লোকসভা নির্বাচনে দলে বিপর্যয়ের জেরে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মমতার ইস্তফার প্রস্তাবে রাজি হয়নি দল। শনিবার কালীঘাটে সাংবাদিক বৈঠকে একথাই জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এদিন মমতা বলেন, ‘‘৬ মাস ধরে ক্ষমতাহীন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলাম। এটা মানতে পারছি না। আমি আর মুখ্যমন্ত্রী হয়ে থাকতে চাই না। আমার কাছে চেয়ার বড় নয়। যাঁরা ভোট দেননি, তাঁরা নিশ্চয়ই অপছন্দ করেছেন আমায়, বিবেকে লেগেছে’’। মমতা বলেন, ‘‘আমি বলেছিলাম মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেব ঠিকই, কিন্তু দলের প্রধান হিসেবে কাজ চালিয়ে যাব। কারণ দলটা আমিই তৈরি করেছিলাম। কিন্তু আমার দল শোনেনি’’।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee Meeting Today Live: বিজেপি সফল হয়েছে, মোদীজিকে অভিনন্দন: মমতা
মমতা আরও বলেন, ‘‘সিপিএম সব ভোট দিয়েছে বিজেপিকে। সিপিএমকে টাকা দিয়েছে। তৃণমূলেরও এক-দু’জনকে দিয়েছে। দু-একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছি। টাকা যেখানে গণতন্ত্র গড়ে... সেখানে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ করার মানসিকতা নেই। দলকে অনেক বুঝিয়েছি, কেউ মেনে নেয়নি। এটা আমার দুঃখ...যাই হোক কাজ চালিয়ে যাব’’।
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনে এবার বাংলায় বিজেপির বড় উত্থানে স্বভাবতই ধাক্কা খেয়েছে মমতা ব্রিগেড। লোকসভা নির্বাচনে ‘বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশের’ স্বপ্নপূরণ অধরাই থেকেছে মমতার। পাশাপাশি মোদীকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মমতা যেভাবে অগ্রণী হয়েছিলেন বিরোধী মঞ্চে, সেখানে তিনশোরও বেশি আসনে মোদীবাহিনীর ‘ঐতিহাসিক জয়ে’ বাংলার শাসকশিবির ধাক্কা খেয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। এমন প্রেক্ষাপটে মমতার মুখে ইস্তফার ইচ্ছাপ্রকাশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এদিকে, লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের জেরে পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন রাহুল গান্ধীও। শনিবার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন রাহুল। কিন্তু রাহুলের ইস্তফা গ্রহণ করেনি কমিটি।
সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় #MamataBanerjee #TMC #GeneralElections2019 #WestBengal pic.twitter.com/xytK5ZSTTS
— IE Bangla (@ieBangla) May 25, 2019
অন্যদিকে জয়ের অভিনন্দন জানাতে গিয়ে আবারও নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেছেন,‘‘ওরা সাম্প্রদায়িকতায় বিষ ছড়িয়ে সফল হয়েছে। মোদীজিকে অভিনন্দন। জানি না কেন ওরা ২৩টিতেই পেল না। কারণ যা বলেছিল, সবটাই তো মিলেছে। কেন তিন-চারটে এদিক ওদিক হল? ২৩-এ ২৩ পেলে বলত অঙ্কটাও মিলে গিয়েছে। যে অঙ্ক সেট করা থাকে, সেটাই তো মিলে যেত। বাংলায় মোদী বলেছিলেন তিনশো প্লাস পাবেন। ভোটে টোটাল সেটিং করেছে বিজেপি। কমিশন ওদের হয়ে কাজ করেছে। আমাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়নি। আমরা ভেদাভেদের রাজনীতি পছন্দ করি না’’। অন্যদিকে তৃণমূলের ফল নিয়ে মমতা বলেন, ‘‘তৃণমূলের ভোট শতাংশ বেড়েছে, তবে আসন সংখ্যা হয়তো কিছুটা কমেছে’’।
বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা আরও বলেন, ‘‘এই নির্বাচনে যে টাকা ব্যবহার করেছে বিজেপি, তা যে কোনও কেলেঙ্কারিকে হার মানাবে। এখন এ কথাগুলো বললে হয়তো আমার বিরুদ্ধে সিবিআই বেশি করে লাগাবে’’।