মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন বিধায়ককে মঙ্গলবার রাতে গুরুগ্রামের হোটেলে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করল কংগ্রেস। মন্ত্রী জিতু পাটোয়ারি ও জয় বর্ধন সিং সহ বিধায়করা বুধবার ভোরে দিল্লিতে ফেরত আসতে পেরেছেন বলে জানা গিয়েছে। কংগ্রেসের দাবি অর্থের বদলে যেসব বিধায়করা শিবির বদলের চেষ্টায় ছিলেন তাঁরা আপাতত কংগ্রেসেই থাকছেন।
মধ্যপ্রদেশে কমলনাথ সরকার ফেলতে মরিয়া বিজেপি। কংগ্রেস বিধায়কদের বিশাল অঙ্কের টাকার টোপ দিচ্ছে পদ্ম শিবির। সোমবারই এই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সেই অভিযোগকেই সমর্থন করলেন দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে দ্বিগিজয়ের বিরোধী বলে পরিচিত মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। তবে, বিজেপির টোপে কংগ্রেস বা নির্দল বিধায়করা শিবির বদল করবেন না বলেই দাবি করেন তিনি। সরকারের স্থায়ীত্বের বিষয়েও আত্মবিশ্বাসী কমলনাথ।
কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। খবরে থাকতেই এটা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কৌশল বলে দাবি গেরুয়া নেতৃত্বের। তারপরই টুইটে দ্বিগিজয় সিং জানতে চান যে, 'রাম্বানির বিএসপি বিধায়ককে চাটার্ড বিমানে কী প্রাক্তন মন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিং দিল্লি নিয়ে য়াননি?' পরে জানান, ওই বিএসপি বিধায়কের উপর কংগ্রেসের আস্থা রয়েছে।
দ্বিগিজয়ের দাবি, 'দল বদলের জন্য কংগ্রেস বিধায়কদের ২৫ থেকে ৩৫ কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে প্রথমে ৫ কোটি দেওয়া হবে বলা হয়। রাজ্যসভা ভোট, শিবির বদল ও কংগ্রেস সরকারের পতনের পর বাকি টাকা ক্রমে পৌঁছে যাবে বিধায়কদের কাছে। বিজেপির তরফে এমনই প্রস্তাব আসে।' এই পদক্ষেপের পিছনে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ও প্রাক্তন মন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র রয়েছে বলে অভিযোগ করেন কংগ্রেস নেতা। দ্বিগিজয়ের স্বপক্ষে প্রমাণ হিসাবে সামনে আসেন কংগ্রেস বিধায়ক বৈজন্ত কুশওয়া। বিজেপির তরফে তাঁকে ২৫ কোটি ও মন্ত্রীত্ব পদ দেওয়া হবে বলে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান বৈজন্ত।
আরও পড়ুন: দিল্লি হিংসায় উস্কানি ছড়িয়েছে হোয়াটসঅ্যাপেই
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। টাকার প্রস্তাব আসলে তা নিয়ে নেওয়ার জন্যও দলের বিধায়কদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বিধায়ক কেনাবেচা প্রসঙ্গে এমনটাই দাবি করেন কমলনাথ। তাঁর দাবি, 'কংগ্রেস ক্ষতায় থাকলে বিজেপির ১৫ বছর ধরে করে চলা দুর্নীতি ফাঁস হয়ে যাবে। তাই বিরোধী সরকার রাজ্য শাসনের দায়িত্বে থাকুক তা মেনে নিতে পারছে না কেন্দ্রের শাসক দল। তাই সরকার ভাঙতে চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি।'
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা শিবরাজ সিং চৌহানের দাবি, 'দাবি আদায়ের কমলনাথ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতেই দ্বিগিজয় সিং এইসব ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।' রাজ্যের বিরোধী দলনেতা গোপাল ভার্গবের কথায়, 'মধ্যপ্রদেশে ঘোড়া কেনাবেচার মত বিধায়ক কেনাবেচার ঐতিহ্য নেই। কংগ্রেস নেতা তাঁর অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ দিন।' একই অভিযোগ করেছেন গো-বলয়ের অন্তর্গত এই রাজ্যের বিজেপি সভাপতি ভি ডি শর্মাও।
মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় মোট ২৩০টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে কংগ্রেস ও বিজেপির ১জন করে বিধায়কের মৃত্যু হওয়ায় দুটি আসন শূন্য রয়েছে। অর্থাৎ, বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে গেলে ১১৫ জন বিধায়কের সমর্থন প্রয়োজন। কংগ্রেসের রয়েছে ১১৪ জন বিধায়ক। বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ১০৭। বাকি আট জনের মধ্যে দু’জন বহুজন সমাজ পার্টি ও এক জন সপার বিধায়ক। বাকি চার বিধায়ক নির্দল।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন