আরও জোরালো হওয়ার পথে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। এবার তিন আইপিএস অফিসাকে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশন সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই আইনজ্ঞদের পরামর্শ নিতে শুরু করেছে নবান্ন।
এদিকে, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকের জন্য আজই স্বরাষ্ট্রসচিবের তরফে নর্থব্লকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজিপিকে। দিল্লিতে শরীরে উপস্থিতির বদলে ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রস্তাব দেয় রাজ্য। জানা গিয়েছে, সেই প্রস্তাবে রাজি হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সম্ভবত আজই বিকেলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লার সঙ্গে ভার্চুয়ালভাবে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করবেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডিজিপি বীরেন্দ্র।
তবে, আইপিএস বদলি ইস্যুতে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইকেই গুরুত্ব দিচ্ছে পশ্চিমঙ্গ সরকার। এক্ষেত্রে শীর্ষ আদালতে গিয়ে কেন্দ্রের আইপিএসদের ডেপুটেশন সংক্রান্ত নির্দেশের উপর আদালতের স্থগিতাদেশ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। আইপিএসদের ডেপুটেশন ইস্যুতে কেন্দ্রীয় প্রাধান্য রুখতেই মমতা সরকারের এই ভাবনা বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ডায়মন্ড হারবারের শিয়াকোলে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূত্রপাত। এ ব্যাপারে রিপোর্ট চেয়ে ১৪ ডিসেম্বর রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে তলব করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। যদিও ওই সময়ে হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লাকে চিঠি পাঠান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে জানানো হয়, এই মুহূর্তে তাঁদের দিল্লি যাওয়া সম্ভব নয়। একইসঙ্গে বলা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে প্রয়োজনীয় রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্য সফরে আগে ফের মুখ্যসচিব ও ডিজিপি-কে তলব করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
এই হামলার সময় তিন আইপিএস অফিসার রাজীব মিশ্র, প্রবীণ ত্রিপাঠি এবং ভোলানাথ পাণ্ডের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তারপরই এই তিন অফিসারকে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনের নির্দেশ দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
এই দুই ক্ষেত্রেই রাজ্যের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ বলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী সরকার যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভাঙছে বলে দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এইসব ইস্যুতে ভোটের আগে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দেন তিনি। এবার তা আইনি পথে মোকাবিলার ভাবনায় নবান্ন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন