রেল প্রতারণা মামলায় পুলিশের কাছে হাজিরা দিতে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চরম হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেফতার হবেন, ৮ কোটি টাকা চুরি করেছেন’’, সোমবার এমন বিস্ফোরক দাবিই করেছেন একদা তৃণমূলের ‘সেকেন্ড-ইন-কমান্ড তথা বর্তমান বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তবে ঠিক কোন মামলা? সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি মুকুল। উল্লেখ্য, এর আগে গত সপ্তাহে শ্যামনগরে পার্টি অফিস দখল ঘিরে গোলমালে মাথা ফেটেছিল বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের। যে ঘটনায় মমতাকে নিশানা করে মুকুল বলেছিলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পূর্বপরিকল্পিত চক্রান্ত। ওঁর নামে এফআইআর করা হবে’’। একদা মমতা ঘনিষ্ঠের এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে আসরে নামে তৃণমূল। থানায় মুকুলের নামে অভিযোগ দায়ের করেন মমতার মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন: বিজেপিতে আসতে চান অনুব্রত মণ্ডল! চাঞ্চল্যকর দাবি বিজেপি সাংসদের
ঠিক কী বলেছেন মুকুল রায়?
সোমবার ঠাকুরপুকুর থানায় অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের অফিসে হাজিরা দেন মুকুল রায়। এদিন থানায় ঢোকার সময় মুকুল বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো পালাই না। তদন্তকারী সংস্থা ডাকলে বলি না ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। ওঁরা ডেকেছেন জিজ্ঞাসাবাদ করবেন, সবরকম সহযোগিতা করব’’। এরপরই মুকুল বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেফতার হবেন, ৮ কোটি টাকা চুরি করেছেন’’। কোন মামলায়? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মুকুল বলেন, ‘‘অপেক্ষা করুন, জানবেন’’। অন্যদিকে, রেল প্রতারণা মামলা প্রসঙ্গে মুকুলের দাবি, ‘‘আমার সঙ্গে কিছু যোগ নেই, জানি না’’। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুকুল বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ২৪টি প্রতারণার মামলা করেছে রাজ্য সরকার। যাঁরা মামলা করেছেন, তাঁরা হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন সবটাই জোর করে করা হয়েছে। যা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, সব জবাব দিয়েছি’’।
আরও পড়ুন: ‘বৈশাখী গেলে যাক, দেবশ্রীকে বিজেপিতে নিন’
উল্লেখ্য, বেহালার সরশুনা থানায় মুকুল রায়ের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। মুকুল ও আরও ৪ জনের নামে ওই এলাকারই এক বাসিন্দা প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। রেল বোর্ডের সদস্য করার নামে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণার অভিযোগ করেছিলেন ওই বাসিন্দা। এ বছরের গোড়াতেই অভিযোগ দায়ের করেন ওই বাসিন্দা। সেই মামলায় মুকুলের গ্রেফতারিতে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুকুলকে গ্রেফতার করা যাবে না, শুক্রবার এমন নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তবে বিজেপি নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইলে তা করতে পারবে পুলিশ। এক্ষেত্রে মুকুলকে ৭২ ঘণ্টা আগে নোটিস দিয়ে জানাতে হবে। তারপরই মুকুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে পুলিশ। হাইকোর্টের নির্দেশে এমনটাই বলা হয়েছে। রেল প্রতারণা মামলায় এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুকুলের গ্রেফতারিতে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। এ মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর।