বগটুই গণগত্যা থেকে হাঁসখালি গণধধর্ষণ ও মৃত্যু উদাহরণ টেনে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব বাম-বিজেপি সহ বিরোধিরা। বাংলার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ভোট পরবর্তী হিংসা সহ উল্লেখিত দুটি মামলারই তদন্ত করছে সিবিআই। যা নিয়ে পাল্টা রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকেই নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প সরবরাহ অনুষ্ঠানে বিরোদীদের 'কুৎসা' নিয়ে তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি উন্নয়ের খতিয়ান পেশ তিনি বলেন, 'আমরা যেটা বলি সেটা করি। অন্যেরা সেটা করে না। বরং কুৎসা করে। আমারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার করি আর ওরা করে কুৎসার ভাণ্ডার।'
বাংলায় সম্পতি একাধির ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে। নির্যাতিতাদের মৃত্যুও হয়েছে। যা নিয়ে সোচ্চার বিরোধী শিবির। পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তাদের। এই প্রসঙ্গেই এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'কোনও ঘটনা ঘটলে পুলিশকে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। কোনও রং না দেখে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এটা উত্তরপ্রদেশ, বিহার নয়। এখানে রং দেখে বিচার হয় না। এখানে শাস্তি হয়।'
নারী নিরাপত্তা থেকে অন্য সবকিছুতেই বাংলার পরিস্থিতি অন্য রাজ্যের তুলনায় ভোলে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে, 'যদি কেউ বলে বাংলায় যেও না, গেলে খুন হয়ে যাবে, আমার খুব গায়ে লাগে। বাংলা অন্য রাজ্যের থেকে অনেক ভাল। উত্তরপ্রদেশে থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ ধর্ষণ করে।'
অপপ্রচার নিয়েও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। বলেন, 'ভুল করলেও শাস্তি হয়। যে দোষ করে তাঁরও যেমন শাস্তি হয়। যে চক্রান্ত করে তাঁরও শাস্তি হয়। আবার কেই ভুল ভুয়ো ভিডিয়ো করে, ভুল তথ্য দেয়, আইন অনুযায়ী তাঁরও শাস্তি হতে পারে। এক বারও তো বলছেন না, মাধ্যমিক ১২ লক্ষ, উচ্চমাধ্যমিক ১০ লক্ষ পরীক্ষা দিয়েছে। একটিও বাজে ঘটনা দেখাতে পারবেন? আগে তো ছেলেমেয়েদের আলাদা স্কুল ছিল। এখন ছেলেমেয়ে একসঙ্গেই পড়াশোনা করে। সবাই খারাপ এটা ঠিক নয়।'
গত বছর আজকের দিনেই তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বর্ষপূর্তিতে জনপরিষেবার উন্নয়নের সামাজিক প্রকল্পের সংখ্যা আরও বিস্তারের সূচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরের স্টেডিয়াম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০ লক্ষ মহিলার হাতে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে’র প্রাপ্য টাকা তুলে দেওয়ার পাশাপাশি ঘোষণা করলেন, রাজ্যের ১ কোটি ৫১ লক্ষ মহিলা এবার এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত হলেন। প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে হাতে পাবেন ঘরের মহিলারা। তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত মহিলাদের জন্য এই অঙ্ক ১০০০ টাকা।