তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে ফের সারদা ও এনআরসি নিয়ে বিজেপিকে তুলোধোনা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলনেত্রী বলেন, “এখন ওরা পুলিশকে ডিস্টার্ব করছে। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলে পুরেছিল। আমরা ভুলিনি। যারা বিজেপির কথা শুনছেন তাদের নাম হৃদয়ে ও নোটবুকে থাকবে। ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে জবাব দেব।’’
মমতার দাবি, ‘‘চিটফান্ডের টাকায় তৃণমূল রাজনীতি করে না। সারদা সিপিএমের তৈরি। বিজেপি নেতারা সিবিআই, ইডি, আয়কর দফতর পিছনে লাগিয়ে তৃণমূলকে ডিস্টার্ব করছে। কংগ্রেসেরও পিছনে লেগেছে।’’ এনআরসি নিয়ে তিনি যে এক পা-ও পিছনে হাঁটবেন না এদিন ফের তা জানিয়ে দেন মমতা। তিনি বলেন, “অসম থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে। বাংলা থেকেও তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। একবার হাত দিয়ে দেখুক। তারপর দেখব।’’ এ নিয়ে তাঁর মন্তব্য়, ‘‘ভাগ্যিস আমি এখানে জন্মেছিলাম।’’
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দুই সাংসদ সুব্রত বক্সী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি- শশী ঘোষ
এদিনের ভাষণে তৃণমূলনেত্রী ছাত্র-ছাত্রীদের নানা পরামর্শ দেন। সম্প্রতি রাজ্যে কলেজে ভর্তি নিয়ে তোলাবাজির অভিযোগ ওঠে। ওই অভিযোগে টিএমসিপির বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তারও হন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে কলেজে ছুটে যান পরিস্থিতি দেখতে। গিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রীও। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে এদিন মমতা বলেন, “টাকার বিকল্প আছে। জীবনের বিকল্প নেই। ডেডিকেশনের কোনও বিকল্প নেই। টাকা নিয়ে চরিত্র নষ্ট করা ঠিক নয়। লোভে পাপ,পাপে মৃত্যু। নেতাদের বাড়ি গিয়ে লবি করার প্রয়োজন নেই। নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করে যাও। ভাল কাজ করলে সবাই ডাকবে। আমরা নেতাদের বাড়ি যেতাম না।’’
এদিন নিজের জীবনের অভিজ্ঞতার কথা ছাত্রছাত্রীদের সামনে তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় সুব্রতদা ( সুব্রত মুখোপাধ্যায়) বাড়িতে ডেকে বলেছিল ভাল করছিস। এমনকী যাদবপুরে সাংসদ হয়েছিলাম। কিন্তু প্রার্থী হওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করিনি। দলে কেউ তখন প্রার্থী হচ্ছিল না। কেউ লড়তে চাইছিল না। আমি লড়াই করেছিলাম। সংগ্রাম করতে হবে। তার কোনও বিকল্প নেই।’’
এরই মধ্যে রাজ্যের রাজনীতি নিয়ে বিজেপি ও সিপিএমকে এক হাত নিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য়, ‘‘সিপিএমের হার্মাদরা এখন বিজেপির জল্লাদ হয়েছে। তারা এখন বিজেপির মাতব্বর। পঞ্চায়েতে জঙ্গলমহলে একটু ক্ষমতা পেয়েই বিজেপি খুনের রাজনীতি করছে। আমি খুনোখুনির রাজনীতি পছন্দ করি না।’’ এদিন তিনি জানিয়ে দেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নতুন কমিটি গঠন করা হবে। নেত্রীর বক্তব্যে এদিন বারে বারে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের লড়াইয়ের কথা বলেছেন। বলেছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতাদের কথা। লক্ষ্যণীয়ভাবে এদিনের ভাষণে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।