‘ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন’ তোলার বিরাট অভিযোগ তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে স্পিকার ওম বিড়লার কাছে এক চিঠিতে তাঁর অভিযোগ তুলে ধরেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। এই নিয়ে কয়েকদিন ধরে সরগরম জাতীয় রাজনীতি। মহুয়া মৈত্র তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে,একের পর এক বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই ইস্যুতে মহুয়ার কড়া সমালোচনা করেছেন। বিজেপি সাংসদরা মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ওঠা এই গুরুতর অভিযোগের তদন্ত দাবি করেছেন।
বিষয়টি ইতিমধ্যেই লোকসভার এথিক্স কমিটির কাছে পৌঁছেছে। বিভিন্ন দলের ১৫ সদস্যের এক কমিটি এখন বিষয়টির তদন্ত করবে। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এই বিষয়ে স্পিকার ওম বিড়লার কাছে অভিযোগ জানান এবং মহুয়া মৈত্রের সংসদীয় আচরণ বিধি নিয়ে তদন্তের দাবি তোলেন। এক ব্যবসায়ীর নির্দেশেই লোকসভায় মোদীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল সাংসদ। এমনই অভিযোগে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্র দুবে রবিবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে একটি চিঠি লিখেছিলেন, চিঠিতে তিনি মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সংসদে প্রশ্ন তোলার জন্য একজন শিল্পপতির কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করেন। যদিও টিএমসি সাংসদ মহুয়া মৈত্র সব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠনের আবেদন করেছেন। বিজেপি সাংসদ অভিযোগ করেছেন যে এখনও পর্যন্ত লোকসভায় তোলা মহুয়া মৈত্রের ৬১টি প্রশ্নের মধ্যে ৫০টি ‘ইআদানি গোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে।
বর্তমানে লোকসভার এথিক্স কমিটির সভাপতি বিজেপি সাংসদ বিনোদ কুমার সোনকর। তাঁর নেতৃত্বাধীন কমিটি এবার এই অভিযোগ খতিয়ে দেখে তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে। কমিটির অনান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ডাঃ সুভাষ রামরাও ভামরে, বিজেপি
সুনীতা দুগ্গল, বিজেপি, হেমন্ত তুকারাম গডসে, শিবসেনা, প্রনীত কৌর, কংগ্রেস, কুনওয়ার দানিশ আলী, বিএসপি, পি আর নটরাজন, সিপিএম, উত্তম কুমার নালমাদা রেড্ডি, কংগ্রেস, ডঃ রাজদীপ রায়, কংগ্রেস, অপরাজিতা সারঙ্গী, বিজেপি, সুমেদানন্দ সরস্বতী, বিজেপি, বিষ্ণু দত্ত শর্মা, বিজেপি, বালাশৌরি বল্লভানেনি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, বৈথিলিঙ্গম ওয়ে, কংগ্রেস,গিরিধারী যাদব, আরজেডি।
নিশিকান্ত দুবে জানিয়েছেন, মহুয়ার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাই। তিনি মহুয়ার পুর্বপরিচিত। সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানির স্বার্থ সম্পর্কিত প্রশ্ন সংসদে তোলা এবং আদানি গোষ্ঠীর স্বার্থ ক্ষুন্নের পাশাপাশি নগদ এবং উপহারের বিনিময়ে তাঁর সাংসদ পদ অপব্যবহার করা এবং অর্থের বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং আদানির সম্মানহানির মত অভিযোগ সামনে এসেছে।
২০০৫ সালেও, ১০ জন লোকসভার সাংসদ এবং একজন রাজ্যসভার সাংসদের বিরুদ্ধে এই এই ধরনের অভিযোগ সামনে আসে। পবন কুমার বনসালের নেতৃত্বে একটি কমিটি তদন্তে অভিযোগগুলির সত্যতা খুঁজে পায়। সেই সঙ্গে বাতিল হয় সকল সাংসদের সংসদ পদ। এদিকে মহুয়ার বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ সামনে আসতেই এক্সে এক বার্তায় টিএমসি সাংসদ লিখেছেন, জাল ডিগ্রিধারী এবং অন্যান্য বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের অনেক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সেই বিষয়ে প্রশ্ন তোলাতেই আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সামনে আনা হয়েছে।