বুধবারই কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। হারালেন তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ শশী থারুরকে। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছিলেন থারুর। কিন্তু, বড় ব্যবধানে জিতেছেন খাড়গে। কারণ, গান্ধী পরিবারের হাত ছিল তাঁর মাথায়। বকলমে তিনিই ছিলেন এই নির্বাচনে গান্ধী পরিবারের প্রতিনিধি। যদিও, এবারের সভাপতি নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে কংগ্রেস গণতন্ত্রের বার্তা দিতে চেয়েছে। যদিও তা নিয়ে কম কটাক্ষ করেননি বিরোধীরা। সমালোচকদের ধারণা, আর খুব একটা বেশিদিন লাগবে না। শীঘ্রই বছর ৮০-র খাড়গেকে কঠিন বাস্তবের মুখে পড়তে হবে।
তিন বছর হয়েছে গত লোকসভা নির্বাচন হল। গতবার, অর্থাৎ ২০১৯-এর কথা বাদ দিলে খাড়গে নির্বাচনে কিন্তু বরাবর জিতেই এসেছেন। সেজন্য অনুগামীদের থেকে কন্নড় ভাষায় অপরাজিত নেতা বা 'সোলিল্লাদা সারদারা' উপাধিও পেয়েছেন। এবার অবশ্য তাঁর জয় প্রত্যাশিত ছিল। কারণ, দলের হাইকমান্ডের সমর্থন তাঁর দিকেই ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। অন্তর্দ্বন্দ্বে নাজেহাল এআইসিসি নেতৃত্ব জোট বেঁধে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে, যে সমস্যাগুলো কংগ্রেসে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৈরি করেছিল, সেগুলো কিন্তু মিটে যায়নি। আর, সেগুলোই খাড়গের কাছে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ।
এই পরিস্থিতিতে যা চলছে, চলুক। এই মনোভাব বজায় রেখে খাড়গে সমস্যাগুলো এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। আবার সমস্যা মোকাবিলায় ঝাঁপিয়েও পড়তে পারেন। এজন্য প্রথমে তাঁকে দলের জনবিচ্ছিন্নতা দূর করতে হবে। নির্বাচনে জয়লাভের দিকে দলকে এগিয়ে দিতে হবে। আড়াই দশকে এই প্রথম কোনও অ-গান্ধী ব্যক্তিত্ব কংগ্রেসের সভাপতি হলেন। একে কোনও সাইড শো-এর তকমা দিয়ে উপেক্ষা করা যাবে না।
আরও পড়ুন- ১৪৩ বছরে পঞ্চম উষ্ণতম, ব্যাপকহারে কমল মেরুর বরফ, আশঙ্কায় আবহাওয়াবিদরা
তবে তাতে আদৌ কোনও কাজ হবে কি? কারণ, ব্রিটেনের লেবার পার্টি সম্পর্কে প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার গতবছর এক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছিলেন। তা হল, 'নেতা বদলের মাধ্যমে দল পুনরুজ্জীবিত হবে না। এর পুনর্গঠন দরকার। তার চেয়ে কমে কিছু হবে না।' ব্লেয়ারের সেই মন্তব্য যেন খাড়গে আর কংগ্রেসের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে খাড়গের সামনে।
শতবর্ষ প্রাচীন কংগ্রেস তার পুরোনো পদ্ধতিতে কাজ চালিয়ে যেতে পারবে না। যদিও দল তার অতীত সম্পর্কে নস্ট্যালজিক। কিন্তু, সত্যটি হল যে কংগ্রেসকে এখন ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে। তাদের মনে জায়গা করে নিতে হবে। কারণ, অতীতে ভর করে বাঁচা যায় না। তাই বর্তমানে কংগ্রেসের রাজনৈতিক বার্তা হবে তাজা। তার ব্যবস্থাপনা হবে উদ্ভাবনী। এই প্রসঙ্গে অনেক কংগ্রেস নেতা মনে করেন যে হিন্দুত্ব, অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং জাতীয়তাবাদের প্রেক্ষাপটে সংখ্যালঘুদের সম্পর্কে প্রশ্ন, এই সব ব্যাপারে দলের অভ্যন্তরে আদর্শগত স্পষ্টতার অভাব আছে। কারণ, এই ব্যাপারে গভীরভাবে দল বিভক্ত।
Read full story in English