এ যেন ভরত-মিলাপ! রবিবার বিকেলে তৃণমূলে ঘরওয়াপসির পর সোমবার দলীয় বৈঠকে রাগ-অভিমান ভুলে অর্জুন সিংকে জড়িয়ে ধরলেন মদন মিত্র। গত তিন বছরে বারাকপুর জুড়ে এত হিংসা-হানাহানি, গুলি-বোমাবাজি, মৃত্যু সবকিছুর স্মৃতি ভুলে ফের কাছাকাছি এলেন মদন-অর্জুন। ভাটপাড়ায় নির্বাচনের সময় দুই নেতার বাক্যবাণ, অশান্তির সাক্ষী ছিলেন অনেকেই। কিন্তু অর্জুন ঘরে ফিরতেই সব বিবাদ ভুলে গেলেন মদন।
সোমবার বারাকপুর তৃণমূল পার্টি অফিসে অর্জুনকে সংবর্ধনা জানানোর কর্মসূচি ছিল দলীয় নেতৃত্বের। রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সুজিত বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাটার্য, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসুরা ছিলেন সেই অনুষ্ঠানে। সেখানেই অর্জুনকে গান গেয়ে-গলায় গোলাপের মালা পরিয়ে স্বাগত জানান কামারহাটির বিধায়ক। তার পর বলেন, "অর্জুন এখন তৃণমূলের নেতা। তাই ওঁর বাড়িতে আর বোম পড়বে না। আর যদি পড়ে তাহলে প্রথম যে কয়েকজন ছুটে যাবে তার মধ্যে একজন মদন মিত্র।"
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচন এবং তার পর থেকে কতবার যে জগদ্দলের মেঘনা মোড়ে অর্জুনের বাড়ির সামনে বোমাবাজি হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। যতবারই বোমা পড়ছে, অর্জুনের নিশানায় থেকেছে তৃণমূল। একটি মামলায় এনআইএ তদন্ত করছে। এদিন মদনের কথায় কিছুটা হলেও অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূলের। অর্জুন যে আগে অভিযোগ করতেন, তাঁর বাড়িতে বোমাবাজি করে তাঁকে প্রাণে মারতে চাইছে তৃণমূল। এদিন মদনের কথায় যেন সেই অভিযোগে সিলমোহর পড়ল।
আরও পড়ুন রবিবার ‘ঘরওয়াপসি’, সোমে তৃণমূলে বড় দায়িত্ব পেলেন অর্জুন সিং
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে টেলিভিশন চ্যানেলে মদন-অর্জুনের ঝগড়া দেখার মতো বিষয় হয়ে গিয়েছিল। বাঙালি তখন গিলছিল দুজনের বাক্যবাণ। গালাগালি, হুমকি সবই হত লাইভ। মদন অর্জুনকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। আবার অর্জুন মদনকে মাতাল বলে কটাক্ষ করছেন। কিন্তু অর্জুন ঘরে ফিরতে ঝগড়া-অশান্তি এখন অতীত। অর্জুন বলেছেন, মদন তাঁকে বিটি রোডে চা-সিঙারা খাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ করেছেন। সত্য সেলুকাস! কী বিচিত্র এই বঙ্গ রাজনীতি।