Advertisment

অপসারিত শিন্ডে, দিল্লিতে ফড়নবিশ, মহারাষ্ট্রে কেল্লাফতে পদ্মের নাকি চাই আর ১০ বিধায়ক!

গুজরাতের হোটেলে 'বন্দি' শিবসেনার বিদ্রোহী বিধায়করা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
shinde_uddhav

মহারাষ্ট্রে শিবসেনার অভ্যন্তরীণ বিবাদ চরমে। এমনকী, পড়েও যেতে পারে সরকার। কারণ, শিবসেনার মন্ত্রী একনাথ শিন্ডে দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলে অভিযোগ। তিনি ১২ জন বিধায়ককে নিয়ে বিজেপিশাসিত গুজরাতে গিয়ে ঘাঁটি গেড়েছেন। পরিস্থিতি সামলাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিল শিবসেনা। মুখ্যমন্ত্রী তথা দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সরকারি বাসভবনে এক জরুরি বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে শিন্ডেকে দলের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisment

তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন বিধায়ক অজয় চৌধুরী। বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, শিন্ডে ১২ শিবসেনা বিধায়ককে নিয়ে সুরাটের লে মেরিডিয়ান হোটেলে উঠেছেন। তার পর থেকে ওই হোটেলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই হোটেলে আসা প্রতিটি গাড়ি পুলিশ পরীক্ষা করছে। তারপর গাড়িগুলোকে যেতে দেওয়া হচ্ছে।

এই খবর পাওয়ার পর শিবসেনা নেতৃত্ব দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, 'শিন্ডে বিধায়কদের ভুল বুঝিয়েছিলেন। কিন্তু, সেই ভুল বুঝতে পেরে কয়েকজন বিধায়ক শেষ পর্যন্ত দলের সঙ্গে যোগাযোগও করেন। তাঁরা ফিরে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, পুলিশ দিয়ে এখন তাঁদের হোটেলে আটকে রাখা হচ্ছে।' সূত্রের খবর, পরিস্থিতি তাঁদের অনুকূল হওয়ায় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের জন্য দিল্লি উড়ে গিয়েছেন মহারাষ্ট্রের বিরোধী নেতা বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবিশ।

শিবসেনার এক নেতা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন যে তাঁরা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, দলের চার রাষ্ট্রমন্ত্রী-সহ প্রায় ২০ জন বিধায়কের সঙ্গে এই মুহূর্তে শিবসেনা নেতৃত্ব যোগাযোগই করতে পারছেন না। সোমবারই ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) মহারাষ্ট্রের শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেসের শাসক জোট মহাবিকাশ আগাড়িকে-কে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে। বিধান পরিষদের নির্বাচনে বিজেপি ১০টি আসনের মধ্যে ৫টি জিতে গিয়েছে। প্রতিটি আসনে জয়ের জন্য ২৬ জন বিধায়কের সমর্থন প্রয়োজন ছিল।

সেই হিসেবে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় শিবসেনা, এনসিপি, কংগ্রেস এবং বিজেপির সদস্য সংখ্যা বিবেচনা করলে বিজেপির ৪টি এবং মহাবিকাশ আগাড়ির ৬টি আসনে জেতার কথা ছিল। কিন্তু, বিজেপি ৪টির বদলে ৫টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল। আর, ৫টিতেই জয় নিশ্চিত হয়েছে। এই বদলে যাওয়া হিসেবের পরই শিন্ডে-সহ প্রায় ২০ জন শিবসেনা বিধায়কের সঙ্গে দল যোগাযোগ করতে পারছে না। শিবসেনা নেতৃত্ব জানতে পেরেছেন নির্দলদের পাশাপাশি তাঁদের ওই ২০ জন বিধায়কও বিজেপিকেও ভোট দিয়েছেন।

আরও পড়ুন- এবার বলানো হল দোভালকে দিয়ে, অগ্নিপথের ভবিষ্যৎ জানালেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা

এই পরিস্থিতিতে মুখ খুলেছেন মহারাষ্ট্র বিকাশ আগাড়ির আহ্বায়ক তথা এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার। তিনি জানিয়েছেন যে মহারাষ্ট্রে তাঁদের সরকারকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে, এটা নতুন কিছু নয়। এই নিয়ে তৃতীয়বার ঘটল। পাওয়ার বলেন, 'একনাথ শিন্ডে তাঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে আমাদের কখনও বলেননি। তবে আমি নিশ্চিত যে উদ্ধব ঠাকরে পরিস্থিতি সামলে দেবেন।'

গুজরাত থেকেই পালটা অবশ্য টুইট করেছেন শিন্ডেও। তিনি লিখেছেন, ‘আমরা বালাসাহেবের আদর্শে অনুপ্রাণিত কট্টর শিবসৈনিক। বালাসাহেব আমাদের হিন্দুত্ব শিখিয়েছেন। বালাসাহেবের আদর্শ এবং দীক্ষা-শিক্ষার ফলে আমরা সত্যের প্রতি অবিচল, ক্ষমতার লোভে কখনও প্রতারণা করিনি।’ সূত্রের খবর, মহারাষ্ট্রের নগরোন্নয়নমন্ত্রী শিন্ডের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ও তাঁর ছেলে তথা মহারাষ্ট্রের পর্যটন মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে সবসময় ছড়ি ঘোরান। তার ফলে তিনি স্বাধীনভাবে নগরোন্নয়ন দফতর পরিচালনা করতে পারেননি।

বর্তমানে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিজেপি ও তার সহযোগী দলগুলোর বিধায়ক সংখ্যা ১১৩। শিন্ডে যদি ২২ বিধায়ককে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন, তাহলে সংখ্যাটা হবে ১৩৫। মহারাষ্ট্র বিধানসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ১৪৫ জন বিধায়কের সমর্থন দরকার। এই পরিস্থিতিতে সরকার গড়তে হলে বিজেপি জোটের আরও ১০ বিধায়ক দরকার।

Read full story in English

shiv sena Uddhav Thackeray Uddhav Government
Advertisment