তৃণমূলের অভ্যন্তরীন রাজনীতিতে ফের ভেসে উঠলেন মদন মিত্র। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করলেন, ভাটপাড়া বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে লড়বেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ভবানীপুরের বাসিন্দা।
ভাটপাড়া আসনের দীর্ঘদিনের তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিং সম্প্রতি বিজেপি-তে যোগ দিয়ে ব্য়ারাকপুর লোকসভায় গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী হয়েছেন। অর্জুন বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় ভাটপাড়া বিধানসভায় উপনির্বাচন হবে। মদনের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অর্জুনের পুত্র পবন সিং-এর। ইতিমধ্যেই বিজেপি-র পক্ষ থেকে পবনের নাম দিল্লিতে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অর্জুনের খাসতালুকে তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে মদন কতটা লড়তে পারবেন, তা নিয়ে অবশ্য সংশয়ী তৃণমূলেরই একাংশ।
প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণার পরেই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে মদন বলেন, "আমি আপ্লুত মুগ্ধ, বিস্মিত, কৃতজ্ঞ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেত্রী, ভারতের হবু প্রধানমন্ত্রী, আমার নাম ঘোষণা করেছেন, এ আমার বিরাট প্রাপ্তি। আমি জান দিয়ে লড়ব। জানি, হয়তো কঠিন লড়াই, কিন্তু শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়ব।"
আরও পড়ুন: মমতা মেগাস্টার, আমি টুইঙ্কল টুইঙ্কল লিটল ষ্টার: অকপট মদন মিত্র
মদনের দাবি, প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কোনও কথাই বলেন নি। তাঁর কথায়, "দিদি আমাকে আগে থেকে কিছুই বলেন নি। কোনও আঁচ পাইনি। আচমকা টিভিতে দেখলাম আমার নাম ঘোষণা হল। তার আগে বিন্দুবিসর্গও জানতাম না। নিজের কাজ নিয়ে ছিলাম। দলের হয়ে প্রচার করছিলাম।"
মদন জানান, এদিন তিনি ভাটপাড়া-সহ ব্যারাকপুর কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় প্রচারে যাচ্ছিলেন। তবে তা নিছকই ঘটনাচক্র। তিনি বলেন, "আমি তো দলীয় প্রার্থীদের হয়ে রোজই প্রচার করছি। এদিন দীনেশ ত্রিবেদীর হয়ে ব্যারাকপুর কেন্দ্রের নৈহাটি, কাঁচরাপাড়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে। তার অঙ্গ হিসাবে ভাটপাড়াতেও যাব। তবে সবেমাত্র নাম ঘোষণা হয়েছে, একটু ধাতস্থ হই, তারপর ভাবব কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।"
ভাটপাড়া অর্জুন সিং-এর খাসতালুক হিসাবে পরিচিত। সেখানে মদনের নাম ঘোষণা হওয়ায় তাঁর অনুরাগীদের একাংশ কিছুটা ক্ষুব্ধ। মদন-ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, "২০১৬ সালের ভোটে দাদা কামারহাটি থেকে লড়েছিলেন। দলের অর্ন্তদ্বন্দ্বের জেরে সামান্য ভোটে হেরে গিয়েছিলেন। কিন্তু ময়দান ছাড়েন নি। সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন তিনি কামারহাটি যান। ২০২১ সালে সেখান থেকেই লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার আগে কেন কোনও পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়া ভাটপাড়ার মতো সিটে মদনদাকে পাঠানো হচ্ছে, জানি না।" মদন যদিও বলছেন, "সিট যেমনই হোক, মদন মিত্র ওসব নিয়ে ভাবে না। লড়ব তো অবশ্যই। নেত্রী আমার নাম ঘোষণা করেছেন, লড়তে তো হবেই।"