Advertisment

খবর রাখছেন মমতা, অন্য দলে ঝুঁকলেই ব্যবস্থা

একুশের ভোটের আগে দলীয় শৃঙ্খলা ও ভাবমূর্তি পুররুদ্ধারই যে অগ্রাধিকার তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
'ঘেউ ঘেউ' কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর।। শোভন ফের তৃণমূলে! জল্পনা।। ইডির তথ্য-তলব

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

একুশের বিধানসভা ভোটের আগে দলীয় সংগঠনকে ঢেলে সাজাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী। জেলা ও শাখা সংগঠনের নেতৃত্বে বদল আনা হয়েছে। দল পরিচালনায় প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে তারুণ্যকে। তুলে আনা হয়েছে স্বচ্ছা ভাবমূর্তির নেতাদের। অন্যদিকে, পদ হারিয়ে দলের অন্দরে চাপা ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। অনেক বিধায়কই বুঝতে পারছেন আগামী বিধানসবা ভোটে আর টিকিট নাও মিলতে পারে। এই পরিস্থিতিতে যে বহু তৃণমূল নেতারই পাখির চোখ গেরুয়া সহ বিরোধী রাজনৈতিক শিবির তা অজানা নয় খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই বৃহস্পতিবার দলের বৈঠকে 'লোভী' নেতাদের সমঝে দিয়েছেন নেত্রী। তাঁর কড়া বার্তা, 'তৃণমূলের যেসব লোভী নেতা অন্য দলের সঙ্গে তলে তলে যোগাযোগ রাখছেন তাঁদের নাম দল ঠিক জানতে পারবে।' দলের শৃঙ্খলাই যে তাঁর পাখির চোখ তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা।

Advertisment

গত বৃস্পতিবার জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'লোভী ও নিঃস্বার্থ- এই দুধরনের নেতা হয়ে থাকে। আপনারাই ঠিক করন নিজেরা কোন পর্যায়ের নেতা হতে চান। তৃণমূলে থেকে অন্য দলের সঙ্গে কেউ সম্পর্ক রাখলে আমরা তার খবর পাবই।' নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতার কথায়, দলের যেসব নেতা গোষ্ঠী রাজনীতি করছেন তাঁদের উদ্দেশেই এই কড়া বার্তা দিয়েছেন নেত্রী।

লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর তৃণমূলের দলীয় সংগঠেন বেশ কয়েকটি জায়গায় বদল করা হয়েছিল। কিন্তু, তারপরও বেশ কয়েকটি জেলায় গোষ্ঠী রাজনীতির কোপে পড়তে হয়েছে শাসক দলকে। তাই সংগঠনকে কড়া অনুশাসনে বাঁধতে বৃহস্পতিবার সংগঠনে ব্যাপক রদবদল করেছেন নেত্রী।পর্যবেক্ষক পদ বিলোপের পাশাপাশি, দু'টি নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে তরুণ নেতাদের। ঝঙ্গলমহল সহ যেসব এলাকা ১৯শের লোকসভায় গেরুয়া শিবির ভালো ফল করেছিল সেই সব অঞ্চলে দলের নেতৃত্বে বিশেষ বদল করেছেন মমতা।

লকডাউনে রেশন থেকে আমফানের ত্রাণ দুর্নীতিতে জনরোষ আছড়ে পড়েছিল। বেশিরভাগ অভিযোগের তির ছিল শাসক দলের নেতাদের দিকে। জোড়া-ফুল শিবিরকে 'দুর্নীতিগ্রস্ত' বলে তোপ দাগার সুযোগ পেয়ে যায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। শেষ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে। তাই এবার নেতৃত্ব বাছার ক্ষেত্রে 'স্বচ্ছ' ভাবমূর্তির নেতাদেরই আগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে তৃণমূলে। সমঝে দেওয়া হয়েছে অভিযুক্তদের।

সূত্রের খবর, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত একাধিক বিধায়ক একুশের ভোটে টিকিট নাও পেতে পারেন। বৃহবস্পতিবারের বৈঠকে হাজির এক তৃণমূল নেতার কথায়, 'দলের অজানা নয় যে এই ধরনের নেতারাই বিজেপিতে নাম লেখাতে পারেন। কিন্তু, দুর্নীতির সঙ্গে কোনও আপোশ করা হবে না।' শাসক শিবিরের নজরে আপাতত জনমানসে দলের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের বিষয়টি।

দলের বেশ কয়েকজন নেতা দলীয় পর্যবেক্ষক হয়েও গোষ্ঠী রাজনীতিতে জোর দিচ্ছিলেন। জেলা সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ তাঁদের অনুগামীদের হাতেই চলে গিয়েছিল।যোগ্য সম্মান না পেয়ে এতে বহু নেতা, কর্মী বসে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি নজর এড়ায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই পর্যবেক্ষক পদই বিলোপ করেছেন তিনি।

আপাতত সংগঠনের রাশ মমতার হাতে। প্রতিটি জেলার সংগঠনের কার্যকলাপ নেত্রীর নখদর্পণে থাকবে। সব দেখভালের জন্য সাত সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে স্থান পেয়েছেন মমতার একান্ত আস্থাভাজন, সুব্রত বক্সি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত সাত নেতা।

দলের এই রদবদলের পিছনে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরে তাঁর দলবল জেলায় জেলায় একাধিক সমীক্ষা করেছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই নেতৃত্বে বদল আনা হয়েছে বলে অনুমান। তবে, এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্দান্ত নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমোই।

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc Mamata Banerjee All India Trinamool Congress
Advertisment