আর কিছুক্ষণের মধ্যেই কংগ্রেস, এনসিপি এবং শিবসেনার যৌথ আবেদন শুনবে হবে সুপ্রিম কোর্ট। শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এন ভি রামান্না , বিচারপতি অশোক ভূষণ ও সঞ্জীব খান্নার ডিভিশন বেঞ্চে। বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার গঠনের অনুমতি দেওয়ায় মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগৎ সিং কেশিয়রের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানায় এই তিন দল। ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিধানসভায় আস্থা ভোটের আবেদন জানানো হয়েছে। মামলার গুরুত্ব বিশ্লেষণ করে তাই আজ-ই তিন দলের আবেদন শুনবে দেশের শীর্ষ আদালত।
এদিকে এনসিপি নবাব মালিক জানিয়েছেন, 'অজিত পাওয়ারের সঙ্গে বিজেপিকে সমর্থনকারী এনসিপি বিধায়করা আজ বিকেলের মধ্যেই দলে ফিরে আসবে। অজিত পাওয়ার ভুল করেছেন। তাঁকে বোঝানো হচ্ছে। তবে এখনও সাড়া মেলেনি। আস্থা ভোট হলে হারবেন দেবেন্দ্র ফড়নবীশ। তাই আগেই তিনি পদত্যাগ করুন।'
শরদ পাওয়ারের শক্তি হ্রাস করে পদ্ম শিবিরকে সমর্থনের জেরে শনিবারই পদ খুইয়েছেন অজিত পাওয়ার।এনসিপির পরিষদীয় দলনেতার পদ থেকে ভাইপো অজিত পাওয়ারকে বাদ দিলেন শরদ পাওয়ার। বদলে এনসিপির নতুন পরিষদীয় দলনেতা হলেন জয়ন্ত পাটিল। মহারাষ্ট্রে অজিত পাওয়ারের সমর্থন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে শনিবার সকালে দেবেন্দ্র ফড়ণবীশের শপথ গ্রহণের পর এদিনই সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় শিবসেনা। তাদের অভিযোগ, রাজ্যপাল দলীয় স্বার্থে কাজ করছেন।
এদিকে, মহারাষ্ট্রে সরকার গড়বে শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেস জোটই, অজিতকাণ্ডের পরও শনিবার দুপুরে চড়া সুরে দাবি করেছেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার। অজিত পাওয়ারকে চ্যালেঞ্জ করে সেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে বলেন, 'শিবসেনার বিধায়কদের ভাঙিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। মহারাষ্ট্র ঘুমিয়ে থাকবে না।'
শিবসেনা প্রধান উদ্ভব ঠাকরেকে নিয়ে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে অজিতের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন শরদ পাওয়ার। বললেন, 'দলের মূল্যবোধের পরিপন্থী কাজ করেছেন অজিত।ওর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে। আমি যতদূর খবর পেয়েছি দলের ১০ থেকে ১১ জন বিধায়ক চলে গিয়েছেন। তবে, এর মধ্যেও বেশ কয়েকজন দলের নেতাদের সঙ্গে ফের যোগাযোগের চেষ্টা করছেন।' অজিত অনুগামী এনসিপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে অভিযোগ জানানো হবে বলে এদিন স্পষ্ট করেন শরদ পাওয়ার।
অজিত পাওয়ার কিছু না জানিয়েই বিধায়কদের রাজভবনে নিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ এনসিপির। সেই অভিযোগ পোক্ত করেন এদিন সকালে শপথ অনুষ্ঠানের সাক্ষী দলের বিধায়ক ডঃ রাজেন্দ্র শিংগনে। যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, 'গত রাতে আমাকে অজিত পাওয়ার ফোন করে আজ সকালে ৬টায় তাঁর বাড়িতে যেতে বলেন। আমরা ৮-১০ জন বিধায়ক জড়ো হই। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের রাজভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। কেন সেখানে যাচ্ছি এসম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।' এরপরই ডঃ রাজেন্দ্র শিংগনে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, তিনি শরদ পাওয়ারের সঙ্গে রয়েছেন।
