বুধবার বিকেল সওয়া পাঁচটা নাগাদ আতমকাই রাজভবনে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে প্রায় এক ঘন্টা বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর সন্ধ্যা সওয়া ছ'টা নাগাদ রাজভবন ছেড়ে বেরিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্য সরকারের সম্পর্ক কার্যত তলানীতে। এই পরিস্থিতে ভোটের আগে রাজভবনে এদিন রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যবাহী।
রাজ্যপাল-নবান্ন সঙ্ঘাত চরমে। করোনা মোকাবিলা থেকে আমফান দুর্নীতি, কেন্দ্রীয় সামাজিক উন্নয় প্রকল্প রাজ্যে লাগু না করা, বাংলার আইন-শৃঙ্খলা, বহিরাগত বিতর্ক সহ নানা ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যপাল। প্রায় নিয়ম করেই মমতা সরকারকে বিরুদ্ধে কটাক্ষ ছুড়ে দেন তিনি। এদিনও রাজ্যের কৃষকদের দুরাবস্থার জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন ধনকড়। কোলাঘাটে রাজ্যপাল অভিযোগ করে বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সংবিধান মেনে কাজ করছেন না।’
রাজ্যপালের এই তোপ ঘিরেই মুখ্যমন্ত্রী সহ শাসক দলের সঙ্গে তার বিরোধ তুঙ্গে। রাজ্যপাল তাঁর পদের অপব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের। তাঁকে 'কেন্দ্রীয় শাসক দলের প্রতিনিধি' বলে নিশানা করে জোড়াফুল শিবির। সম্প্রতি রাজ্যপালের অপসারণ চেয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে ৬ পাতার স্মারকলিপি দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। জগদীপ ধনকড় রাজ্যপাল পদে থেকে সাংবিধানিক সীমারেখা লাগাতার লঙ্ঘন করছেন বলে অভিযোগ শাসক দলের।
ফলে রাজ্য-রাজ্যপাল সঙ্ঘাত চরমে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ যথেষ্ট তাৎপর্যবাহী বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে, নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর রাজভনে যাওয়ার বিষয়টি নেহাতই 'সৌজন্যমূলক'।
সম্প্রতি রাজ্য মন্ত্রিসভার দুই সদস্য শুভেন্দু অধিকারী ও লক্ষ্ণীরতন শুক্লা মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন। শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। লক্ষ্ণীর জানিয়েছেন তিনি ক্রিকেটের জগতে ফের ফিরতেই রাজনীতি থেকে সাময়িক অব্যাবহতি নিচ্ছেন। সূত্রের খবর, রাজ্য মন্ত্রিসভার এই দুই ফাঁকা পদ পূরণে তৎপর মুখ্যমন্ত্রী। তাই নতুন মন্ত্রীদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান কবে হতে পারে তারই আলোচনায় এদিন রাজ্যপালের সঙ্গে রাজভবনে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন