একদা তাঁরই প্রধান সেনাপতি ছিলেন। কিন্তু, এখন প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বি। বুধবার তৃণমূল ছাত্রপরিষদের প্রতিষ্ঠা দিনবসের মঞ্চ থেকে নাম না করে সেই মুকুল রায়কেই একহাত নিলেন প্রাক্তন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুলের ‘দলভাঙানোর কৌশল’ নিয়ে এদিন তীব্র কটাক্ষ ঝড়ে পড়ে তৃণমূল সুপ্রিমোর গলায়। কলকাতার মেয়ো রোডে মমতা বললেন, ‘‘একজন ১০৭ জনের নাম নিয়ে নাকি ঘুরে বেড়াচ্ছে! আগে ৭ জন কর, তারপর ১০৭ জন করিস! এত সস্তা নয়’’।
কী বলেছেন মমতা?
মোদী সরকারকে বিঁধতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদি বলেন, ‘‘কারও বলার অধিকার নেই এখন। কর্ণাটকে হর্স ট্রেডিং করে সরকার ফেলে দিল। কেউ কিছু বলল না। কাউকে বলতে দিল না। আর এখানে বাংলা চাইছে’’। এরপরই মুকুলের নাম না করে মমতা বলেন, ‘‘একজন ১০৭ জনের নাম নিয়ে নাকি ঘুরে বেড়াচ্ছে! আগে ৭ জন কর, তারপর ১০৭ জন করিস! এত সস্তা নয়’’।
-->আরও পড়ুন: বিচ্ছেদের ইঙ্গিত? বিজেপি-র সাংগঠনিক নির্বাচনে গরহাজির শোভন-বৈশাখী
প্রসঙ্গত, উনিশের নির্বাচনে বাংলার ৪২ আসনের ১৮টিতে জিতে তৃণমূলের ঘাড়ে একপ্রকার নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি। বঙ্গে বিজেপির এহেন উত্থানের নেপথ্যে অন্যতম কারিগর মুকুল রায় বলেই ব্যাখ্যা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের। ভোট মিটতেই তৃণমূলের একের পর এক নেতা-কর্মীকে পদ্মশিবিরে এনে তৃণমূলে কার্যত ভাঙন ধরিয়ে দিয়েছেন মুকুল। একদা তৃণণূলের ‘সেকেন্ড-ইন-কমান্ড’ তথা বর্তমানে বিজেপির দাপুটে নেতা মুকুলের চালে নিজ দুর্গ রক্ষা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মমতা বাহিনী। মুকুলের হাত ধরে চলে যাওয়া একের পর এক পুরসভা ফের ‘পুনরুদ্ধার’ করতে আসরে নেমেছে তৃণমূল। এই আবহে বেশ কয়েকবার সমংবাদমাধ্যমে মুকুলকে বলতে শোনা যায়, যে তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের ১০৭ জন বিধায়কের যোগাযোগ রয়েছে, যাঁরা দিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমোদন সাপেক্ষে ধীরে ধীরে বিজেপিতে যোগ দেবেন। উল্লেখ্য, দীর্ঘ জল্পনার পর সম্প্রতি মমতার হাত ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তেরও বিজেপি যোগের জল্পনা এখনও টাটকা। এমতাবস্থায় মুকুলের নাম না করে এদিন যে ভাষায় এ বিষয়ে সরব হলেন মমতা, তা নিঃসন্দেহে দলের মনোবল বাড়াবে বলে মনে করছে ঘাসফুল নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: ডাহা ফেল মমতা-পিকে, মুকুলের হাতে ‘সমীক্ষার ফল’
এদিন বিজেপিকে বিঁধে 'প্রত্যয়ী' মমতা বলেন, ‘‘নতুন যাঁরা ক্ষমতা উপভোগ করছেন, তাঁরা ভাবছেন, আমরা একটু চমকাই। তাঁদের চমকান, যাঁরা চমকানো দেখেননি। সারা জীবন চমকানোর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে এসেছি। আমাদের কী চমকাবেন! আমরা বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছি’’।