‘কল্পতরু হওয়ার চেষ্টা করেও পারেনি’, মমতা সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশের পর এ ভাষাতেই শাসকদলকে বিঁধল বাংলার বাম-কংগ্রেস। রাজ্য বাজেট পেশের পর সাংবাদিক বৈঠকে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘বাজেটে নতুন কোনও দিশা নেই’’। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘লোকদেখানো কথা বলা হচ্ছে। প্রতারণার বাজেট এটা। ভোটকে সামনে রেখে করা হয়েছে’’।
এদিন রাজ্য বাজেট সম্পর্কে কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘বাজেটে কোনও দিশা দেখাতে পারেনি সরকার। রাজ্যের ঘাটতি নিয়ে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যখাতে যদি এতই উন্নতি করে থাকেন, তাহলে সরকারের নিখরচায় চিকিৎসা পরিষেবা ছেড়ে কেন বাংলার মানুষ দক্ষিণ ভারত যাচ্ছেন? কেন রাজ্যে সাইকেল কারখানা হয়নি? বেতন সমস্যা, পেনশন নিয়ে কোনও কথা বলা হল না। বাজেটে প্রস্তাব তো দেওয়া হল, কিন্তু টাকা আসবে কোথা থেকে? বাস্তবের সঙ্গে রাজ্যের দাবির কোনও মিল নেই’’।
আরও পড়ুন: মমতা সরকারের বাজেট: একনজরে বড় ঘোষণা
মান্নানের পাশে বসে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ভোটের দিকে তাকিয়ে এই বাজেট করা হয়েছে। কল্পতরু হওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু হয়নি। প্রতারণার বাজেট, অর্ধসত্য বাজেট...বেকার ছেলেরা চোখের জল ফেলছে, অথচ সরকার দেখছে না। লেখাপড়া জানা ছেলেমেয়েরা রাজ্যের বাইরে কাজ করতে যাচ্ছেন। কারণ রাজ্যে কোনও কাজ নেই’’।
আরও পড়ুন: ‘মমতা-ধনকড় গট-আপ’, রাজ্যপালের চাপেই মত বদলালেন মমতা?
একনজরে রাজ্য বাজেট...
*আগামী ২ বছরে বাংলায় নতুন তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির আশ্বাস। সেই উদ্দেশ্যে বরাদ্দ ৫০ কোটি টাকা।
*পুরনো মামলার নিষ্পত্তির জন্য ফাস্টট্র্যাক কোর্টের প্রস্তাব। ৯০ দিনের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে।
*সামাজিক সুরক্ষায় নতুন প্রকল্পের ঘোষণা
* বকেয়া কর আদায়ে নতুন ব্যবস্থার পরিকল্পনা
* তফশিলি উপজাতি উন্নয়নে বরাদ্দ ৯৩৫ কোটি টাকা।
* অসংগঠিত শ্রমিকের দেড় কোটি পরিবারকে সামাজিক সুরক্ষা দেওয়ার প্রকল্প
*ধুকতে থাকা চা বাগানের শ্রমিকদের কৃষিঋণ ১০০ শতাংশ মকুব
*চা বাগানের গৃহহীন শ্রমিকদের গৃহ নির্মাণের জন্য ‘চা সুন্দরী’ নামে প্রকল্প ঘোষণা
* সিভিল সার্ভিসের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বাংলার পডুয়াদের উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে কলকাতা, শিলিগুড়ি ও দুর্গাপুরে ‘মহাত্মা গান্ধী, জয় হিন্দ ও আজাদ’ নামে ৩টি সিভিল সার্ভিস অ্যাকাডেমি তৈরি করা হবে।
*কর্মসংস্থানের জন্য বেকারদের জন্য ‘কর্মসাথী’ প্রকল্পের প্রস্তাব
*‘জয়জহর’ প্রকল্পে তফশিলি জাতির অন্তর্ভুক্ত প্রবীণ নাগরিকদের জন্য রাজ্যে ১ হাজার টাকা মাসিক বার্ধক্য ভাতার প্রস্তাব
* ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ‘বঙ্গশ্রী’ প্রকল্পে বরাদ্দ ১০০ কোটি
* ‘হাসির আলো’ প্রকল্প- গরিব মানুষদের জন্য ৭৫ ইউনিট ‘বিদ্যুৎ’ বিনামূল্যে দেওয়ার প্রকল্পে বরাদ্দ ২০০ কোটি টাকা।
২ লক্ষ ৫৫ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন