রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র বিরুদ্ধে দলের রাজ্য দফতরের সামনেই পোস্টার পড়েছিল। এরাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক ও সহপর্যবেক্ষকের বিরুদ্ধে বিজেপির একাংশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। সূত্রের খবর, জুলাইতেই দলের সাংগঠনিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে রাজ্য নেতৃত্বেও পরিবর্তন হতে পারে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায় ছিলেন 'হরিহর আত্মা'। দেখা গিয়েছে, যখন দলীয় রাজনীততে এরাজ্যে মুকুল রায় কোনঠাসা হয়ে পড়তেন তখনই বাংলায় ছুটে আসতেন কৈলাস। তারপর কোনও রাজনৈতিক মঞ্চে কৈলাস সরাসরি মুকুল রায়কে প্রশংসায় ভরিয়ে দিতেন। মুকুলকে 'চানক্য' সম্বোধন তো ছিলই তাঁর গলায়। তাছাড়া মুকলের নেতৃত্বই এরাজ্যে মমতা সরকারকে উৎখাত করতে পারবে, এমন কথাও শোনা গিয়েছে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের বক্তব্যে। বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ কৈলাস ও মুকুলের গুজুর-গুজুর ফুসুর-ফুসুর নিয়ে রীতিমতো তোপ দেগেছেন। রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায় তো রীতিমত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিয়ে দলীয় সংগঠনের সংকট ও নিরনের কথা জানিয়েছেন। রাজ্যের কেন্দ্রীয় পর্যবক্ষেক হিসাবে কৈলাসকে সরিয়ে দিতে পারে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, সামনের জুলাইতে এই সাংগঠনিক পরিবর্তন হতে পারে। নতুন সহপর্যবেক্ষকও নিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন- Bengal Partition: পৃথক রাজ্যই পদ্মবনের কাঁটা, এক রা শুভেন্দু-দিলীপের
বাংলায় খারাপ ফল হওয়ার পর বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বও প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে। বেশ কয়েকটি জেলার সভাপতিদের সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে দলের অভ্যন্তরে। দলের একাংশের বক্তব্য, নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পরপরই রাজ্য সংগঠনে পরিবর্তন করলে বেমানান মনে হতে পারে তাই তা হয়নি। তবে এবার রাজ্য সভাপতি পদেও নতুন মুখ আসতে পারে। সূত্রের খবর, জুলাইতে সেই ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দলের একাংশ মনে করে, দিলীপ ঘোষের সময়কালেই রাজ্য বিজেপি লোকসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাল ফল করেছে। বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের অতিরিক্ত গুরুত্ব দেয় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্য ও স্থানীয় স্তরে তাঁদের নিয়ে বেশি লাফালাফি করায় ফল এতটা খারাপ হয়েছে বলেও দলের একাংশের দাবি।
এরাজ্যে এই মুহূর্তে বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে রয়েছেন মাত্র একজন, কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। মুকুল রায়কে সর্বভারতীয় সহসভাপতি করায় ভারে ওজন বেড়েছিল রাজ্য বিজেপির। দল ত্যাগ করায় আপাতত এরাজ্য থেকে কে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পায় তা-ও দেখার।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন