বালেশ্বর যেন মৃত্যুপুরী। শুক্রবার সন্ধ্যায় এখানেই ঘটে গিয়েছে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বৃহৎ রেল দুর্ঘটনা। নিহত ২৭৫, আহত হাজারের বেশি। দেশের লাইফ-লাইনের এই হতশ্রী অবস্থায় দেশজুড়ে হাহাকার। এই পরিস্থিতে রেলের প্রতি মোদী সরকারের কাজ নিয়ে সোচ্চার কংগ্রেস। রেলের পরিকাঠামো, অপ্রতুল কর্মীসংখ্যা সহ নানাবিধ প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি লিখে জবাবদিহি দাবি করলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।
চারপাতার চিঠিতে খাড়গে বলেছেন, 'ক্রমাগতভাবে একাধিক ত্রুটিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে রেলে ভ্রমণ করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে, ফলে দেশবাসীর সমস্যা আরও বেড়েছে।'
সমস্যার কথা অস্বীকার করায় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণকে নিশানা করে খাড়়গের প্রশ্ন, কেন বালেশ্বর দুর্ঘটনার তদন্তভার সিবিআই-কে দেওয়া হল? চিঠিতে তিনি লিখেছেন, 'সিবিআই অপরাধের তদন্ত করে থাকে, রেল দুর্ঘটনার নয়। সিবিআই, বা অন্য কোনও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রযুক্তিগত, প্রাতিষ্ঠানিক এবং রাজনৈতিক ব্যর্থতার জন্য জবাবদিহি কী হবে তা ঠিক করতে পারে না। এছাড়াও রেলের নিরাপত্তা, সিগন্যালিং ব্যবস্থা এবং রক্ষণাবেক্ষণ অনুশীলনে প্রযুক্তিগত ক্ষমতা বিচারের দক্ষতা এইসব তদন্তকারী সংস্থার নেই।'
আরও পড়ুন- ফের রেল দুর্ঘটনা ওড়িশায়, লাইনচ্যুত হয়ে তালগোল পাকিয়ে গেল কামরা
বালেশ্বর দুর্ঘটনাকে 'ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপগুলির মধ্যে একটি' বলে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী লেখা চিঠিতে খাড়গে বলেছেন, 'আরও কার্যকর, উন্নত এবং দক্ষ করার পরিবর্তে রেলের সঙ্গে সঙ্গে সৎ মায়ের মত আচরণ করা হচ্ছে।'
রীতিমত অডিটর ও কম্পট্রোলার জেনারেলের অডিট রিপোর্ট তুলে ধরে খাড়গে লিখেছেন যে, '২০১৭-১৮ থেকে ২০২১-২২ সালের মধ্যে ভারতে তিন-চারটি বড় লাইন বিচ্যুতির ঘটনা ঘটেছে। তাও কেন সেই লালসঙ্কেত উপেক্ষা করা হল?'
আরও পড়ুন- উদ্ধারের আড়ালে অবাধে লুঠ দুর্ঘটনাগ্রস্ত করমণ্ডলে, ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সাক্ষী জিয়াদুল!
রেলে বিপুল শূন্যপদ। কেন? প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস সভাপতির কড়া প্রশ্ন- 'কেন ভারতীয় রেলে তিন লক্ষের বেশী পদ খালি? সিনিয়র পদের ক্ষেত্রেও একই উদাসীনতা এবং অবহেলার চিত্র। যেখানে প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং মন্ত্রিসভা কমিটি উভয়ই নিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাহলে কেন গত ৯ বছরে এত বেশি সংখ্যক শূন্যপদ পূরণ করা হয়নি?'
ওড়িশার তিন ট্রেনের দুর্ঘটনাকে 'চোখ খুলে দেওয়া' বলে দাবি করেছেন মল্লিকার্জুন খাগড়ে। বলেছেন, রেলমন্ত্রীর 'নিরাপত্তা'র আসল হাল কী তা বোঝাই যাচ্ছে। দেসের লাইফ-লাইন রেলের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকারকে পদক্ষেপ করতে অনুরোধ করেছেন।