দুই ছেলে বিজেপিতে। একজন আবার হেভিওয়েট কেন্দ্র নন্দীগ্রামে পদ্মশিবিরের প্রার্থী। অন্য এক ছেলে এবং তিনি নিজে এখনও তৃণমূলের সাংসদ। কিন্তু ভোটযুদ্ধে ছেলে শুভেন্দুর পাশেই রয়েছেন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা শিশির অধিকারী। নন্দীগ্রামে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছেলের কাছে হারবেন বলেই ভবিষ্যদ্বাণী করে রেখেছেন কাঁথির সাংসদ। এই অবস্থায় কৌশলী চাল দিল বিজেপি। কাঁথিতে আসন্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভায় শিশির অধিকারীকে আমন্ত্রণ জানাতে শান্তিকুঞ্জে গেলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।
আগামী ২৪ মার্চ কাঁথির সভায় শিশির অধিকারীকে আমন্ত্রণ জানাতে শনিবার দুপুরে শান্তিকুঞ্জে যান লকেট। সেখানে বর্ষীয়াণ নেতার সঙ্গে আলাপচারিতা করেন। মধ্যাহ্নভোজও সারেন তাঁর বাসভবনে। অনেক দিন ধরেই তৃণমূলে বেসুরো শিশির অধিকারী। দুই ছেলে বিজেপিতে যাওয়ায় জেলা তথা শীর্ষ নেতৃত্বের বহু আক্রমণের মুখে পড়েছেন শিশিরবাবু। সেজো ছেলে দিব্যেন্দু হলদিয়ায় মোদীর অনুষ্ঠানেও হাজির ছিলেন। মনে করা হচ্ছিলে, মোদীর ব্রিগেড সমাবেশে হাজির থেকে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু তা হয়নি। তবে হাল ছাড়ছে না বিজেপিও। শিশির অধিকারীকে এবার সরাসরি সভায় থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানাল গেরুয়া শিবির।
যেদিন দলনেত্রী নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেন, সেদিন থেকেই আরও সুর চড়িয়েছেন শিশিরবাবু। আক্ষেপ করে বলেছেন, জেদ করে তৃণমূলনেত্রী নন্দীগ্রামে দাঁড়াচ্ছেন। কিন্তু ফলাফল ভাল হবে না। নন্দীগ্রামে শুভেন্দু বড় ব্যবধানে জিতবে। কারণ হিসাবে তিনি বলেছিলেন, নন্দীগ্রামের মানুষ শুভেন্দুর পক্ষে রয়েছে। পাশাপাশি এও বলেছেন, পূর্ব মেদিনীপুরে দলের অবস্থা ভাল নয়। এবার তাঁকেই মোদীর জনসভায় আমন্ত্রণ জানাল বিজেপি। এদিন শান্তিকুঞ্জ থেকে বেরিয়ে লকেট বলেন, "কাঁথিতে এসে অধিকারী পরিবারে না যাওয়াটা অসৌজন্য। সৌজন্য দেখাতেই শিশিরবাবুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি।"
শুধু শিশির নয়, আমন্ত্রণ পেয়েছেন দিব্যেন্দুও। শিশিরবাবু বেশ কয়েকবার মুখ খুললেও দিব্যেন্দু কিন্তু জল মেপে চলেছেন। প্রকাশ্যে দল বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে সূত্রের খবর, এই মাসেই দিব্যেন্দু ও শিশির অধিকারী যোগ দিতে পারেন বিজেপিতে। তিনি ও শিশিরবাবু এবার ২৪ মার্চ আদৌ মোদীর সভায় যান কি না এখন সেটাই দেখার। গেলে সেদিনই জল্পনার অবসান হবে।