আমি তো তোষণের রাজনীতি করি, তাই ইফতারে যাব। সংখ্যালঘু তোষণের প্রশ্নে সমালোচকদের প্রতি তীব্র কটাক্ষ হেনে সপাট বিবৃতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর কথা মতো মাথা কাপড়ে ঢেকে ইফতার মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এখানেই শেষ নয়, বুধবার ফের রেড রোডে ঈদের নমাজ পাঠে অংশ নিয়ে মমতা বুঝিয়ে দিলেন 'সংখ্যালঘুদের পাশে' তিনি রয়েছেন, সে যতই লোকসভায় আসন সংখ্যা কমে যাক। মমতা শুধু এদিন নমাজে অংশই নেননি, বরং ওই মঞ্চ থেকেই বিজেপিকে নাম না করে নিশানাও করলেন। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে এদিন ফের সুর চড়ালেন মমতা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভয় পাবেন না, ওরা যত ইভিএম কারচুপি করেছে, তত দ্রুতই বিদায় নেবে’’।
বুধবার রেড রোডে ঈদের নমাজ পাঠে অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কেউ খারাপ চাইলেই কিছু হবে না, উপরওয়ালা যা চান সেটাই হয়। অনেকসময়ই সূর্য যখন ওঠে, তার তেজ খুব বেশি থাকে। কিন্তু পরক্ষণেই তা নিস্তেজ হয়ে যায়। ভয় পাবেন না। যেভাবে ওরা দ্রুত ইভিএম দখল করেছে, সেভাবেই দ্রুত ওরা বিদায় নেবে’’। ঈদের নমাজ পাঠে এসে বিজেপির নাম না করে যেভাবে এদিন মুসলিমদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মমতা, তা রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন: ২১শে জুলাইয়ের স্মৃতি উস্কে নয়া আন্দোলনের ডাক মমতার
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে এবার তাক লাগানো ফলাফল করে বিজেপি একাই ৩০০ আসন পার করেছে। পশ্চিমবঙ্গে আসন সংখ্যা ২ থেকে বাড়িয়ে ১৮ করেছে গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে ৩৪ থেকে কমে তৃণমূলের আসন সংখ্যা হয়েছে ২২। লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর মমতা অভিযোগ করেন, ইভিএম কারচুপি করেই জিতেছে বিজেপি। এক্ষেত্রে আধুনিকতম প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তৃণমূলনেত্রী। তাই ইভিএমের বদলে ব্যালট পেপারে ভোট করার দাবি জানিয়ে আন্দোলনে নামারও ডাক দিয়েছেন মমতা।
লোকসভার ফলাফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের যে বিপর্যয় ঘটেছে, এ বিষয়ে কম বেশি এক মত রাজনৈতিক মহলের সব পক্ষই। আর এই বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে মমতা ভরসা রাখছেন তাঁর অতীত জঙ্গি আন্দোলনের অবতার এবং সংখ্যালঘুদের পাশে থাকার লাইনেই।