নির্বাচন সামনে আসতেই তৃণমূল কংগ্রেস এবার আরও কঠোর হতে চলেছে। সূত্রের খবর, এর আগে দল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যাঁরা দল থেকে চলে যেতে চায় তাঁরা চলে যাক। সেক্ষেত্রে দল নীরব থাকবে। পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু, বিধায়ক বনশ্রী মাইতি, সাংসদ সুনীল মণ্ডলসহ তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের কেউ দল বা বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কেউবা পদত্যাগের করার প্রয়োজন মনে করননি। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব পুরো বিষয়টির উপর নজর রেখেছিল। সেভাবে কোনও কড়া সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি।
শুক্রবার রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় পদত্যাগ করেন। শুভেন্দু যখন পদত্যাগ করেছিলেন তখন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ গলা ফাটিয়ে ছিলেন। আওয়াজ তুলেছিলেন শুভেন্দু দল ছাড়ায় তৃণমূলের সাংগঠনিক ক্ষতি হবে। ঠিক এবারও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া তাঁর পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন। কেন ছেড়েছেন তার জন্য হাওড়ার শীর্ষ নেতাকে তিরে বিদ্ধ করেন। এসব ঘটনার পরে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব নড়েচড়ে বসে। এদিনই তড়িঘড়ি তৃণমূলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় বৈশালী ডালমিয়াকে বহিস্কার করার। পাশাপাশি নবান্ন জানিয়ে দেয় রাজীবের পদত্যাগপত্রটি ত্রুটিপূর্ণ ছিল। তাঁকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিসভা। এই দুটি ঘটনায় পরিষ্কার চলতি রাজনৈতিক ধারা রুখতে কঠোর হচ্ছে তৃণমূল। দলে যে কঠোর অনুশাসন চলছে তা জানান দিতেই এমন পদক্ষেপ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন- ‘দেখ তৃণমূল কেমন লাগে’, রাজীব মন্ত্রিত্ব ছাড়তেই কটাক্ষ শুভেন্দুর
সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে দলের একাংশ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রথমে মুখ খুলছেন। কিছু দিন 'বিদ্রোহ'। তারপর বিজেপি যোগের কথা হাওয়ায় ভাসছে। বিজেপির নেতৃত্ব প্রকাশ্যে তাদের দলে আসার জন্য আবেদন করছেন। তাঁরাও প্রকাশ্য সভায় এই রাজ্যে বা দিল্লিতে গিয়ে পদ্ম শিবিরে মিশে যাচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস এত সহজে এবার আর দলের বিক্ষুব্ধ অংশকে ছেড়ে দিতে রাজি নয়।
অভিজ্ঞ মহলের মতে, বৈশালী ডালমিয়াকে বহিস্কার ও রাজীবকে অপসারণের মাধ্যমেই দলের বাকি অংশকে কড়া বার্তা দিল। যদি কেউ দল থেকে চলে যেতে চায় বা মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে চায় তাঁদের নামের পাশে 'ত্যাগী' শব্দ যাতে না বসে তার দিকেই নজর রয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, কেউ ১০ বছর বা কেউ ৫ বছর দলের মন্ত্রী বা সাংসদ -বিধায়ক হয়ে সমস্ত সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। অনেকে কস্মিনকালেও তৃণমূল করেনি। তাঁরাও জনপ্রতিনিধি হয়ে নানা সুবিধা ভোগ করেছেন। এবার ভোটের আগে অযুহাত খাঁড়া করে পদ্মশিবিরে ভিড়ছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন