প্রয়াত হলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট বিধানসভা কেন্দ্রের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী ধূর্জটি সাহা। এলাকায় মানস নামেই জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। ভোট গণনার দিন গণনা কেন্দ্রের বাইরে তাঁকে বেধরক মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। মাথায় আঘাত লাগে তাঁর। বিগত কয়েক মাস ধরেই মল্লিকবাজারের একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। শেষে আজ ঠাকুরপুকুরের একটি নার্সিংহোমে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই বিজেপি নেতা।
এই ঘটনা ভোট পরবর্তী হিংসার আরও এক প্রমাণ বলে সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির। তৃণমূল বিধায়ক গিয়াউদ্দিন মোল্লার নেতৃত্বেই ধূর্জটি সাহাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ বিজেপির। ২রা মে-র এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল।
ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ভোটের পর কিছুই হয়নি। যা ঘটেছে, সেগুলো ছোট্ট ঘটনা। অথচ কোর্ট বলছে অনেক কিছু ঘটেছে। পুলিশের সামনে এই ঘটনা ঘটলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। আবারও বিজেপির প্রার্থী, নেতার মৃত্যু হল তৃণমূল গুন্ডাবাহিনীর মারে। ফলে প্রমাণ হচ্ছে ভোটের পর কত ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে।' বিজেপির রাজ্য নেতা অভিজিৎ দাস বলেন, 'গণনা চলাকালীন গণনা কেন্দ্রের বাইরে বেরিয়েছিলেন মানস সাহা। তখনই তাঁকে নিশানা করে তৃণমূলের গিয়াসউদ্দীন মোল্লার দলবল। রড, বাঁশ দিয়ে মারধর করা হয়। ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারান তিনি। পরে ভর্তি করা হয় নার্সিংহোমে। কিন্তু, অবস্থার খুব উন্নতি হয়নি। এটা ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা।'
আরও পড়ুন- ‘আমি না জিতলে মুখ্যমন্ত্রী হবে অন্য কেউ’, খাস তালুক ভবানীপুরে প্রচারে ‘আবেগী’ মমতা
রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, 'এই ঘটনায় গোটা বাংলার মাথা হেঁট হয়ে গেল। শাসক দল ক্ষমতায় এসেও বিরোধী দলের নেতা, কর্মীদের মারছে। বাদ যায়নি প্রার্থীও। শেষ পর্যন্ত এমন মার মারল যে একজন প্রার্থীর মৃত্যু হল।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে যে, ২রা মে গণনা চলাকালীন দুপুর দেড়টা নাগাদ আচমকা গণনাকেন্দ্রের সামনে ভিড় জমান তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। সেই সময় মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ধূর্জটি সাহা ওরফে মানস গণনাকেন্দ্রের বাইরে বেরিয়েছিলেন। তখনই তাঁকে টানতে টানতে নিয়ে যায় একদল দুষ্কৃতী। এর পর রাস্তায় ফেলে তাঁকে বাঁশ, রড দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। মাথায় চোট লাগে। পরে ভর্তি করা হয় নার্সিংহোমে।
বিজেপির নিশানায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী গিয়াসউদ্দীন মোল্লা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে তিনি বলেন, 'তিন চার মাস আগের কথা। আমার অতটা মনে নেই। তবে, আমি ভোট গণনা কেন্দ্রের মধ্যে ছিলাম। তাই কিছুই জানি না। যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার বা আমার পরিবারের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। আমি প্রয়াত মানস সাহার শোকার্ত পরিবারকে সমবেদনা জানাই।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন'