মহারাষ্ট্রের সরকার গঠন নিয়ে এবার শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী। উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রে সরকার গড়তে শিবসেনাকে সমর্থন দিতে রাজি এনসিপি। দলের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে, এখনও চূড়ান্ত কোনও ঘোষণা করেনি শরদ পাওয়ারের দল। জোটসঙ্গী কংগ্রেসের দিকেই তাকিয়ে এনসিপি। শেষ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে সেনা-এনসিপি সরকারকে সমর্থন করবে কিনা , এ নিয়ে জোরদার আলোচনা চালাচ্ছে কংগ্রেস। সোমবার ১০ জনপথে মহারাষ্ট্রের নেতাদের ডেকে পাঠিয়েছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বে। জানা যাচ্ছে, সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা করা হবে। এর আগে ছেলে আদিত্যকে সঙ্গে নিয়ে উদ্বব ঠাকরে বৈঠক করেন শরদ পাওয়ারের সঙ্গে।
এদিন সকালে মোদী মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন শিবসেনার অরবিন্দ সাওয়ান্ত। কেন্দ্রের ভারী শিল্প মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনে বিজেপি ও সেনার দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছায়। প্রয়োজনীয় আসন না থাকায় মহারাষ্ট্রের সরকার গড়তে ব্যর্থ হয় বিজেপি। এরপরই সরকার গড়তে সেনা শিবিরকে শর্ত দেয় শরদ পাওয়ারের এনসিপি। সেই শর্ত পূরণে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিলেন অরবিন্দ সাওয়ান্ত। ফলে দীর্ঘদিনের বিজেপি-শিবসেনার জোটের ইতি ঘটলো।
মুখ্যমন্ত্রী পদে ৫০-৫০ ফর্মুলার দাবি জানিয়েছিল শিবসেনা। কিন্তু, তা মানেনি বিজেপি। একক বৃহত্তম দলল হলেও ম্যাজিক ফিগারের লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ হয় গেরুয়া শিবির। দাবি না মানায় বেঁকে বসে উদ্ধব ঠাকরেরা। ফলে, সেনার উপর দায় ঠেলে রবিবারই বিজেপি জানিয়ে দেয় তারা সরকার গড়বে না। এই অবস্থায় শিবসেনার কোর্টে বল বল। সেনাদের মহারাষ্ট্রে সররকার গড়তে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি।
আরও পড়ুন: বিধায়ক ভাঙাতে পারে বিজেপি, আশঙ্কায় সেনা
মারাঠা রাজ্যের ক্ষমতায় আসতে রবিবার রাত থেকেই তৎপর উদ্ধব ঠাকরের দল। কথা এগোয় এনসিপির সঙ্গে। এরই মাঝে সুযোগ বুঝে সেনা শিবিরকে শর্ত দিয়ে বসে শরদ পাওয়াররা। বলা হয় ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে সরকার চলবে। এছাড়াও শিবসেনাকে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে পদ্ম শিবিরের সঙ্গে। এনসিপি নেতা নবাব মালিক জানিয়ে দেন, 'শিবসেনাকে এনডিএ ছাড়তে হবে। নরেন্দ্র মোদী সরকারে তাদের একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী রয়েছেন।তাঁকে ইস্তফা দিতে হবে। তারপরই সম্পূর্ণ বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা করবে দল।'
আরও পড়ুন: কাশী-মথুরা নিয়ে এখনই আগ্রাসী হবে না সংঘ পরিবার
এদিকে, পুরো পরিস্থিতিরর উপর নজর রাখছেন দেবেন্দ্র ফড়নবীশরা। সরকার গঠনের চাপ একদা জোটসঙ্গী শিবসেনা শেষ পর্যন্ত সামলাতে পারে কিনা বিজেপির নজর এখন সেদিকেই। এমনকী মাঝপথে ভোটের চিন্তাও করছে গেরুয়া শিবির।কংগ্রেস কী শিবসেনাকে সরকার গড়তে সমর্থন করবে? কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপমের বক্তব্যে অবশ্য অন্য ইঙ্গিত মিলছে। শিবসেনা মুখপাত্র বলেছেন, 'রাজ্যপাল সরকার গড়তে আমাদের ৭২ ঘন্টা সময় দিয়েছেন। যা যথেষ্ট বলেই মনে করি। আসলে এসব হল রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে বিজেপির কৌশল।'
সঞ্জয় নিরুপমের টুইটে প্রশ্ন তুলে লিখেছেন, 'সরকার গঠন কে কীভাবে করবে তা বিবেচ্য নয়। তবে, মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক অস্থিরতা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।। নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হন। যা ২০২০ সালেই হতে পারে। আমরা কী নির্বাচন যাবো শিবসেনার সঙ্গী হয়ে?' এদিনই সোনিয়া গান্ধীর বাড়িতে বৈঠক বসেছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সেখানে আলোচনায় উঠে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিধায়কদের সুরক্ষিত রাখতে পাটানো হয়েচে জয়পুরে। সেখানে কংগ্রেস বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন মল্লিকার্জুন খাড়গে।
বিধানসাভা নির্বাচনে শিবসেনার হাতে রয়েছেন ৫৬ বিধায়ক। এনসিপির ৫৪ বিধায়কের সমর্থন পেলেও ম্যাজির ফিগারে পৌঁছানো সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজন হবে কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিধায়কদের সহায়তার। তবেই, 'ম্যাজির ফিগার' ১৪৫-এ পৌঁছানো সম্ভব। শিবসেনা এখন কীভাবে সমর্থন জোড়াগ করে নজর সেদিকেই।
Read the full story in English