Two more NCP MLAs Sandip Kshirsagar and Sunil Bhusara also allege that they were unknowingly taken to the oath ceremony and that now they have come back and expressed support to Sharad Pawar. https://t.co/sLx19ngw2w pic.twitter.com/CechUAcQW4
— ANI (@ANI) November 23, 2019
শরদ পাওয়ারের ঘোষণা, 'কংগ্রেস, এনসিপি ও শিবসেনা জোট অটুট রয়েছে। আমরা সরকার গঠনের দাবি জানাব। জোটের পক্ষে ১৭০ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে।' শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের দাবি, 'রাতের অন্ধকারে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করা হয়েছে। মহারাষ্ট্রের মানুষ এর বদলা নেবে।'
শনিবার সকালে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে ঘটে মহা নাটক। শনিবার সাত সকালে রাজভবনে গিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবীশ। উপ-মুখ্যমন্ত্রী শপথ নিয়েছেন এনসিপির অজিত পাওয়ার। রাজ্যপাল ভগৎ সিং কেশিয়ারি তাদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন।
#WATCH Mumbai: NCP's Ajit Pawar takes oath as Deputy CM, oath administered by Maharashtra Governor Bhagat Singh Koshyari at Raj Bhawan. pic.twitter.com/TThGy9Guyr
— ANI (@ANI) November 23, 2019
শপথের পরেই দেবেন্দ্র ফড়নবীশকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টুইটে তিনি লিখেছেন, 'আমি নিশ্চিত দেবেন্দ্র ফড়নবীশ ও অজিত পাওয়ার সযত্নে মহারাষ্ট্রের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কাজ করবেন।'
Congratulations to @Dev_Fadnavis Ji and @AjitPawarSpeaks Ji on taking oath as the CM and Deputy CM of Maharashtra respectively. I am confident they will work diligently for the bright future of Maharashtra.
— Narendra Modi (@narendramodi) November 23, 2019
রাজ্য রাজনীতির এই নয়া মোড়ে তোপ দাগেন শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। তিনি বলেন, 'রাতের অন্ধকারে অপরাধ সংগঠিত করেছে রাজভবন।'
মহারাষ্ট্রের সরকার গঠনে শুক্রবারই চূড়ান্ত হয়েছিল কংগ্রেস, এনসিপি ও শিবসেনা জোট। ঘোষণা করা হয় আগামী পাঁচ বছর জোটের তরফে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন উদ্ধব ঠাকরে। উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদ আড়াই বছর করে পাবেন কংগ্রেস ও এনসিপি। শনিবার দুপুরে এই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার বাকি ছিল মাত্র। কিন্তু, শুক্রবার রাত গড়াতেই চূড়ান্ত নাটকীয় মোড় নেয় মারাঠা রাজ্যের রাজনীতিতে।
শনিবার সকালেই রাজভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথবাক্য পাঠ করেন দেবেন্দ্র ফড়নবীশ। তাঁকে সমর্থন জানান এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার। তিনিও শপথ নেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে। তবে, রাজভবনে ওই দিন অন্য কোনও এনসিপি নেতা বা বিধায়ককে দেখা যায়নি।
গতকাল বিজেপি নেতা গিরিশ মহাজন দাবি করেন, 'আজিত পাওয়ার সব বিধায়কদের সাক্ষরিত একটি চিঠি রাজ্যপালকে দিয়েছেন। তার মানে সব এনসিপি বিধায়করা বিজেপির সঙ্গেই রয়েছেন।' বিধানসভা ভোটের আগে ইডি অর্থ তছরুপের অভিযোগে শরদ পাওয়ার, অজিত পাওয়ার সহ একাধিক কংগ্রেস ও শিবসেনার নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। তবে, ক্ষমতার স্বাদ পেতে এসবকে এখন বড় করে দেখতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। গিরিশ মহাজন বলেন, 'এখনও পর্যন্ত অজিত পাওয়ারের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ মেলেনি। কোনও মামলাতে তিনি দোষী সাব্যস্তও হননি।'
