দিল্লিমুখী মমতা, হতে পারবেন অতীতের মোরারজী?

ফোকাসে রাজধানী। বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসাবে তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা অন্য যে কোনও দলের চেয়ে বেশি, প্রমাণে মরিয়া তৃণমূল।

ফোকাসে রাজধানী। বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসাবে তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা অন্য যে কোনও দলের চেয়ে বেশি, প্রমাণে মরিয়া তৃণমূল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
West bengal govts projects Duare Sarkar gets National Level award

জাতীয় সম্মান পেল ‘দুয়ারে সরকার’।

দিল্লি যাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লক্ষ্য একাধিক। দিল্লি অভিযানের প্রাক্কালে তৃণমূলের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন হয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। তাঁর ঠাসা কর্মসূচি রাজধানীতে। আগামী ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই এগোতে চাইছে তৃণমূল। ২০১৯-এ লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছিল তৃণমূল। এবার তাই বাংলা দখলের পরই কোমর বেঁধে নেমেছে ঘাসফুল শিবির।

Advertisment

সংসদের অধিবেশন শুরু হতেই তৃণমূলের ফোকাস সম্পূর্ণ দিল্লি অভিমুখ। বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসাবে তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা অন্য যে কোনও দলের থেকে বেশি, তা প্রমাণে চেষ্টার কোনও কসুর করছে না তৃণমূল। দিল্লিতে তৃণমূল নেতৃত্বের একাধিক সাংবাদিক বৈঠক, রাজ্যসভায় শান্তনু সেনের ভূমিকা, তাঁকে সাসপেন্ড, দিল্লিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৌত্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফর সবই লাইমলাইটে নিয়ে এসেছে তৃণমূলকে।

আরও পড়ুন- মোদীকে বিঁধে অভিষেকের ছবি সহ টুইট কংগ্রেসের! জোট জল্পনা তুঙ্গে

স্বাধীনতার পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার বা কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের বিরোধিতা করার জন্য নানা সময়ে নানা দিকপাল নেতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। একাধিক নেতৃত্ব একযোগে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁদের আন্দোলনে সারা দেশ কেঁপে গিয়েছিল। তাঁরা ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধীর গদি নাড়িয়ে দিয়েছিলেন, ক্ষমতাচ্যুত করে ছেড়ে ছিলেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, সেই অর্থে দেশে এই মুহূর্তে বিজেপি বিরোধিতা করার মতো আক্রমণাত্মক জবরদস্ত নেতৃত্বের বড্ড অভাব। তৃণমূল নেতৃত্ব সেই শূন্য স্থান পূরণ করতে মরিয়া।

Advertisment

আরও পড়ুন- ‘মোদীজির কাছে হাতজোড় করতে যাচ্ছেন মমতা’, বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ

লালুপ্রসাদ যাদব, মুলায়ম সিং যাদব, মায়াবতী গোবলয়ের নেতাদের সেই দাপট এখন অনেকটাই ম্রিয়মাণ। সাধারণত এই গোবলয়ের ফলাফলের ওপর নির্ভর করে দেশের শাসনভার কার হাতে অর্পিত হবে। এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার একক ক্ষমতায় নিজের রাজ্যে কখনও ক্ষমতায় আসতে পারেননি। বিজু জনতা দলের প্রধান নবীন পট্টনায়েক দীর্ঘ বছর ধরে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী। এনআরসির বিরোধিতা করেও সিএএ বিলে সমর্থন করেছে এই দল। তাছাড়া কোনও সময় তাঁরা কট্টর বিজেপি বিরোধিতা করে না। দক্ষিণের দলগুলি সাধারণত নিজেদের নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে। কংগ্রেস নেতৃত্বের বিজেপি বিরোধিতার সেই ঝাঁজও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বাস্তবের আন্দোলন থেকে নেতৃত্ব টুইট করেই বিরোধিতা বেশি করেন। কেরলে ক্ষমতায় থাকলেও সিপিএমের জাতীয় স্তরে সেই প্রাসঙ্গিকতা নেই। অতএব মোদী বিরোধী নেতৃত্ব এখনও জোরালো নয় বলেই অভিজ্ঞ মহলের ধারণা।

দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই সর্বভারতীয় রাজনীতির ময়দানে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজনৈতিক মহলের মতে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর জাতীয় রাজনীতিতে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করতেই দিল্লি সফরের আগে তাঁকে সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া মোদী-বিরোধী লড়াকু মুখও তেমন কেউ নেই, এটা সার বুজেছেন তৃণমূল নেত্রী স্বয়ং। এখন দেখার বিষয় বিজেপি বিরোধিতায় জোট গঠনে আন্তরিকতা নিয়ে কোন কোন দল শামিল হয়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Mamata Banerjee tmc