Advertisment

মহেশতলা উপনির্বাচন: দ্বিতীয় হওয়ার দৌড়ে পদ্মে কাঁটা বহিরাগত তকমা

দুলাল দাসের দাবি, বিজেপি নিজের ক্ষমতায় বাড়ছে না। সিপিএম থেকে ভোট যাচ্ছে বিজেপির দিকে। আর বহিরাগত তকমার জবাবে বিজেপি প্রার্থী বলছেন, জিতলেই মহেশতলায় ফ্ল্যাট কিনবেন তিনি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
delhi-mcd-polls-759

মহেশতলা কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচন ২৮ মে, ভোটগণনা ৩১ মে (প্রতীকী ছবি)

জয়প্রকাশ দাস

Advertisment

রাজ্য়ের পঞ্চায়েত ভোটে সার্বিক ভাবে দ্বিতীয় হলেও মহেশতলা বিধানসভা উপনির্বাচনে কি সেকেন্ড পজিশন পাবে বিজেপি? চিন্তায় ফেলেছে তাদের প্রার্থীর বহিরাগত তকমা। সম্প্রতি রাজ্য়ে সমস্ত নির্বাচনে কংগ্রেস, সিপিএমকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বিজেপি। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে তৃণমূলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি, তা নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। কিন্তু মহেশতলার এই উপনির্বাচনের ফলাফলও রাজ্য়ের রাজনীতিতে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

মহেশতলায় উন্নয়নকে সামনে রেখে প্রচারে ঝড় তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর অটো, বাসে ঘুরে দিনভর প্রচার করছেন সিপিএম প্রার্থী। এই কেন্দ্রে কংগ্রেস কোনও প্রার্থী দেয়নি। সিপিএম-তৃণমূল দু পক্ষই বিজেপি প্রার্থীর সম্পর্কে বহিরাগত হিসেবটাই কাজে লাগাচ্ছেন।

মহেশতলার বিধায়ক কস্তুরী দাস মারা যাওয়ার পর এই আসনটি শূন্য় হয়ে পড়ে। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করে প্রয়াত কস্তুরী দাসের স্বামী দুলাল দাসকে। তিনি মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্য়ানও। স্বভাবতই পরিচিতির ভারে তিনি অন্য় প্রার্থীদের থেকে অনেকটা এগিয়ে। সিপিএম না বিজেপি, কে দ্বিতীয় স্থান পাবে সে নিয়ে তিনি ভাবতেই নারাজ। নিশ্চিত জয়ের বিষয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী। দুলালবাবুর বক্তব্য়, গোটা রাজ্য়ের সঙ্গে মহেশতলায়ও আশাতীত উন্নয়ন হয়েছে। যেহেতু তিনি নিজে পুরসভার দায়িত্বে তাই শহরের উন্নয়নের বেশিরভাগ দায়ভার বইতে হচ্ছে তাঁকেই। উন্নয়নের পরিসংখ্য়ান দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘শহরের ৮০ শতাংশ রাস্তা পাকা, বিদ্যুৎ, জল কোনও কিছুর অভাব নেই। সাত কিলোমিটার ফ্লাইওভারের কাজও প্রায় শেষ, বা প্রায় ২৫০-৩০০ বেডের হাসপাতাল হয়েছে।’’ প্রচুর কাজ হয়েছে মহেশতলায়।

পঞ্চায়েতে বিজেপির ফল কিছুটা হলেও চিন্তায় ফেলেছে তৃণমূলকে। তবে দুলাল দাসের দাবি, বিজেপি নিজের ক্ষমতায় বাড়ছে না। সিপিএম থেকে ভোট যাচ্ছে বিজেপির দিকে।

বিনাযুদ্ধে মেদিনী ছাড়তে নারাজ সিপিএম প্রার্থী প্রভাত চৌধুরী। অটো-বাসে করে ঘুরছেন তিনি। ভোটারদের বলছেন, ‘‘আমি একেবারেই সাধারণ পরিবারের সদস্য়। আমার প্রাইভেট গাড়িতে ঘোরার প্রয়োজন নেই।’’ প্রভাতবাবু প্রচার করছেন, বিজেপিকে ভোট দেওয়া মানে ভোট নষ্ট। নষ্ট না করে সেই ভোট বামফ্রন্ট প্রার্থীকে দেওয়ার আবেদন করছেন তিনি। তাঁর দাবি, বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের ভোটও পাবেন তাঁরা।

এই আসনে গতবার সাড়ে ১২ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছিল সিপিএম। আর বিজেপি পেয়েছিল প্রায় ১৫ হাজার ভোট। বাম প্রার্থীর দাবি, গত বছর এখানে বিজেপির সঙ্গে অলিখিত জোট হয়েছিল তৃণমূলের সঙ্গে। তা নাহলে জয় পেত সিপিএমই।

অন্য় দিকে পঞ্চায়েতে প্রধান বিরোধী হওয়ায় আশাবাদী হয়ে উঠছে গেরুয়া শিবির। তাদের প্রার্থী প্রাক্তন সিবিআই কর্তা সুজিত ঘোষ। তাঁর দাবি, প্রচারে সাড়া মিলছে। তবে পতাকা, ফেস্টুন ছিঁড়ে দিয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বহিরাগত তকমার জবাবে প্রাক্তন আইপিএস বলছেন, জিতলেই মহেশতলায় ফ্ল্যাট কিনবেন তিনি। তবে এর আগে যে মুর্শিদাবাদে ভোটে দাঁড়িয়েও বহিরাগত তকমা জুটেছিল সেকথা মনে রয়েছে এই বিজেপি প্রার্থীর।

২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের কস্তুরী দাস ভোট পেয়েছিলেন ৯৩,৬৭৫টি। সিপিএম প্রার্থীর ঝুলিতে পড়েছিল ৮১, ২২৩টি ভোট। অন্য় দিকে বিজেপির কার্তিকচন্দ্র ঘোষ পেয়েছিলেন ১৪,৯০৯টি ভোট। ব্য়বধান ছিল ১২,৪৫২। তারপর রাজনৈতিক পরিস্থিতির অনেক বদল ঘটে গিয়েছে রাজ্য়ে। এই বিধানসভা কেন্দ্রে মুসলিম ভোটারের সংখ্য়া প্রায় ৩৩ শতাংশ। এ ব্যাপারটাও মাথায় রাখছে সব দল। 

tmc bjp Cpm maheshtala byelection
Advertisment