আরও পড়ুন: অজিত পাওয়ার বিশ্বাসঘাতক, দল ও পরিবারে ভাঙন ধরেছে: সুপ্রিয়া সুলে
ফের ক্ষমতার চূড়ায় বসে ফড়নবীশ বলেন, 'আমাকে ফের সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। শিবসেনা জনাদেশ ভঙ্গ করেছে। রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি থাকা কখনই কাম্য নয়। রাজ্যবাসী পোক্ত সরকারের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন। আমরা সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারব বলে মনে করছি। দল কোনওভাবেই '
শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেকে পাঁচ বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মেনে নেয় কংগ্রেস ও এনসিপি। যার প্রবল বিরোধী অজিত পাওয়ার। সূত্রের খবর, এই মনোমালিন্য থেকেই দলের সঙ্গে তাঁর বিরোধ প্রকট হয়। শনিবার বিজেপিকে সমর্থন জানান শরদ পাওয়ারের ভাইপো এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার।
২৮৮ আসন বিশিষ্ট মহারাষ্ট্র বিধানসভার ভোটে এবার কোনও দলই সরকার গড়ার একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পায়নি। ভোটের ফলাফলের পর মুখ্যমন্ত্রীত্বের প্রশ্নে বিভেদ ধরে শিবসেনা-বিজেপি জোটে। এবার ভোটে বিজেপি পায় ১০৫ আসন। এনসিপির দখলে রয়েছে ৫৪ আসন। কংগ্রেস ও শিবসেনা পায় যথাক্রমে ৪৪ ও ৫৬ আসন। এক্ষেত্রে সরকার গড়তে বিজেপির প্রয়োজন ১৪৫ বিধায়কের সমর্থন। প্রথম পর্যায়ে তা জোগাড়ে ব্যর্থ হয় গেরুয়া শিবির। শিবসেনার নেতৃত্বে চলে 'বিকল্প' জোট গঠনের তোড়জোড়। রাজ্য রাজনীতির গতি প্রকৃতি পর্যবেক্ষণে রেখেছিল পদ্ম শিবির। এনসিপির অন্দরে বিরোধের গন্ধ পেতেই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন ফড়নবীশরা। তবে বিধানসভায় আস্থা ভোট হলে বিজেপির হার নিশ্চিত বলে দাবি করেন এনসিপি নেতা নবাব মালিক।
মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি তথা স্বরাষ্ট্রমমন্ত্রী অমিত শাহ। টুইটে তিনি জানিয়েছেন, 'আমি মনে করি রাজ্যের স্বার্থে এই সরকারের নিরবিচ্ছিন্ন কাজ উন্নয়নের নতুন মাত্রা নির্ধারণ করবে।'
श्री @Dev_Fadnavis जी को महाराष्ट्र के मुख्यमंत्री और श्री @AjitPawarSpeaks को प्रदेश के उपमुख्यमंत्री के रूप में शपथ लेने पर हार्दिक बधाई।
मुझे विश्वास है कि यह सरकार महाराष्ट्र के विकास और कल्याण के प्रति निरंतर कटिबद्ध रहेगी और प्रदेश में प्रगति के नये मापदंड स्थापित करेगी।
— Amit Shah (@AmitShah) November 23, 2019
ভোটের ফল প্রকাশের প্রায় দু'সপ্তাহ পরও মহারাষ্ট্রের সরকার গঠনে কোনও দল প্রয়োজনীয় বিধায়কের সমর্থন আদায় করতে পারেনি। ফলে রাজ্যপালের সুপারিশে প্রায় ১০ দিন আগে রাজ্যে জারি হয় রাষ্ট্রপতি শাসন। শনিবার ফড়নবীশ মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথের আগেই মহারাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার করা হয়।
এই ঘটনার পরই কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভী টুইটে শরদ পাওয়ারকে কটাক্ষ করে লেখেন, 'পরাবাস্তব। ত্রিপাক্ষিক বৈঠক তিন দিনের বেশি চালিয়ে যাওয়া উচিত হয়নি। সেই সুযোগটাই কাজে লাগানো হয়েছে। এই ঘটনা সত্যি হলে তা অভিনব। পাওয়ারজী তুসি গ্রেট হো।'
Surreal wht I read abt #Maharashtra. Thought it was fake news. Candidly &personally speaking, our tripartite negotiations shd not have gone on for more than 3 days...took too long. Window given was grabbed by fast movers. #pawarji tussi grt ho! Amazing if true, still not sure
— Abhishek Singhvi (@DrAMSinghvi) November 23, 2019
Read the full story in English