সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে সুর চড়িয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। নয়া আইনকে বিজেপির দেশভাগের 'ষড়যন্ত্র' বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। এবার সিএএ বিরোধিতায় নিজের ব্যক্তিগত পরিসরের অভিজ্ঞতাকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানালেন, ভাইপো অভিষেকের স্ত্রী পাঞ্জাবি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর অবিবাহিত অবস্থার পদবী জানেন না মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনে বহু কর্মী কাজ করা সত্ত্বেও কখনও তাঁদের পদবী জানতে চান না বলেও এদিন জানান মমতা। 'মানবিক সম্পর্কে পদবী কোনও অন্তরায় নয়' বলে দাবি করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?
সিএএ বিরোধিতায় রাজ পথে ধর্না দিচ্ছে রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠন। প্রায়ই নিয়ম করে সেই মঞ্চে উপস্থিত থাকছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বৃহস্পতিবারও রাণি রাসমণির ধর্নামঞ্চে হাজির হন নেত্রী। সেখান থেকেই সিএএ, এনআরসি, এনপিআরকে গেরুয়া শিবিরের 'বিভেদ রাজনীতির হাতিয়ার বলে' সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, 'মানবিক সম্পর্কে পদবী কোনও অন্তরায় নয়'। এরপরই নিজের ব্যক্তিগত পরিসদের উদাহরণ তুলে তিনি বলেন, 'আমি জানি অভিষেকের (ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল সাংসদ যিনি সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো) স্ত্রী পাঞ্জাবি। কিন্তু, আমি ওর অবিবাহিত অবস্থার পদবী জানি না। জানার প্রয়োজনও নেই। বহু মানুষ রাজ্য প্রশাসনে কাজ করেন। আমি কখনই তাদেরও পদবী জানতে চাই না।'
এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর কথায় ভারতের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরম্পরায় কথা উঠে আসে। তিনি বলেন, 'যখন দেখি সাম্প্রদায়িক সম্প্রতীতির পরম্পরা থেকে দেশ বিচ্যূত হচ্ছে তখন তা আমাকে পীড়া দেয়।'
সিএএ, প্রস্তাবিত এনআরসি বাংলায় লাগু হবে না বলে ঘোষণা করে তৃণমূল সরকার। বন্ধ করা হয়েছে এনপিআরের কাজ। কেন্দ্রের জনবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে দেশবাসীকে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন মমতা। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, 'ভারতকে ঐক্যবদ্ধ করে তুলেছিল বাংলা।' পদ্ম শিবিরকে বিঁধে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ভারতের সব বড় বড় আন্দোলনের শিকড় এই বাংলা। এই রাজ্য দেশকে জোটবদ্ধ করেছে।'
আরও পড়ুন: মমতা-মোদী সাক্ষাৎ, কী বলছেন সংখ্যালঘু নেতারা?
এরপরই গঙ্গাসাগর মেলার সাফল্যের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্র এই সফলতা নিয়ে নীরব কেন তা নিয়েও ধর্না মঞ্চ থেকে প্রশ্ন তোলেন মমতা। তাঁর কথায়, 'পঞ্চাশ লক্ষ পূন্যার্থী এসেছিলেন গঙ্গাসাগরে। কিন্তু, একটাও অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটেনি। মেলায় ৪০টা শিশুর জন্ম হয়েছে। প্রত্যেক নবজাতক ও তাদের মা ভালো রয়েছেন, নিরাপদে বাড়ি ফিরেছেন তারা। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু, কেন্দ্র এই সাফল্য নিয়ে একটাও কথা বলেনি।'
এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদে পুনরায় নির্বাচিত হয়েই মমতা সরকারকে নিশানা করেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, 'দেশদ্রোহীদের আখড়া বাংলা।' ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্যই অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে এরাজ্যে। এক্ষেত্রে তাঁর তির যে জোড়াফুল শিবির তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
Read the full story in English