কৃষক আন্দোলনের পাশে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মেদিনীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী সরকারকে নিশানা করে তাঁর দাবি, 'হয় কৃষি আইন প্রত্যাহ কর, নয়তো বিজেপি সরকার ভারত ছাড়।'
তৃণমূল প্রথম থেকেই কৃষি বিলের বিরোধী। সংসদে বিল পেশের পর থেকেই প্রতিবাদে মুখর তাঁরা। টুইটবার্তাতেও বিক্ষোভকারী কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন মমতা। এদিন ফের সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে কৃষকদের পাশে থাকার কথা জানালেন নেত্রী।
সোমবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠের সভায় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'তৃণমূল অতীত ভোলে না। আমি সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম ভুলিনি। নবান্নের ধান ছুঁয়ে শপথ করলাম, কৃষকদের পাশে ছিলাম, আছি, থাকব। আগামিকাল কৃষকদের আন্দোলনকে আমি সমর্থন করি।'
এরপরই বিজেপি সরকারকে উৎখাতের ডাক দেন নেত্রী। বলেন, 'হয় কৃষি আইন প্রত্যাহার কর, নয়তো বিজেপি সরকার ভারত ছাড়। দাঙ্গা লাগাচ্ছ, মিথ্যে বলছ, দল ভাঙছো, জেনে রেখো, তোমাদের উত্খাতের সময় এসেছে। আগে নিজেদের বাঁচাও।'
মোদী সরকারের কৃষি আইনকে 'কৃষক বিরোধী' বলে মন্তব্য করেন মমতা। আগামিকাল কৃষক সংগঠনগুলোর ডাকে ভারত বনধ। যাকে নৈতিক সমর্থনের কথা আগেই জানিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে এদিন মমতা বলেন, 'আমাদের সরকার বনধকে সমর্থন করে না। কারণ কর্মনাশা বনধকে সমর্থন করা আমাদের সরকারের নীতি বিরোধী, কিন্তু দল হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস আগামীকালের কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন করছে।'
মঙ্গলবার থেকে কৃষক আন্দোলনের পক্ষে ও কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে রাজ্যের ব্লকে ব্লকে ধর্না কর্মসূচি করবে জোড়া-ফুল শিবির। আগামী ৮ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসবে তৃণমূল। আগামী সপ্তাহে এই কর্মসূচি পালন করা হবে উত্তরবঙ্গে।
তৃণমূল সুপ্রিমোর কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণাকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শিলিগুড়িতে তিনি বলেছেন, 'তৃণমূল এখন ডুবন্ত জাহাজ। প্রয়োজনে যমকেও ওরা সমর্থন করবে।'
বিধানসভা ভোটের আগে দেশজোড়া কৃষক আন্দোল ক্রমশ বিজেপির গলার কাঁটা হয়ে উঠছে। অন্যদিকে এই ইস্যুকে পুঁজি করেই ফের কৃষক-বৃত্তে ভিত শক্ত করতে মরিয়া ঘাস-ফুল শিবির। তবে, নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের অন্যতম পুরধা অধিকারী পরিবারের কাউকে অবশ্য এদিন নেত্রীর সভায় দেখা যায়নি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন