ভোটমুখী কেরলে রক্তক্ষরণ অব্যাহত কংগ্রেসের। নেতৃত্বের অভাব এবং দলীয় কোন্দলের অভিযোগ তুলে দল ছাড়লেন গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ প্রবীণ নেতা পিসি চাকো। আসন সমঝোতা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মূলত প্রাক্তন সাংসদ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমনটাই সুত্রের খবর। জানা গিয়েছে, তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী এবং সাংসদ রাহুল গান্ধীকে। সংবাদমাধ্যমকে চাকো বলেছেন, ‘কেরলে কোনও জাতীয় কংগ্রেস নেই। একটা কংগ্রেস (আই) আর একটা কংগ্রেস (এ)। দুটি দলের কো-অর্ডিনেশন কমিটি। গোষ্ঠীকোন্দলে দীর্ণ একটা দল।‘ জানা গিয়েছে, ভোটমুখী কেরলে এখন কংগ্রেসের এখন দুটি বিবাদমান গোষ্ঠী। একটা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমেন চ্যান্ডির আর একটা তাঁর বিরোধী গোষ্ঠী রমেশ চেন্নিথালার।
এই প্রসঙ্গে চাকোর অভিযোগ, ‘মানুষ কংগ্রেসকে রাজ্যে ক্ষমতায় ফেরাতে চায়। কিন্তু গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বড় প্রতিবন্ধকতা। এ নিয়ে আমি বরাবর সরব হলেও নির্বিকার হাইকমান্ড।'
এদিকে, রাহুল দিল্লি ফিরতেই ভাঙন শুরু কেরল কংগ্রেসে। শুধু তাই নয় কেরল প্রদেশ কংগ্রেসে বড়সড় ফাটল দেখা দিয়েছে খোদ রাহুল গান্ধীর লোকসভা কেন্দ্র ওয়েনাডে। সেই জেলার প্রায় ৪ জন কংগ্রেস নেতা দলের প্রাথমিক সদস্যপদ ছেড়েছে। ভোটমুখী দক্ষিণের এই রাজ্যে নেতৃত্বের বিবাদে বেশ ব্যাকফুটে কংগ্রেসের হাইকমান্ড। জানা গিয়েছে, গত এক সপ্তাহে যারা দল ছেড়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কেরল প্রদেশ কংগ্রেসের সচিব এম বিশ্বনাথন, ওয়েনাড জেলা কমিটির সচিব অনিল কুমার, কেরল প্রদেশ কমিটির কার্যকরী কমিটির সদস্য কেকে বিশ্বনাথ আর কেরল মহিলা কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক সুজয়া বেনুগোপাল।
স্পষ্টতই হেভিওয়েটদের দল থেকে ইস্তফার প্রভাব যাতে ভোট প্রস্তুতিতে না পড়ে তাই বিদ্রোহ দমনে উদ্যোগী হাইকমান্ড। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে সমঝোতার বার্তা দিয়ে কেরলে পাঠানো হয়েছে দূত হিসেবে। জানা গিয়েছে, এম বিশ্বনাথ প্রার্থী তালিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে দল ছেড়েছেন। প্রার্থী বাছাইয়ে সামাজিক ন্যায় নিশ্চিত করেনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এই অভিযোগ তুলেছেন তিনি। ওয়েনাড জেলা কমিটির সভাপতি আর বিধায়ক একই লোক। বহুবার আমি এই নিয়ে সরব হলেও, কেউ কানে কথা তোলেনি। এমন দাবি করেছেন ওই পদত্যাগী নেতা। এদিকে, কংগ্রেসের এই ঘরোয়া কোন্দল থেকে লাভ তুলতে উদ্যোগ নিয়েছে সে রাজ্যের প্রধান শাসক দল সিপিএম। পদত্যাগীদের যথাযথ সম্মান দিয়ে পার্টির সদস্য করা হবে। এমন বার্তা পাঠিয়েছেন বিজয়ন-বালকৃষ্ণরা।
এদিকে, বিশ্বনাথ দল ছাড়ার সঙ্গেই সিপিএম নেতা ইএম শঙ্করন কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। সুত্রের খবর, দু’জনেই কুরুমা সম্প্রদায়ভুক্ত। তাই কংগ্রেস শঙ্করনের প্রস্তাব লুফে নিয়েছে। এদিকে, বিদ্রোহ প্রশমনে মরিয়া কংগ্রেসের তরফে কেরল প্রদেশ কংগ্রেসের সচিব কেপি অনিল কুমার বলেছেন, পদত্যাগীদের দলে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া নেতৃত্ব। সাময়িক ভুল বোঝাবুঝি দূরে সরিয়ে আমরা ভোটের আগে ঘুরে দাঁড়াবো।