মালদ্বীপে নির্বাচনের আর মাসখানেক মাত্র বাকি, এই অবস্থায় ভারত-মালদ্বীপ সম্পর্কে আরও অবনতি ঘটাল বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর টুইট, যাতে তিনি লিখেছেন, ভারত মহাসাগরের ওই দ্বীপে কোনরকম নির্বাচনী "কারচুপি" হলে ভারতের উচিত দেশটিকে "আক্রমণ" করা।
মালদ্বীপের বিদেশ সচিব আহমেদ সারির গতকাল ভারতের হাই কমিশনার অখিলেশ মিশ্রকে ডেকে পাঠিয়ে স্বামীর টুইট সম্পর্কে তাঁর দেশের "অসন্তোষ" ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি মালদ্বীপ সরকারের পক্ষ থেকে ভারত সরকারকে একটি 'দেমার্শ' বা কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে প্রতিবাদ লিপি দেওয়া হয়েছে।
সারির এবং মিশ্রর সাক্ষাৎ হয় সকাল এগারোটা নাগাদ, মালদ্বীপের বিদেশ মন্ত্রকে, যেখানে তার পর পরই সাতটি দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এক বৈঠকে সেদেশের সরকারের তরফ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বরের নির্বাচন সম্পর্কে জানানো হয়।
২৪ অগাস্টের টুইটে সুব্রহ্মণ্যম স্বামী মালদ্বীপের একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের লিঙ্ক দিয়েছিলেন, যাতে তাঁর সঙ্গে গত সপ্তাহে সেদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ নাশিদের সঙ্গে কলম্বোয় সাক্ষাতের বিবরণ রয়েছে।
স্বামীর টুইট নিয়ে একটি প্রশ্নের উত্তরে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক আধিকারিক রবিশ কুমার জানিয়েছেন, "ডাঃ স্বামী টুইটে তাঁর নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেছেন। তার সঙ্গে ভারত সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।" দিল্লির এক সূত্রের খবর অনুযায়ী, ঠিক এই কথাই মিশ্রও সারিরকে জানিয়েছেন।
এর আগে ২২ অগাস্ট আরেকটি টুইট করে স্বামী লিখেছিলেন, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি নাশিদ তাঁর কাছে মালদ্বীপের নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এবং ভারতের উচিৎ প্রতিবেশী রাষ্ট্রে যাতে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তা নিশ্চিত করা। "আমাদের দরকার একটা অ্যাকশন প্ল্যান," ছিল স্বামীর বক্তব্য। তিনি আরও বলেন, "বর্তমান দখলদার" মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি আবদুল্লা ইয়ামিন "ভারতীয়দের অপদস্থ" করেছেন।
দিল্লির ভূমিকা নিয়ে মালদ্বীপে সংশয় ঘনীভূত হয়েছে সেইদিন থেকেই, যেদিন ভারত মালদ্বীপে নির্বাচন ঘোষণা করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলে, সেদেশের সংসদ এবং বিচার ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিকভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এই প্রেক্ষিতে স্বামীর টুইট মালদ্বীপের কাছে ভারতের শাসক দলের "উস্কানিমূলক" বার্তা নিয়ে এসেছে বলে দিল্লির সূত্রের খবর।
ভারত-মালদ্বীপ সম্পর্কের অবনতি ঘটতে শুরু করেছে বেশ কিছুদিন, বিশেষ করে এবছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে, যখন ইয়ামিন ৪৫ দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন, ভারতে সরকারের সংযত থাকার বার্তা উপেক্ষা করে।
রবিবার স্বামী এই নিয়ে আরেকটি টুইট করে জানতে চান, কেন মালদ্বীপ সরকার তাঁর আগের টুইট নিয়ে এতটা ক্ষুব্ধ, এবং বলেন সেদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের সুরক্ষা আমাদের কর্তব্য।