কর্ণাটকে মহারণ! আগামী ১০ মে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। হিজাব আন্দোলন কী এবারের নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে? সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। মেগা রোড’শো থেকে জমকালো নির্বাচনী প্রচারে মানুষের অংশগ্রহণে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী পদ্মশিবির। গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে একমাত্র কংগ্রেসের এই মুসলিম মহিলা প্রার্থীই হিজাব পরার অধিকারের জন্য তার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। হিজাব বিতর্ক রাজনৈতিক রং নিয়েছে কর্ণাটকে। কংগ্রেসের একমাত্র মুসলিম মহিলা প্রার্থী হিজাব পরেই আসন্ন নির্বাচনে তার লড়াই জারি রেখেছেন। বিজেপির কাছে এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে তার এই লড়াই।
কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার প্রায় শেষ পর্যায়ে। সোমবার সন্ধ্যায় শেষ হবে নির্বাচনী প্রচারপর্ব। শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচারে ঝড় তুলতে মরিয়া সব দল। রাজ্যে ১০ মে এক দফায় ভোটপর্ব অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। ফলাফল প্রকাশ হবে মাত্র মাত্র তিন দিন পরে। অর্থাৎ ১৩ মে চূড়ান্ত হবে কোন দল কুর্সিতে বসবে। তবে কংগ্রেসের মুসলিম মহিলা প্রার্থী কানিজ ফাতিমা এবারে নির্বাচনে একেবারে লাইমলাইটে রয়েছেন। তিনি একদিনের প্রচারের জন্য শুক্রবার রাত ১০.৪৫ মিনিটে কালবুর্গী শহরের শাইক রোজা এলাকায় পৌঁছান। বক্তৃতা দেওয়ার সময় তিনি স্থানীয় জনগণের কাছে কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি উল্লেখ করে নিজের জন্য ভোট চান।
৬৩ বছর বয়সী ফাতিমা বলেছেন যে তিনি সর্বদা তার জনগণের স্বার্থে লড়াই করে চলেছেন। তার বক্তৃতায় তিনি বলেছেন যে কর্ণাটকে কংগ্রেসের জয় দেশে পরিবর্তনের সূচনা করবে। এই এলাকার জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ মুসলিম। ফাতেমার স্বামী কামরুল ইসলাম ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী এবং ৬বারের বিধায়ক। স্বামীর মৃত্যুর পর রাজনীতিতে পা রাখেন ফাতেমা এই নির্বাচনে কংগ্রেসের একমাত্র মুসলিম মহিলা প্রার্থী ফাতিমা। জেডিএস-এর একমাত্র মুসলিম মহিলা প্রার্থী সাবিনা সামাদ উদুপির কাপু আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন। বিজেপি রাজ্যের মোট ২২৪ টি বিধানসভা আসনের কোনওটিতেও মুসলিম প্রার্থী দেয়নি। এমন পরিস্থিতিতে গুলবার্গা উত্তর আসন থেকে বিজেপি প্রার্থী চন্দ্রকান্ত পাটিলের জন্য আসন্ন নির্বাচন হতে পারে এক কঠিন লড়াই।
ফাতেমা হিজাব পরেই তাঁর নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন। হিজাব বিতর্ক নিয়ে নিজের অবস্থানে বরাবরই অনড় থেকেছেন তিনি। তিনি ক্লাসরুমে হিজাব পরা মুসলিম ছাত্রীদের সমর্থনে সুর চড়িয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে আমি সমাবেশেও হিজাব পরি, তাই আমরা এটি পরা বন্ধ করতে পারি না। হিজাব নিষিদ্ধের সময়, তিনি গুলবার্গায় তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত CAA প্রতিবাদেও অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, 'হিজাব পরা আমাদের অধিকার'। কর্ণাটকে যখন হিজাব বিতর্ক তুঙ্গে তখন ফাতিমা বলেছিলেন, ‘হিজাব পরা আমাদের অধিকার’। স্বাধীন ভারতে আমাদেরও স্বাধীনতা আছে। আমরা মানুষকে তাদের পোশাক নিয়ে প্রশ্ন করতে পারি না। এই বিষয়ে মেয়েদের কলেজে যাওয়া বন্ধ করা উচিত নয়'।