রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী সৌজন্য বিনিময়ে নয়া মোড়। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে ভাইফোঁটায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, এ খবর সামনে এসেছিল শুক্রবার। তবে শনিবার রাজ্যপালের কথায় উঠে এল নয়া ঘটনা পরম্পরা। শনিবার বারাসতে তরুছায়া ক্লাবের পুজো উদ্বোধনে এসে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় জানান, ‘‘আমি ও আমার স্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলাম যে আমরা ভাইফোঁটায় ওঁর বাড়িতে যেতে চাই। উনি তখন উত্তরবঙ্গ সফরে ছিলেন। পরে সেখান থেকে ফিরে আমাদের চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেন। এরপর মুখ্যমন্ত্রী আমাদের কালীঘাটে ওঁর বাড়ির কালীপুজোয় আমন্ত্রণ জানান। ওঁর আমন্ত্রণ পেয়ে আমি অভিভূত। আমি ও আমার স্ত্রী কালীপুজোয় ওঁর বাড়িতে যাচ্ছি’’। উল্লেখ্য, শুক্রবারই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছিল, ভাইফোঁটায় রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: ‘মুসলিমদের অন্তর্ভুক্তি করলেই নাগরিকত্ব বিল সমর্থন করবেন মমতা’, বিস্ফোরক দাবি বিজেপি নেতার
এদিকে, বারাসতের ওই পুজোয় রাজ্যপাল উদ্বোধন করায় পুজো কমিটির প্রধান উপদেষ্টা পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে বিতর্ক বাধিয়েছেন বারাসতের পুরপ্রধান সুনীল মুখোপাধ্যায়। রাজ্যপালের প্রতি মমতার দলের নেতাদের বিরূপ মনোভাব কোন চরম পর্যায়ে গেলে এরকমটা ঘটতে পারে, তার ছবি সামনে আসতেই এ নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। আর এই প্রেক্ষিতেই এদিন ওই পুজোর উদ্বোধনের পর রাজ্যপালকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। যে প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়েই একথা বলেন রাজ্যপাল। শেষে জগদীপ ধনকড় এও জানিয়ে দেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে আমি ও আমার স্ত্রী অভিভূত। এর বাইরে অন্য প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার দরকার নেই’’।
মমতার সঙ্গে সস্ত্রীক রাজ্যপাল। ছবি: ফেসবুক।
আরও পড়ুন: ‘আমার আর মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে যা ঘটেছে, তা নিয়ে কখনই মুখ খুলিনি’, ফের বিস্ফোরক রাজ্যপাল
প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ‘হেনস্থা’র ঘটনায় রাজ্যপালের ‘ভূমিকা’ একেবারেই ভাল চোখে দেখেনি শাসক শিবির। যাদবপুর ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের বিক্ষোভে আটক বাবুলকে উদ্ধারে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে বিস্তর জলঘোলা হয়। এরপর সম্প্রতি জিয়াগঞ্জে সপরিবারে শিক্ষক খুনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সরব হন রাজ্যপাল। এ ঘটনাতেও রাজ্যপালের ভূমিকার সমালোচনা করতে মাঠে নামেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। এরপর রেড রোডে পুজো কার্নিভালে তাঁকে অপমান করা হয়েছে বলে সরব হন রাজ্যপাল। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। ক’দিন আগে দুই ২৪ পরগনায় জেলা শীর্ষ কর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতিতে রাজ্যপালের ডাকা প্রশাসনিক বৈঠক ভেস্তে যায়। যে ঘটনায় চরম ক্ষোভপ্রকাশ করেন রাজ্যপাল। দিন দিন যেভাবে রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপাল সংঘাত বাড়ছে, তাতে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর এহেন সৌজন্যমীলক পদক্ষেপ নয়া মাত্রা এনে দিল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।