Gujrat CM Sown-In: গুজরাতের ১৭তম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ভূপেন্দ্র প্যাটেল। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ-সহ অন্য রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব। শনিবার সবাইকে চমকে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়েন বিজয় রূপানি। তাঁর জায়গায় প্রথমবারের বিধায়ক হিসেবে ঘাটলোদিয়ার ভূপেন্দ্র প্যাটেলকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বাছাই করেন বিজেপির ১১২ জন বিধায়ক।
এদিকে, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিজয় রুপানির উত্তরসূরি খুঁজতে মরিয়া ছিল গেরুয়া বাহিনী। কেন্দ্রীয় শাসক দলের ‘মডেল’ রাজ্যের মসিহার সন্ধানে দুই পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছিলেন মোদী-শাহ। তাঁদের তদারকিতে পতিদার নেতা ভূপেন্দ্র প্যাটেলকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব।
তবে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে বেশ কয়েকটি বিকল্প ছিল বিজেপির সামনে। এঁদের কেউ দলীয় সংগঠনে আবার কেউ কেন্দ্রীয় বা রাজ্যে মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। কারা ছিলেন তাঁরা–
নীতীন প্যাটেল
রুপানি মন্ত্রিসভায় উপ-মুখ্যমন্ত্রিত্বের দায়িত্বে নীতীন প্যাটেল। কাদভা পাতিদান বংশভূত এই বিজেপি নেতার শিকড় জড়িয়ে রয়েছে মেহসানা জেলায়। ১৯৯৫ সাল থেকেই গুজরাট মন্ত্রিসভার ক্যাবিনেটে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন তিনি। গত দিনে বিজেপির ‘মডেল’ রাজ্য গুজরাটের অর্থ, স্বাস্থ্যের মত দফতরের মন্ত্রীত্ব সামলেছেন ছিলেন নীতীন প্যাটেল। ২০১৬ সালে আনন্দীবেন প্যাটেল মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়লে নীতী প্যাটেলেরই তাঁর জায়গায় বসার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তেব সমীকরণ বদলে যায়। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর মসনদে বসেন বিজয় রুপানি।
মনসুখ মান্ডব্য
কৃষক পরিবারের সন্তান মনসুখ মান্ডব্য ভাবনগরের হানোল গ্রাম থেকে উঠে এসেছেন। ১৯৯২ সাল থেকে এবিভিপি-র সদস্য তিনি। এরপর থেকে তাঁর উত্থান নজরকাড়া। ২০০২ সালে প্রথম বিধানসভা ভোটে লড়াই করেন এই লিউভা পাতিদার সম্প্রদায়ভুক্ত যুব নেতা। ২০১২ সালে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৬-তে মোদী মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। আর পাঁচ বছর পর দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসানো হয়েছে মান্ডব্যকে।
গোর্ধান জাদাফিয়া
লিউভা পাতিদান সম্প্রদায়ের এই বিজেপি আগেও রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় রাজ্যের স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন গোর্ধান জাদাফিয়া। এই নেতাও ভাবনগরের বাসিন্দা। গুজরাটের প্রথম বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর কেশুভাই প্যাটেলের অন্যতম ঘনিষ্ঠ ছিলেন এই নেতা। এমনকী মোদীর বিরোধিতা করে গঠন করেন মহা গুজরাট জনতা পার্টি, পরে যা কেশুভাই গঠিত গুজরাট পরিবর্তন পার্টির সঙ্গে মিশে যায়। পরে অবশ্য বিজেপিতেই ফিরে আসেন তিনি। বর্তমানে গোর্ধান জাদাফিয়া রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি।
দমন-দিউ, দাদরা নগর হাভেলি ও লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসক ছিলেন প্রফুল্ল খোদাভাই প্যাটেল। মুখ্যমন্ত্রী মোদী মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন এই নেতা। ২০০৭ সালে হিম্মতনগর থেকে ভোটে জেতেন প্রফুল্ল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অত্য ঘনিষ্ঠ এই বিজেপি নেতা।
সি আর পাতিল
বর্তমানে গুজরাট বিজেপির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন সি আর পাতিল। চলতি বছর জুলাইতেই এই গুরু দয়িত্ব গ্রহণ করেছেন প্রাক্তন এই পুলিশকর্তা। আদি নিবাস মহারাষ্ট্রের জদলগাঁও-তে হলেও বর্তমানে থাকেন গুজরাটেই। দায়িত্ব পেয়েই গুজরাটে গেরুয়া দলের সাংগঠনিকস্তরের বেশ কয়েকটি বড় বদল এনেছেন পাতিল। পরের বছর ডিসেম্বরে গুজরাটে ভোট। সিআর পাতিলের নেতৃত্বেই ‘মডেল’ রাজ্যে জয় ছিনিয়ে আনতে মরিয়া পদ্ম ব্রিগেড।
এছাড়াও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পুরুষোত্তম রূপালা, গুজরাটের কৃষি মন্ত্রী আরসি ফালদু-র নামও গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর হওয়ার দৌড়ে ছিলেন। পতিদাররা আগে থেকেই তাঁদের সম্প্রদায় থেকে কোনও নেতাকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর করার দাবি জানিয়েছিলেন। ফলে মুখ্যমন্ত্রী বাছতে বহু সমীকরণকে মাথায় রাখতে হয়েছিল কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বকে।
সেই সমীকরণকে সাজাতে গিয়ে দলের কম গুরুত্বপূর্ণ বিধায়ক হিসেবে ভূপেন্দ্র যাদবে সিলমোহর বসিয়েছেন শাহ-নাড্ডারা। উপলক্ষ্য একটাই দিল্লি থেকে রিমোট কন্ট্রোলে গুজরাত সরকার পরিচালনা। এমনটাই সমালোচনা বিরোধী শিবিরের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন