অনাস্থা বিতর্কে 'অসংসদীয় আচরণ'-এর অভিযোগে সাসপেন্ড করা হল কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীকে। বৃহস্পতিবার বলতে উঠে অধীর চৌধুরী মণিপুরের ঘটনাকে দেশে 'গৃহযুদ্ধ' চলছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পলাতক শিল্পপতি নীরব মোদিরও তুলনা টানেন অধীর।
অধীর চৌধুরী বলেন, 'আমরা কেউ এই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসার কথা ভাবিনি। আমরা কেবল দাবি করছিলাম যে প্রধানমন্ত্রী মোদী সংসদে এসে মণিপুর ইস্যুতে কথা বলুন। আমরা বিজেপির কোনও সদস্যকে সংসদে এসে বলার জন্য দাবি করিনি। আমরা শুধু আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে এসে বলার জন্য দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু, তিনি আসেননি। শেষ পর্যন্ত অনাস্থা প্রস্তাবের শক্তি আজ প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে নিয়ে এসেছে।' তারপরই বৃহস্পতিবার অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে থাকেন বিজেপি সাংসদরা।
মণিপুরে হিংসা চলাকালীন যৌন নির্যাতন, গণধর্ষণের অভিযোগগুলোকে সামনে এনে অধীর চৌধুরী বলেন মহাভারতের যুগে, 'যখন রাজা অন্ধ ছিলেন, ধৃতরাষ্ট্র অন্ধ ছিলেন, সেই সময় দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ হয়েছিল। আজও রাজা অন্ধ হয়ে বসে আছেন। যেখানে রাজা অন্ধ হয়ে বসে থাকেন, তখন সেখানে বস্ত্রহরণ হয়। তা সেটা হস্তিনাপুরেই হোক। অথবা মণিপুরেই হোক, হয়েই থাকে।' অধীরের এই কথা শুনে ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে শাসক দলের সদস্যরা প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। সেই সময় অধীর চৌধুরীকে বলতে শোনা যায় যে তিনি রাজা হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করেননি। কিন্তু, সরকারপক্ষের সদস্যরা সেই কথায় কান দেননি।
আরও পড়ুন- বিরোধীশূন্য লোকসভায় আস্থাভোটে জয়ী মোদী
আরও পড়ুন- ইউপিএর ধারণা, তারা নাম বদলে ‘ইন্ডিয়া’ রাখলেই তাদের ভাগ্য বদলাবে, কটাক্ষ মোদীর
আরও পড়ুন- সরকার সেঞ্চুরি করছে, বিরোধীরা নো-বল করতেই ব্যস্ত, ক্রিকেটের ভাষায় অনাস্থার জবাব প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাখার পর অধীর চৌধুরীকে সাসপেন্ড করার জন্য লোকসভায় প্রথম প্রস্তাব আনেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। তাঁর সেই প্রস্তাব বিরোধীশূন্য লোকসভায় ধ্বনি ভোটে পাস হয়। অসংসদীয় আচরণের জন্য অধীর চৌধুরীকে অনির্দিষ্টকাল সাসপেন্ড করা হয়। এমনকী, প্রিভিলেজ কমিটিতেও অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন বিজেপি সাংসদরা।