শনিবারের জবাব সোমবার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভিক্টোরিয়ায় নেতাজি জন্মজয়ন্তীতে সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর বলার সময়ই 'জয় শ্রীমরাম' স্লোগান উঠেছিল। অপমানিত মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানেই নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়ে ভাষণ বয়কট করেন। সোমবার হুগলির পুরশুরার সভায় সেদিনের অপমানের জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিশানা করলেন বিজেপিকে। স্লোগানদাতাদের 'ধর্মান্ধ' বলে কড়া আক্রমণ শানানা।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ভিক্টোরিয়াকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন। বলেন, “আপনারা কি ঘরে ডেকে বেরিয়ে যেতে বলবেন। আমি নেতাজির অনুষ্ঠানে গেলাম। এত বড় সাহস, কয়েকটা গর্ধব উগ্র ধর্মান্ধ আমায় টিজ করছে প্রধানমন্ত্রীর সামনে। আমায় ওরা চেনে না। আমায় বন্দুক দেখালে আমি বন্দুকের সিন্দুক দেখাবো। আমি বন্দুকে বিশ্বাস করি না, রাজনীতিতে করি, রাজনীতি দিয়েই এর জবাব দেব। তুমি নেতাজি নেতাজি করলে আমি স্যালুট করতাম। কিন্তু যারা এগুলে করেছে তারা বাংলা, নেতাজিকে অপমান করেছে। তার আগে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দলিতদের অপমান করেছে।”
পরে এই ঘটনার জন্য বিজেপিকে কাঠগড়ায় তোলেন মমতা। গেরুয়া দলের বাংলাপ্রীতি, রুচিবোধ নিয়ে প্রশান তোলেন। বলেন, 'বারবার বাংলাকে অপমান করে চলেছে বিজেপি। যা বাংলার মানুষ কোনওভাবেই মেনে নেবে না।' নিজেকে রাজ্যবাসীর পাহারদার এবং জনগণের সেবক বলে দাবি করে বিজেপিকে দাঙ্গাবাজদের দল বলে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, 'ওদের কাজ ভুয়ো খবর রটানো। ফেক ভিডিও-ফেক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ বানানো। ওদের বিশ্বাস করবেন না। আমি জেলে থাকতে রাজি, বিজেপির ঘরে থাকতে রাজি নই। বিজেপির কাছে মাথা নত করব না, তার চেয়ে নিজের গলা নিজে কেটে দেব।'
২৩ জানুয়ারি নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে ভিক্টোরিয়ায় এক মঞ্চে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হলে দর্শকাসন থেকে 'জয় শ্রীরাম ধ্বনি ওঠে। যাতে মেজাজ হারান তিনি। প্রতিবাদ স্বরূপ মঞ্চে দাঁড়িয়ে সাফ জানিয়ে দেন, এভাবে আমন্ত্রণ জানিয়ে অপমান করা উচিত নয়। এটা সরকারি অনুষ্ঠান, কোনও রাজনৈতিক মঞ্চ নয়। তাই এর প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি কোনও বক্তব্য রাখবেন না। এরপর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর এহেন প্রতিক্রিয়া নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন