সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির প্রতিবাদে টানা তিনদিনের মিছিলের পর আজ বিকেলে কলকাতার রাজপথে সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার সভার শুরুতে গাওয়া হল গান। বাজানো হল কাঁসর ঘণ্টাও। গত ক’দিনের মতো সিএএ ও এনআরসি বিরোধিতায় একঝাঁক স্লোগান দিলেন মমতা। এদিন মমতাকেও কাঁসর ঘণ্টা বাজাতে দেখা গেল।
রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের মঞ্চে মোদী-শাহকে আক্রমণ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের মাটিতে যা করতে পারবেন, বাংলার মাটিতে তা করতে পারবেন না। এই মাটি নেতাজি, স্বামী বিবেকানন্দ, বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন রায়, ক্ষুদিরাম বসু, মাতঙ্গিনী হাজরার মাটি। এই মাটি সেই মাটি যেখানে লড়াই করে ৩৪ বছরের বাম শাসনের পরাজয় করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগে দিল্লি সামলা, পরে বাংলা সামলাস’’। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ আরও বলেন, ‘‘এই লড়াই সকলের লড়াই। বাংলায় এনআরসি হবে না’’।
আরও পড়ুন: ‘দিদিমণি হাঁটা প্র্যাক্টিস করছেন, একুশের পর তো হাঁটতেই হবে’, কটাক্ষ দিলীপের
রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের সমাবেশে বিজেপিকে বিঁধে তৃণমূল মহাসচিব বলেন, ‘‘সংখ্যা আছে বলে যা ইচ্ছে করার অধিকার সংবিধান দেয়নি। সকলকে নিয়ে থাকার কথা বলা রয়েছে। সর্বনাশা আইন, যা দিয়ে দেশকে টুকরো টুকরো করা হচ্ছে’’। পার্থ আরও বলেন, ‘‘ধর্মভিত্তিক বিভাজনের প্রবণতা গ্রাস করছে দেশজুড়ে, কলেজে কলেজে সেমিনার করুন’’।
আরও পড়ুন: রাজপথে অপর্ণা-কৌশিক-সহ নাগরিক সমাজ, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে’
বুধবার হাওড়া ময়দান থেকে মহামিছিল শেষে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ে অমিত শাহকে নিশানা করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, দেশে আগুন জ্বালানো আপনার কাজ নয়, আগুন নেভানো কাজ। হাতজোড় করে অনুরোধ করছি’’। এরপরই মমতা বলেন, ‘‘দিল্লি, আসাম, উত্তরপ্রদেশ যখন জ্বলছে, আপনি কেন বলছেন হোগাই হোগা, ক্যয়া হোগা? আধার কার্ডে চলবে না? তাহলে কেন আধার কার্ড বানালেন? দেশের নাগরিক হিসেবে জানতে চাই। একটা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন বলেন, আধার দিয়ে হবে না। ৬ হাজার কোটি টাকা কেন খরচ করলেন আধারের জন্য? কেন ফোনে আধার যোগ করলেন। আধার-ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের কথা কেন বলছেন? প্যান কার্ডেও হবে না বলছে। ভোটার কার্ড থাকলেও হবে না! ভোটাররা ভোট দিয়েছেন বলে আমার আপনার সরকার আছে। আর আপনি বলছেন ভোটার কার্ড নহি চলেগা, বিজেপি কা মাদুলি চলেগা? কেন আমরা আধার কার্ড, প্যান কার্ড বানালাম তাহলে?’’ একইসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘দয়া করে বলছি, আপনার দলকে কন্ট্রোল করুন। শান্তি বজায় রাখুন’’।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের নতুন নামকরণ করেছেন মমতা। হাওড়া ময়দানে মিছিল শুরুর আগে মমতা বলেন, ‘‘সিএএ-কে কা বলবেন। কা কা বলবেন’’। পাশাপাশি সিএএ ও এনআরসি বিরোধিতায় একঝাঁক স্লোগান দিলেন মমতা।