Advertisment

মুখ্যমন্ত্রীও সিঙ্গুরে বহিরাগত ছিলেন, দাবি মমতার তোপের মুখে পড়া ডাক্তারের

"একজন ডাক্তার হয়ে আমি যদি নীলরতন সরকার হাসপাতালে বহিরাগত হই, তাহলে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের আন্দোলনে অংশ নেওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কি বলা হবে?"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

রোগীদের সঙ্গে ডাক্তার দীপক গিরি

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্য জনসভায় তাঁকে 'বহিরাগত' তকমা দিয়েছেন। দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় খুঁজে বের করার জন্য। মমতার তোপের মুখে পড়া ওই ডাক্তার দীপক গিরির পাল্টা কটাক্ষ, "একজন ডাক্তার হয়ে আমি যদি নীলরতন সরকার হাসপাতালে বহিরাগত হই, তাহলে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের আন্দোলনে অংশ নেওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কি বলা হবে?"

Advertisment

শুক্রবার বীজপুরের সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সেদিন এনআরএসে কে ভাষণ রাখছিল, গেট আটকেছিল, জানেন? জানেন, কেন আমি বহিরাগত বলেছি? সেদিন এন আর এসে যে ছেলেটা বক্তব্য রাখছিল, খোঁজ নিয়ে দেখুন, তার নাম দীপক গিরি। সে ক্যালক্যাটা হার্ট রিসার্চ সেন্টারে ১০ বছর ধরে চাকরি করছে। বলুন তো, সে কীভাবে এনআরএস-এর জুনিয়র ডাক্তার হয়?" এরপর মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "আপনারাই খোঁজ নিয়ে দেখুন, ওই ছেলেটা কোন দলের হয়ে কাজ করে? তাহলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে আমি কেন ওই কথাগুলো বলেছি।"

আরও পড়ুন- “সম্মান আর নিরাপত্তা যে কোনও পেশার ন্যূনতম অধিকার”

মুখ্যমন্ত্রীর ওই ভাষণের পরই সক্রিয় হন তৃণমূলকর্মীরা। দীপকের ছবি-সহ পোস্টে ছেয়ে যায় ফেসবুক তৃণমূল সমর্থকেরা অভিযোগ করেন, এনআরএস হাসপাতালের সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত না হয়েও কেবলমাত্র অশান্তি ছড়াতেই ওখানে গিয়েছিলেন একটি বামপন্থী দলের সক্রিয় কর্মী হিসাবে পরিচিত ওই ডাক্তার। অভিযোগ, হুমকিও দেওয়া হয় দীপককে।

তবে জানা যাচ্ছে, বীজপুরের সভায় দীপকের কর্মস্থলের নাম ভুল বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্যালকাটা হার্ট রিসার্চ সেন্টার নয়, দীপক কনসালটেন্ট হিসাবে কাজ করেন সল্টলেকের হার্ট ক্লিনিক অ্যান্ড হসপিটালে। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এসইউসিআই দলের ছাত্র সংগঠন ডিএসও-র সঙ্গে যুক্ত। বর্তমানে ডিএসও-র রাজ্য কমিটির সদস্য দীপক এদিন বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য তাঁর স্বৈরাচারী মানসিকতার প্রকাশ। একজন ডাক্তার হয়ে আমি চিকিৎসকদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়াব না! আমার সেই অধিকার নেই! তবে এমন মন্তব্য তো এই প্রথম নয়। ২০০৬ সাল থেকে আমি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তখনও দেখেছি সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, লালগড়ের আন্দোলনকারী মানুষের পাশে যাঁরা দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁদের বহিরাগত তকমাই দেওয়া হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেই ট্র্যাডিশনই বহন করছেন।" এরপরই তাঁর কটাক্ষ, একজন ডাক্তার হয়ে এনআরএসের আন্দোলনের পাশে দাঁড়ালে যদি আমি বহিরাগত হই, তাহলে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের আন্দোলনে অংশ নেওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কি বলা হবে? কালীঘাটের বাড়ির বাইরে যেখানেই উনি পা রাখবেন, সর্বত্রই বহিরাগত!"

আরও পড়ুন- এনআরএসকাণ্ডে তৃণমূলেই ‘ক্ষোভ’! মমতার সমালোচনায় এবার সব্যসাচী দত্ত

উল্লেখ্য, পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা দীপক ২০০৬ সালে নর্থ বেঙ্গল ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হন। তখন থেকেই তিনি জড়িয়ে পড়েন বামপন্থী রাজনীতিতে। ২০১২ সালে পাশ করার পর দু'বছর হাউজস্টাফ হিসাবে কাজ করেন। তার পর ২০১৪ সাল পর্যন্ত শিলিগুড়িতে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন তিনি। ২০১৬ সালে 'কনসালটেন্ট' হিসাবে যোগ দেন সল্টলেকের ওই বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে।

Mamata Banerjee Left Movement NRS
Advertisment