দুর্গাপুজোতেও এবার জনসংযোগে ঝাঁপাচ্ছে মমতা বাহিনী। পুজোর ছুটিতে পুরোদমে জনসংযোগের কাজে লাগতে দলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদদের বৈঠকে নির্দেশ দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যাোপাধ্যায়। সোমবার কালীঘাটে বৈঠকে দলের নেতা-মন্ত্রীদের উদ্দেশে মমতার নির্দেশবাণী, ‘‘পুজোয় বেড়াতে যাওয়া চলবে না। পুজোয় এলাকায় জনসংযোগের কাজে থাকুন’’। সূত্র মারফৎ আরও জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, পুজোর প্যান্ডেলে দলীয় ব্যানার, ফেস্টুন রাখা যাবে না। সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে হাজির ছিলেন নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর। যদিও বৈঠকে মুখ খোলেননি পিকে।
আরও পড়ুন: মুকুলের খেলা? দেবশ্রীকে কে নিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপি দফতরে, রহস্যভেদ করলেন বৈশাখী!
উল্লেখ্য, উনিশের নির্বাচনী ধাক্কা সামলে একুশের লড়াইয়ের আগে জনসংযোগ-এ জোর দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত এক মাসে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে বিপুল সাড়া পেয়েছে মমতা বাহিনী। সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ জানতে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে নিশিযাপন করছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। এমনকি, প্রশাসনিক বৈঠকের ফাঁকে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন মমতা। সম্প্রতি দিঘায় একটি রাস্তার পাশে দোকানে চা বানাতেও দেখা গিয়েছে মমতাকে। সেই প্রেক্ষিতে পুজোর সময় মমতার এহেন জনসংযোগ বার্তা রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে সব সাংসদদের কাছে ১০ জন এসসি ও ৫ জন এসটি-র তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছেন মমতা। এদিন কর্মসূচি ঠিক করে দেওয়ার জন্য ৫ দিন করে সময় চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: বৈশাখীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ, পুলিশের দ্বারস্থ শোভন-বান্ধবী
অন্যদিকে, দলের একাধিক সাংসদ-মন্ত্রীদের সিবিআই তলব প্রসঙ্গে এদিন বিশেষ বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে মমতা বলেছেন, ‘‘সিবিআই ডাকলে সহযোগিতা করুন। যা ঘটেছে বলুন। আমি আপনাদের পাশে আছি’’। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চে মমতা বলেছিলেন, ‘‘আমরা এজেন্সিকে ভয় পাই না। আজ আমার ভাইকে ডাকছে, কাল আমায় ডাকবে। এজন্য আমি তৈরি। আমি জেলে যেতে রাজি কিন্তু বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কাছে মাথা নত করব না। জেলে গেলে ভাবব, স্বাধীনতা সংগ্রাম করছি, দেশ পরাধীন হয়ে গিয়েছে’’। সেদিনের পর মমতার এহেন বার্তা গুরুত্বপূর্ণ বলে মত রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।
আরও পড়ুন: মমতা কখনও প্রকাশ্যে খারাপ কথা বলেননি, বৈশাখীর গলায় ‘বোধোদয়ের’ সুর
এদিকে, আসামে এনআরসি ইস্যুতে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন মমতা। ৭ ও ৮ তারিখ জেলায় জেলায় এই কর্মসূচি পালন করা হবে। ১২ সেপ্টেম্বর কলকাতায় চিড়িয়ামোড় থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় রাখার জন্য বিশেষ দায়িত্ব দেয়া হল ফিরহাদ হাকিম এবং সুখেন্দু শেখর রায়চৌধুরীকে। অন্যান্য রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে সমন্বয় রাখার জন্য বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হল সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে।