গণতান্ত্রিক বাধ্যবাধকতার জন্য একজোট হওয়ার সময় এসেছে। দেশ আজ বিপন্ন। সবকটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। টাকার অবমূল্যায়ন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। তেলের দাম ক্রমশ আকাশ ছুঁয়ে ফেলছে। রাজনীতিকদেরও প্রতিমুহূর্তে ভয় দেখানো হচ্ছে। সবকিছুই হচ্ছে বিজেপির নেতৃত্বে। এ জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাত। বৈঠক সেরে এ কথাই বললেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকের সময় চন্দ্রবাবুর প্রায় প্রতিটি কথাতেই সায় দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন, চন্দ্রবাবু বলেন, মমতা দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছেন। সে জন্যই তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত খুবই জরুরি। সংসদের অধিবেশন শুরুর আগেই বিরোধী নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে চান বলেই এখনই সাক্ষাত সেরে গেলেন বলে জানিয়েছেন চন্দ্রবাবু নাইডু।
সোমবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাত করতে কলকাতায় এসেছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা তেলগু দেশম পার্টির প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু। পূর্ব নির্ধারিত সময় বিকাল চারটের কিছু আগেই নবান্নে পৌঁছে গিয়েছেন চন্দ্রবাবু। এদিন তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে নবান্নের দরজায় এসে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্ধ্রপ্রদেশের বিশেষ মর্যাদা দাবি করে বারবার সরব হয়েছিলেন চন্দ্রবাবু। কিন্তু, কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার সে দাবিতে কর্ণপাত করেনি। এরপরই চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে এনডিএ ছাড়ে চন্দ্রবাবুর টিডিপি। এরপরই সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিজেপিকে রুখতে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন দক্ষিণের এই প্রবীণ নেতা। তিনি জানান, অতীতে এনডিএ-তে তিনি যেমন আহ্বায়কের দায়িত্ব সামলেছেন, এবার বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে সবকটি বিরোধী দলকে সঙ্ঘবদ্ধ করার ক্ষেত্রেও তেমন দায়িত্বই তিনি পালন করবেন।
রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের পরই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপি বিরোধী রাজনীতির আরেক মুখ এইচ.ডি. দেবগৌড়ার সঙ্গে দেখা করেন চন্দ্রবাবু। এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করে বৈঠক স্থির করেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। ফলে, এদিনের এই বৈঠক থেকে ২০১৯ সালের লোকসবা নির্বাচনে অ-বিজেপি জোটের সমীকরণ বিশেষ গতি পাবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এছাড়া, মোদী সরকার সিবিআই-এর মতো সংস্থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে বলে দাবি করে অন্ধপ্রদেশে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন চন্দ্রবাবু নাইডু। তাঁর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক তৈরি হলেও এক্ষেত্রে তা সমর্থন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা সরকারও সিবিআই-কে রাজ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে 'না' বলবে বলে ঠিক করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো চন্দ্রবাবুর এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এদিনের বৈঠকে, দুই নেতা-নেত্রীর মধ্যে সিবিআই প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে।