Advertisment

সিসিডি মালিকের মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে মোদী সরকারকে খোঁচা মমতার

‘‘উনি (সিদ্ধার্থ) যা বলেছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে, বিভিন্ন এজেন্সির হেনস্থার শিকার হয়ে উনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। সে কারণেই সুষ্ঠুভাবে নিজের ব্যবসা চালাতে পারছিলেন না। আর তাই নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি’’।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
mamata, মমতা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

ক্যাফে কফি ডে-র মালিক ভি জি সিদ্ধার্থের মৃত্যুর ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে পরোক্ষে মোদী সরকারকে বিঁধলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন এজেন্সির হেনস্থার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘উনি (সিদ্ধার্থ) যা বলেছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে, বিভিন্ন এজেন্সির হেনস্থার শিকার হয়ে উনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। সে কারণেই সুষ্ঠুভাবে নিজের ব্যবসা চালাতে পারছিলেন না। আর তাই নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি’’।

Advertisment

প্রসঙ্গত, সোমবার হঠাৎই উধাও হয়ে যান সিসিডির মালিক তথা কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণর জামাই সিদ্ধার্থ। বুধবার ভোরে ম্যাঙ্গালোরে নেত্রাবতী নদী থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়। এরপরই সিদ্ধার্থের একটি চিঠি প্রকাশ্যে আসে। সেই চিঠিতে উল্লেখ করা রয়েছে, আয়কর দফতরের আধিকারিকরা তাঁকে চাপ দিচ্ছিলেন, হেনস্থা করছিলেন। চিঠিতে সিদ্ধার্থ লিখেছেন, “সঠিকভাবে একটি লাভজনক ব্যবসায় উন্নীত করতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হচ্ছি। যাঁরা আমার উপর আস্থা রেখেছিলেন তাঁদের হতাশ হতে দেখে আমি খুবই দুঃখিত”। চিঠির একটি জায়গায় সিদ্ধার্থ লিখেছেন, “আমি দীর্ঘ সময় ধরে লড়াই করেছি, তবে এবার হাল ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ, ব্যাক্তিগত অংশীদারীত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার যে চাপ আসছিল তা আমি নিতে পারছি না। ছ’মাস আগে এক বন্ধুর থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ধার নিয়ে সেই লেনদেন মেটানোর চেষ্টা করি। কিন্তু অন্যান্য ঋণদাতাদের তীব্র চাপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে”। সিদ্ধার্থের সেই চিঠির অংশকেই হাতিয়ার করে এবার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন মমতা।

আরও পড়ুন: সিসিডি মালিক ভিজি সিদ্ধার্থের দেহ উদ্ধার

আরও পড়ুন: ‘দিদিকে বলো’, শুনবেন মমতা

ফেসবুকে মমতা লিখেছেন, ‘‘ভি জি সিদ্ধার্থের মৃত্যুর খবরে গভীরভাবে শোকাহত। খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা’’। এরপরই মমতা লেখেন, ‘‘বিভিন্ন সূত্র মারফৎ জানতে পেরেছি, দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ওঁদের মধ্যে কেউ কেউ দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। কেউ অন্যত্র চলে যাওয়ার কথা ভাবছেন। সব বিরোধী দলই ঘোড়া কেনাবেচা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হওয়ার ভয়ে সন্ত্রস্ত’’। ফেসবুক পোস্টে মমতা এও লিখেছেন যে, একদিকে যখন দেশে বেকারত্বের হার ক্রমশ বাড়ছে, আর্থিক বৃদ্ধি ধুঁকছে, সেখানে অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড থেকে বিএসএনএল, এয়ার ইন্ডিয়া থেকে রেল, চিত্তরঞ্জন লোকোমেটিভ ওয়ার্ক থেকে অ্যালোয় স্টিল প্ল্যান্ট, সর্বত্রই বিলগ্নিকরণের দিকে এগোচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের সামগ্রিক আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। সাধারণ মানুষ ভুগছেন।

এরপরই মমতার সংযোজন, ‘‘কৃষি ও শিল্প হল দেশের কর্মসংস্থান তৈরির ভবিষ্যৎ ক্ষেত্র। কিন্তু যদি শিল্প অচল হয়ে পড়ে, তাহলে দেশে কোনও আর্থিক বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান হবে না। ফলে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ কাজ হারাবেন। সরকারের কাছে আমার তাই আর্জি, সুষ্ঠুভাবে কাজ করুন, যাতে সাধারণ মানুষ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করতে পারেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা এজেন্সি যেন দেশের ভবিষ্যৎ নষ্ট না করে’’। ভি জি সিদ্ধার্থের মৃত্যুর ঘটনাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরে এদিন যে ভাষায় মোদী সরকারের সমালোচনায় সরব হলেন মমতা, তা রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের।

Mamata Banerjee
Advertisment