মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন শুভেন্দু অধিকরী। সন্ধ্যায় তাঁর পদত্যাগ গৃহীত হল।কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারীর ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়। সিদ্ধান্ত হয়েছে, আপাতত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই শুভেন্দুর হাতে থাকা তিন দফতরের দেখভাল করবেন।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় টুইটে জানিয়েছেন, সংবিধান অনুসারে মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশক্রমে শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগপত্র তিনি গ্রহণ করেছেন। তাঁর দায়িত্বে থাকা দফতরের কাজ আপাতত মুখ্যমন্ত্রীই দেখবেন বলে জানিয়েছেন ধনকড়।
কিন্তু এখনও দল দল ছাড়েননি নন্দীগ্রামের বিধায়ক। তাঁর দল ত্যাগ ঘিরে তাই জল্পনা জিইয়েই রইল। সূত্রের খবর, এদিন দুপুরে নন্দীগ্রামের বিধায়ককে ফোনও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাতেও বরফ না গলার ইঙ্গিত ক্রমশ প্রকট হচ্ছে।
শুক্রবার বিকেলেই দলনেত্রীর ডাকে কালীঘাটে জরুরি বৈঠক বসেন মমতা ঘনিষ্ট তৃণমূল শীর্ষ নেতারা। জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিমরা। জানা গিয়েছে জরুরি এই বৈঠকে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
বৃহস্পতিবারই এইচআরবিসি-র চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তার ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই এদিন সরকারি সব নিরাপত্তা ছাড়েন শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার বেলা গড়াতেই নন্দীগ্রামের মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন তিনি। এরপরই তাঁর তৃণমূল ত্যাগ ও বিজেপিতে যোগদান নিয়ে চর্চা তুঙ্গে ওঠে।
গত কয়েকমাস ধরেই শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা চলছে। তাঁর অরাজনৈতিক সভা ঘিরে দলের অন্দরেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই সভাগুলো থেকে নাম না করে দলীয় নেতৃত্বকে একের পর এক তোপ দাগেন শুভেন্দু অধিকারী। দূরত্ব ক্রমশ বাড়তে থাকে নন্দীগ্রামের বিধায়ক ও তৃণমূলের মধ্যে।
গত ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর সভা ও পাল্টা তৃণমূলের সভা থেকে সেই দূরত্ব কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। পরে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ ঘিরেও হুগলিতে দাঁড়িয়ে দলের কারোর নাম না করে জবাব দেন শুভেন্দু। বিতর্ক প্রশমণে সাংসদ সৌগত রায় শুভেন্দুর সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তাতে যে বরফ গলেনি তা শুভেন্দু অধিকারীর এদিনের পদক্ষেপেই তা স্পষ্ট।
দল ও শুভেন্দুর দূরত্ব বেড়েছে। গত কয়েকদিনে তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী শুভেন্দুর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। এরপরও কী দলে থাকবেন পূর্ব মেদিনীপুরের দোর্দদণ্ডপ্রতাপ এই নেতা? রাজ্য রাজননীতির নজর এখন সেদিকেই।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন