একজন ভালো প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে যা যা গুন প্রয়োজন, তার সবকটিই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে রয়েছে। রবিবার এমনটাই ঘোষণা করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও একদা বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা।
তৃণমূল কংগ্রেস আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিনহা আরও বলেন, নরেন্দ্র মোদী সরকার দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অপূরণীয় ক্ষতি করেছে, যাদের মধ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা।
আসন্ন ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে প্রস্তাবিত বিরোধী জোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এখনও গোটা ব্যাপারটা পুরোপুরি নিশ্চিত হয় নি। কিন্তু মমতার কথা যদি বলি, একজন ভালো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সব গুন ওঁর মধ্যে রয়েছে।" সিনহা আরও মনে করেন, যেহেতু লোকসভা আসনের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ বৃহত্তর রাজ্যগুলির মধ্যে একটি, এরাজ্যের নির্বাচনী ফলাফল জাতীয় স্তরে যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে।
আরও পড়ুন: দরজায় লোকসভা, বিরোধী বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লিতে মমতা
এবছরের এপ্রিল মাসে বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন সিনহা, যিনি অর্থমন্ত্রক বাদেও অটল বিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রীসভায় বিদেশ মন্ত্রকের দায়িত্বও সামলেছেন। এদিন মোদী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, "কোনও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয় নি। দেশের কৃষিক্ষেত্রে হতাশা দেখা দিয়েছে, এবং দেশের মানুষ মনে করছেন তাঁরা ঠকে গেছেন।"
প্রাক্তন মন্ত্রীর মতে, "মোদী সরকার দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে, কিন্তু সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার। আমার একথা বলার কারণ, বহু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এখন মন্ত্রীসভাকে না জানিয়েই নেওয়া হয়, তা সে রাফালে জেট বিমান চুক্তি হোক বা নোট বাতিল।" তাঁর আরও বক্তব্য, "দ্বিতীয় বলি" হলো সংসদ, কারণ মোদী সরকার রাজ্যসভার "মর্যাদা ক্ষুণ্ন" করবার চেষ্টা করেছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিল পাসের সময়।
নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে "সর্বনাশ" আখ্যা দিয়ে সিনহা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির পরিমাণকে "সাজিয়ে গুছিয়ে" তুলে ধরছে, নিজেদের অর্থনৈতিক নীতির "ব্যর্থতা" ঢাকতে। "নোট বাতিল একাধারে একটি অতিরিক্ত কঠোর এবং বুদ্ধিহীন সিদ্ধান্ত, যা দেশের মানুষকে শুধুই অশেষ যন্ত্রণা এনে দিয়েছে। ভালো কিছু দেয় নি।"
আগামী লোকসভা নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন কী না, এই প্রশ্নের উত্তরে সিনহা বলেন, "আপাতত ইচ্ছে নেই, কিন্তু পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন হলে জানি না।" কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রচারে নামবেন কী না জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, "বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটের আগে প্রচারে নামতে আমাকে যে কোনও দল যদি অনুরোধ জানায়, আমি প্রস্তুত।"