আগামী বছর আসন্ন লোকসভা নির্বাচন। যাকে ঘিরে রাজনৈতিক জল্পনা চলছে। তার মধ্যেই ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেডি নেতা নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। সেই জল্পনা আরও উসকে দিয়ে এই বৈঠক নিয়ে তেমন একটা উচ্চবাচ্য করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নবীন পট্টনায়কের মধ্যে কেউই। তৃণমূল সুপ্রিমো যেমন এই বৈঠককে স্রেফ 'সৌজন্য সাক্ষাৎ' বলে এড়িয়ে গিয়েছেন। তেমনই নবীনও। বৈঠক নিয়ে বিজু জনতা দলের শীর্ষ নেতার প্রতিক্রিয়া, কোনও 'গভীর আলোচনা' হয়নি।
তবে জানা গিয়েছে, শুধু তাঁর ওড়িশা সফরে উভয়পক্ষের বৈঠকের মধ্যেই থেমে থাকছে না এই সম্পর্ক। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীকে বাংলায় আমন্ত্রণও জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবীন পট্টনায়েকের 'গোল্ডেন লিডারশিপ'-এর প্রশংসাও তিনি করেছেন। আর, কার্যত তাতেই জোরালো হয়েছে লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে তৃতীয় ফ্রন্টের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা। যদিও তৃতীয় ফ্রন্টের প্রশ্নে মুখ খুলতে চাননি দেশের পড়শি দুই অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
এর আগে মঙ্গলবার তাঁর তিন দিনের সফরে ওড়িশা যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তিনি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দেন। বৃহস্পতিবার তাঁর নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল। সেই অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বরে নবীন পট্টনায়েকের বাড়িতে যান তৃণমূল সুপ্রিমো। সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গী রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম বড় মুখ অরূপ বিশ্বাসও যান নবীন পট্টনায়েকের বাড়িতে।
উভয়পক্ষের মধ্যে বৈঠক শেষে বিজেডি প্রধান, দেশে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো অটুট রাখার পক্ষে সওয়াল করেন। যা কার্যত কেন্দ্রের শাসক দলের বিরুদ্ধেই সুর চড়ানোর শামিল। পাশাপাশি, তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, 'আমাদের দুই রাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার, সুরক্ষা নিয়ে কথা হয়েছে। নবীনজির প্রতি কৃতজ্ঞ। ওঁর গোল্ডেন লিডারশিপ দেখেছি। তিনি অত্যন্ত উঁচুদরের নেতা। ওঁর আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ।' এর আগে দেশের বিভিন্ন অবিজেপি দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্ব একটা ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে বিজেপিকে হঠাতে হবে। তাঁরা নিজেদের মধ্যে এসব ইস্যুতে বৈঠকও করেছেন।
আরও পড়ুন- ‘সবাইকে জেলে ঢোকাচ্ছেন, এত ভয় কীসের?’, মোদীকে কড়া আক্রমণ কেজরিওয়ালের
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই অবিজেপি দলগুলোর নেতাদের দেখা গিয়েছে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে। সঙ্গে সম্প্রতি বারবার প্রত্যেক অবিজেপি দলগুলোর নেতারাই বিজেপির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভঙ্গের অভিযোগও করেছেন। তার মধ্যেই শুক্রবার কলকাতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে কর্ণাটকের সংযুক্ত জনতা দল বা জেডিএস দলের নেতা এইচডি কুমারস্বামীর। ফলে জল্পনা ক্রমশই বাড়ছে।