Advertisment

মাস্টারস্ট্রোক মমতার, এবার ভোটে নন্দীগ্রামের প্রার্থী তৃণমূল সুপ্রিমো

'আমি নন্দীগ্রামকে ভালো বাসি। সব সময় মনে রাখবো। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামকে কেউ ভুলতে পারি না। আমি বার বার আসব। নন্দীগ্রাম আনার জন্য লাকি জায়গা।'

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

নন্দীগ্রামের মাটি থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের রাজনৈতিক উত্থানের শুরু। সেই নন্দীগ্রামের মাটিতেই পাঁচ বছর পর পা দিয়ে বড় ঘোষণা করলেন মমতা। আবেগ চেপে রাখতে না পেরে জানিয়ে দিলেন, এবার ভোটে নন্দীগ্রামের প্রার্থী হচ্ছেন তিনি নিজেই। একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাঁর পূর্ববর্তী নির্বাচনী আসন ভবানীপুরে এবার ভোলে প্রার্থী দেবে তৃণমূল।

Advertisment

নন্দীগ্রাম আন্দোলন কার? বিগত কয়েক মাস ধরে তৃণমূল ও শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে তা নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। এদিন তৃণমূল সুপ্রিমোর এ প্রসঙ্গেও কড়া বার্তা দিয়েছেন।

২০০৭ পরবর্তী অধ্যায় নন্দীগ্রামের সব সভায় তৃণমূল নেত্রীর পাশে ছিলেন কাঁথির অধিকারী পরিবারের সদস্যরা। পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। শুভেন্দু এখন বিজেপিতে। শিশির অধিকারী দলের জেলা চেয়ারম্যান থাকলেও ডানা ছাঁটা হয়েছে তাঁর। এই প্রথম অধিকারীদের কেউই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ছিলেন না। পূর্ব মেদিনীপুরের শাসক দলের দলীয় সংগঠনেও বদল হয়েছে। অধিকারী পরিবারের ঘনিষ্টদের তৃণমূলের সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতে ভোটের আগে এদিন নন্দীগ্রামের মমতার সভার রাজনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম।

কী বলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?

* 'এই জায়গার নাম তেখালি। এখানে কত ঘটনা ঘটেছে আপনারা জানেন। এই তেখালিতেই গুলি চলেছিল। আমার গাড়িতেও ২-৩টে গলি লেগেছিল। ১৪ মার্চ গুলি চলল। আমি অনশন করেছিলাম ২৬ জদিন। জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আমার অনশনের ফলে ভারত সরকার আইন বদলেছিল।'

* 'বিভিন্ন জায়গা থেকে নন্দীগ্রামে ঢুকতে আমাকে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমাদের ফিরে যেতে বলা হয়েছিল। কোলাঘাটে বলেছিল পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেবে। তৎকালীন রাজ্যপাল আমাকে ফোন করে ফিরে আসতে বলেছিলেন। কিন্তি আমি ফিরে যাইনি। বাঁশ টপকে নন্দীগ্রামে ঢুকেছিলাম।'

* 'কে নন্দীগ্রাম আন্দোলন করেছে, তা নিয়ে আমি কারোর কাছে জ্ঞান নেবো না। সেইসব দিন আমরা দেখেছি। কীভাবে জ্যান্ত মানুষগুলোকে হত্যা কর হল। নন্দীগ্রামের আত্মিক টান ছিল-আছে থাকবে। ভুলতে পারি নিজের নাম। ভুলবো না নন্দীগ্রাম। এটা নিয়ে আমার বই আছে। আজ নন্দীগ্রাম অনেক উন্নত হয়েছে। কৃষাণ মান্ডি হয়েছে।'

* 'আমি বেচে থাকবে বাংলাকে বিক্রি করতে দেব না। এমনকি সার্ভে রিপোর্ট হয়েছে। কেউ কেউ সার্ভে রিপোর্ট উল্টে দিয়েছে। ফেকধারীর বাংলায় নাটক করছে। বিজেপির কোটি কোটি গ্রুপ আছে। মিথ্যা-অপপ্রচার করে। বিজেপিতে মালপোয়া আছে, দানাদারে গ্রুপ আছে। টাকা দিয়ে লালকে সাদা আর সাদাকে কালো করে।'

* 'কেউ কেউ ইধার উধার করছে। আমি ওদের বিরুদ্ধে লড়ব না। ওদের বিরুদ্ধে লড়বে ছাত্র-যুবরা। লড়বে সুপ্রকাশ গিরিরা। আগে এদের বিরুদ্ধে লড়াই কর। তারপর বাংলাকে হারাবে। তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মদিনেও তোমরা ছিলে না। কেউ কেউ তোমরা যেতেই পার। এটা তোমাদের স্বাধীনতা। রাজনীতিতে তিন ধরনে লোক হয়। লোভী, ভোগী আর ত্যাগী। যারা ত্যাগী তারা কোথাও যাবে না। আরেকদলের অনেক সম্পত্তি রয়েছে, টাকা রয়েছে। সেই টাকা রক্ষা করার জন্য। বিজেপি ওয়ার্শিং মেশিন। কালো হয়ে ঘুরবে সাদা হয়ে বেরিয়ে আসবে। তোমরা ভালোটা বেছে নিয়েছে।'

* 'আমি নন্দীগ্রামকে ভালো বাসি। সব সময় মনে রাখবো। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামকে কেউ ভুলতে পারি না। আমি বার বার আসব। নন্দীগ্রাম আনার জন্য লাকি জায়গা। ২০১৬ সালে আমি নন্দীগ্রাম থেকেই প্রচার শুরিু করেছিলাম। ২০২১ সালেও এখান থেকেই প্রচার শুরু করলাম। সব আসনে তৃণমূল প্রার্থীরা জিতবেন।'

* 'আমি যদি এখান থেকে প্রার্থী হই কেমন লাগবে? ভাবছিলাম, এবার বলেই ফেললাম। আমি ঘোষণা করছি এবার নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হব আমিই। আমি ভোটের সময় বেশি সময় দিতে পারব না। আপনারা কাজটা করে দেবেন।বক্সিকে বলব নন্দীগ্রামে যেন আমার নামটা থাকে। তারপর আমি দেখবো। এইরকম দল দেখেছেন যে ভালোবাসার টানে আমি ছেড়ে যেতে পারলাম না।'

* 'আমি ভবানীপুরকেও ভালোবাসি। ওখানেও আমি ভালো প্রার্থী দেব। পারলে দু'জায়গাতেও দাঁড়াবো। কিন্তু, জানবেন নন্দীগ্রামে দাঁড়াচ্ছিই।'

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc Mamata Banerjee nandigram
Advertisment