তলবের জন্য স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ। লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, চিনে কমিউনিস্টরা যে প্রক্রিয়ায় বিরোধীদের আন্দোলন দমিয়ে দেন সেই প্রক্রিয়াতেই বিজেপির নবান্ন চলো অভিযান আটকানোর চেষ্টা করেছে মমতা সরকারের পুলিশ।
৮ অক্টোবর বিজেপির নবান্ন চলো অভিযানঘিরে গত বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমার কাণ্ড হয় কলকাতা–হাওড়া জুড়ে। বিক্ষোভরত বিজেপি কর্মী–সমর্থকদের রুখতে মুহুর্মুহু কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। পাশাপাশি জলকামানে রাসায়নিক ও রঙ মিশ্রিত জল ছোঁড়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। আর তাতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন বিজেপির রাজ্য সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলের একাধিক নেতা-কর্মী।
শাহকে দেওয়া চিঠিতে লকেট লিখেছেন, 'বাংলায় মমতা সরকার নির্মমভাবে বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করে। এ কথা কারোর অজানা নয়। কিন্তু, অভূতপূর্ব হল বিজেপির আন্দোলনে জলকামান থেকে পুলিশের রাসায়নিক ছোঁড়ার বিষয়টি। এর ফলে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যা সহ অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। বেশ কয়েকদনকে হাসাপাতালে পর্যন্ত ভর্তি করতে হয়েছে। ভারতীয় রাজনীতিতে এটা একেবারেই নতুন ঘটনা। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের চিহ্নিত করতেই পুলিশ রাসায়নিককে হাতিয়ার হিসাবে প্রয়োগ করেছিল।'
যদিও জলকামানের মধ্যে থেকে বেগুনি রং ছোঁড়া হয়েছিল বলে ঘটনার পরেই জানিয়েছিলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
চিঠিতে উল্লেখ নবান্ন চলো অভিযানে দলীয় নেতার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী শিখ সম্প্রদায়ভুক্ত বলবন্ত সিংয়ের পাগড়ি টেনে খুলে দিয়েছে পুলিশ। এতে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। যা অন্যন্ত নিন্দার বলে দাবি লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর বন্দুকের বৈধ লাইসন্স থাকা সত্বেও পুলিশ অন্যায়ভাবে বলবন্তকে গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ হুগলির সাংসদের। যদিও হাওড়া সিটি পুলিশ আগেই জানিয়েছিল রাজৌরির জেলাশাসকের অনুমতিপ্রাপ্ত বলবন্তের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স 'বেআইনি'।
এছাড়াও বাংলায় মণীশ শুক্ল সহ মোট ১১০ জন বিজেপি কর্মীর হত্য়ার ঘটনাও স্বাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে জানিয়েছেন লকেট। তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন মমতা জমানায় পশ্চিমবঙ্গের 'ভেঙে পড়া আইন-শৃঙ্খলা'র ছবি।
পাগরিকাণ্ড ঘিরে শাসক-বিরোধী তরজা চলছেই। তার মাঝেই নবান্ন অভিযানে রাসায়নিক প্রয়োগের বিষয়টিও বিশেষভাবে সাংসদের চিঠিতে উল্লেখিত হওয়ায় সেই বিতর্ক নতুন মাত্রা পেল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন